কোচবিহারের় তুফানগঞ্জ-১ নং ব্লকে চাষিরা সারের কালোবাজারি রুখে দিলেন। শাসক দলের প্রশ্রয়ে দীর্ঘদিন ধরে রমরমিয়ে চলছিল রাসায়নিক সারের কালোবাজারি। প্রশাসনের নানা স্তরে আগেই অল ইন্ডিয়া কিসান খেতমজদুর (এআইকেকেএমএস) সংগঠনের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছিল, তা সত্ত্বেও কালোবাজারি চলছিল। এই মরশুমে চাষের জন্য মিশ্র সার ১০ ২৬ ২৬ খুবই প্রয়োজনীয়, যার ৫০ কেজি বস্তার এমআরপি রেট ১৪৭০ টাকা। কিন্তু ক্যাশ মেমো ছাড়াই দোকানদার চাষিদের কাছে এই সার বস্তাপিছু ৫০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছিল।
এই পরিস্থিতিতে এআইকেকেএমএস-এর নেতৃত্বে চাষিদের সংগঠিত করে বিক্ষোভ শুরু হয়। নেতৃত্ব দেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সান্ত্বনা দত্ত ও ব্লক সম্পাদক রমাকান্ত রায়। আন্দোলনের চাপে মহকুমা কৃষি আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং ব্যবসায়ীরা চাষিদের প্রয়োজনীয় সার দিতে বাধ্য হয়।
আন্দোলনের জয়ের খবর জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি হয়। সার কেনার সময় ট্যাগিং সমস্যাও ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার চাষিরা কিনতে গেলে ব্যবসায়ীরা এর সাথে চড়া দামের অণুখাদ্য সার নিতে বাধ্য করছিল। অথচ তা চাষিদের কোনও কাজে লাগে না। বছরের পর বছর রাসায়নিক সারের এই কালোবাজারি ও বেআইনি ট্যাগিং সিস্টেম সরকার ও প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলেছে। যে সব ব্লকে এআইকেকেএমএস প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলছে সেখানে এটা বন্ধ করা যাচ্ছে। বাস্তবে সার ব্যবসায়ী, প্রশাসন ও সরকার এই তিনের মধ্যে গড়ে উঠেছে এক অশুভ চক্র। বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি চাষের উপকরণের দামও লাগামহীনভাবে বাড়ছে, সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এর বিরুদ্ধে এআইকেকেএমএস-এর নেতৃত্বে আন্দোলন দিনে দিনে গতি পাচ্ছে।