১ ফেব্রুয়ারি ২০২২-এর কেন্দ্রীয় বাজেট সম্পর্কে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ওই দিনই এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন,
আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি, বিপুল বেকারত্ব ও ছাঁটাই, আয় কমে যাওয়া এবং যথাযথ চিকিৎসা, শিক্ষা ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার সমস্যাগুলিতে জনজীবন জর্জরিত। দু’বছর ধরে চলা করোনা অতিমারি এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। অথচ এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে এই বিষয়গুলির কোনওটিই কার্যত স্থান পায়নি। দ্রুত গতিতে নিঃস্ব হতে থাকা জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তাঁদের হাতে সরাসরি টাকা তুলে দেওয়া বা এই ধরনের নিশ্চিত আয়ের কোনও প্রকল্পের প্রস্তাব এই বাজেটে দেখা যায়নি। তার বদলে অর্থনীতির একটানা উন্নতির জন্য সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা বোঝাতে অর্থমন্ত্রী বহু বাগাড়ম্বর করেছেন। আগামী দিনে সার্বিক ডিজিটাইজেশনের আওতায় অর্থনীতির সমস্ত ক্ষেত্রকে আনার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে তথাকথিত ‘সর্বাঙ্গীণ বিকাশ’-এর তত্ত্বের মতো পুরনো কথার চর্বিতচর্বণ করেছেন। একচেটিয়া পুঁজিপতিদের জন্য অসংখ্য ছাড়, যেমন কর্পোরেট কর-সারচার্জ ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাজেট এবার সর্বনাশা ‘ক্রিপটোকারেন্সি’-র কারবারকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে দিল। এই ক্রিপটোকারেন্সি হল, সম্পদকে আর্থিক ব্যবস্থায় প্রতিফলিত হতে না দিয়ে তার হাত-বদলের সম্প্রতি আবিষ্কৃত একটি রাস্তা।
অধিকাংশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলিতে এই বাজেট হয় সরাসরি নয়ত পিপিপি-র মাধ্যমে পরোক্ষ ভাবে বেসরকারি মালিকদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করেছে। স্পষ্টতই এই বাজেটে অন্তঃসারশূন্য কিছু অর্থনৈতিক বুলির আড়ালে পুঁজিপতিদের স্বার্থবাহী নীতিগুলিকে আড়াল করা এবং একচেটিয়া পুঁজিপতি গোষ্ঠীকে ব্যাপক ভাবে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে কোটি কোটি মেহনতি জনসাধারণকে প্রতারিত করা হয়েছে। নিজেদের প্রভু শাসক পুঁজিপতি শ্রেণির সেবায় কায়মনোবাক্যে দায়বদ্ধতার পাশাপাশি জনসাধারণের স্বার্থের প্রতি কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের অপরাধীসুলভ উদাসীনতায় এই বাজেট আরও একবার সিলমোহর দিল।