কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ আইনের প্রতিবাদে লক্ষ লক্ষ কৃষক দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করলে বিজেপি সরকারের পুলিশ তাঁদের উপর লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামানের আক্রমণ নামিয়ে আনে। রাস্তা কেটে দিয়ে, কংক্রিটের ব্যারিকেড গড়ে তোলে। এই অবস্থায় কৃষকরা রাজধানীর একাধিক সীমান্তে অবস্থান শুরু করেন। প্রবল শীতের মধ্যে মহিলা শিশুরাও তাতে সামিল। ইতিমধ্যেই ৪০ জনের বেশি কৃষক একটানা অবস্থান করতে গিয়ে আন্দোলনের ময়দানেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। একজন সন্ত ছাড়াও কয়েকজন আত্মাহুতি দিয়েছেন আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে। সংগ্রামরত কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ এআইকেএসসিসি-র ডাকে সাড়া দিয়ে এই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশজুড়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালন করল এস ইউ সি আই (সি) এবং কৃষক সংগঠন এআইকেকেএমএস সহ নানা গণসংগঠন।
দিল্লির আন্দোলনস্থলে শহিদ বেদিতে এআইকেকেএমএসের সর্বভারতীয় সভাপতি কমরেড সত্যবান ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর ঘোষ সহ নেতৃবৃন্দ মাল্যদান করেন। সমস্ত রাজ্যের রাজধানী এবং ব্লকে ব্লকে এই কর্মসূচি পালিত হয় এবং সর্বত্র শপথবাক্য পাঠ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলায় কয়েক হাজার স্থানে শহিদ বেদিতে মাল্যদান ও শপথ বাক্য পাঠ করা হয়। সর্বত্রই সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আন্দোলনের শপথ নেন। কলকাতা শহরের শতাধিক স্থানে এই শপথ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের কর্মসূচি হয়।
আন্দোলনের শপথ
‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের তৈরি করা কর্পোরেট-স্বার্থবাহী, কৃষকবিরোধী তিনটি কৃষি-আইন ও বিদ্যুৎ আইন প্রতিরোধের লক্ষ্যে অদম্য দৃঢ়তায় এক অতুলনীয়, ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন চলছে আমাদের দেশে। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে নারী, শিশু, বৃদ্ধ নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ কৃষিজীবী মানুষ দিনের পর দিন দিল্লির রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে বসে রয়েছেন। হৃদয়ের গভীর থেকে আমরা আন্দোলনরত এই সাহসী বীরদের সংগ্রামী অভিবাদন জানাই। এই মহান সংগ্রামে বহু যোদ্ধা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। সেই বীর শহিদদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি এবং কাঙিক্ষত লক্ষে্য পৌঁছানো পর্যন্ত এই সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছি। এই সংগ্রাম সফল করতে আমরা কৃষক সমাজ ও মেহনতি মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।”