সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের মুখপাত্র হিসেবে নীতি আয়োগ এক ঘোষণায় বলে যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরেই দেশের ৪২টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিদেশি শিল্পপতিদের বিক্রি করে দেওয়ার বা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এই উদ্দেশ্য দ্রুত সফল করতে এবং সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা একটি স্বশাসিত হোল্ডিং কোম্পানি করতে চাইছে৷ এমনকী ‘এয়ার ইন্ডিয়া’ বিক্রির জন্য প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷
কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিক্রি বা বন্ধ করা হলে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের কী ব্যবস্থা হবে, তা ভাবাই হয়নি৷ অন্যদিকে ৪৪টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইন সংস্কার করে ৪টি ‘লেবার কোড’ তৈরির পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তও অবিলম্বে কার্যকর করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷
বেকারত্বের হার নিয়ে ‘ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিস’ যে রিপোর্ট করেছিল, তা নির্বাচনের আগে বিজেপি সরকার প্রকাশ করতে দেয়নি৷ এখন তা স্বীকার করে বলছে, ২০১৭–’১৮ সালে ভারতে বেকারত্বের হার বিগত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ একদিকে তারা এই কথা বলছে, অন্য দিকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি বা বন্ধ করে বেকারত্বের বিস্ফোরণ ঘটাতে চাইছে৷
কেন্দ্রীয় সরকারের উপরোক্ত সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ১ জুন এ আই ইউ টি ইউ সি–র সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর সাহা বলেন, ‘২০১৭ এবং ২০১৮ সালে বিএমএস ছাড়া সমস্ত কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকে দু’দিনের দেশব্যাপী শ্রমিক ধর্মঘটে প্রায় ২০ কোটি মানুষের অংশগ্রহণে থমকে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ তখন তারা ৪৪টি শ্রম আইনকে ৪টি ‘লেবার কোডে’ পরিণত করতে পারেনি৷ এখন আবার বিপুল শক্তি নিয়ে দ্বিতীয়বার ফিরে এসেই বিজেপি সরকার শুধু ওই ৪টি লেবার কোড চালু নয়, শ্রমিকদের আইনি লড়াইয়ের প্রায় সব ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিদেশিদের বিক্রি করে বিশাল বেকার বাহিনী সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করছে৷ চূড়ান্ত শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী এই পদক্ষেপকে ধিক্কার জানানোর সাথে সাথে অবিলম্বে তা প্রতিহত করতে পুনরায় দেশব্যাপী লাগাতার ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি৷