সেভ এডুকেশন কমিটির সভায় বিশিষ্টরা
২৯ জুলাই বিদ্যাসাগরের ১৩২তম প্রয়াণ দিবসটি জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র বিরুদ্ধে সারা ভারত প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালন করে অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি।
এদিন কলকাতার মহাবোধি সোসাইটি হলে এক শিক্ষা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। কনভেনশনে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এই শিক্ষানীতিতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিপন্ন হবে, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বাড়বে। শিক্ষা সাধারণ পরিবারের নাগালের বাইরে চলে যাবে। তিনি বলেন, শিক্ষানীতি কোনও রাজনৈতিক দলের ইস্তাহার হতে পারে না, অথচ এই শিক্ষানীতিতে তারই চেষ্টা আমরা দেখছি। এতে বিজ্ঞান ও ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়ে যুক্তিবাদী চিন্তাকে ধ্বংস করা হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষতাকে মুছে ফেলা হচ্ছে। অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির সভাপতি, প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী বলেন, এই শিক্ষানীতির ধাঁচাটা নেওয়া হয়েছে আমেরিকার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস থেকে, আর এর প্রাণসত্তা আরএসএস-এর ইশতেহার। এই শিক্ষানীতি দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে শিক্ষার আঙিনার বাইরে ঠেলে দিতে চাইছে। অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক তরুণ নস্কর বলেন, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী যেভাবে দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন তা লজ্জাজনক। এই দুর্নীতির জালে আর কারা জড়িত তার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। অধ্যাপক মনোজ গুহ বলেন, শিক্ষার বেসরকারিকরণের সঙ্গে গৈরিকীকরণের যে অপচেষ্টা চলছে, তার মতো বিপদ শিক্ষায় বিগত দিনে আর আসেনি। মানুষের চিন্তা- চেতনা-মনুষ্যত্ববোধকে তা ধবংস করে দেবে।
কনভেনশনে মূল প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিক্ষিকা শম্পা সরকার। সমর্থনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সুব্রত বাগচি, প্রধান শিক্ষক ডক্টর কাবেরী চ্যাটার্জী, অধ্যাপক প্রদীপ দত্ত, শিক্ষক বীরেন্দ্র কুমার রায় প্রমুখ। কনভেনশনে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা চৌধুরী ও সমর্থন করেন শিক্ষক আন্দোলনের নেতা নীলকান্ত ঘোষ। কমিটির কলকাতা জেলা সম্পাদক স্বপন চক্রবর্তী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র সর্বনাশা চেহারাটা মানুষের কাছে ক্রমশই পরিষ্কার হচ্ছে। সর্বত্র আলোচনা ও নতুন কমিটি গঠনের উপর জোর দিতে হবে। কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন কমিটির কলকাতা জেলা সভাপতি অধ্যাপক তরুণ দাস।