তীব্র কৃষক আন্দোলনের সামনে মাথা নোয়াতে বাধ্য হল হরিয়ানার উদ্ধত বিজেপি সরকার। লাগাতার কৃষক আন্দোলনের চাপে অবশেষে কার্নালে আন্দোলনকারী কৃষক সুশীল কাজলের হত্যা এবং বহু কৃষকের আহত হওয়ার জন্য মূল দায়ী এসডিএমকে শাস্তি দিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
কেন্দ্রের তিন কালা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সংযুক্ত কিসান মোর্চার ডাকে দিল্লি থেকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান সহ বিভিন্ন রাজ্যে। ২৮ আগস্ট মোর্চার ডাকে কার্নালের টোলপ্লাজার কাছে জাতীয় সড়কে জড়ো হয়ে কৃষকরা মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছিলেন। হঠাৎ পুলিশ বেপরোয়া লাঠি চালাতে শুরু করে। এসডিএম পুলিশকে নির্দেশ দেয় আন্দোলনকারীদের ‘মাথা ফাটিয়ে দাও’। মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সুশীল কাজল নামে এক আন্দোলনকারী কৃষক। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন বহু কৃষক।
পুলিশি বর্বরতায় আন্দোলন থামার পরিবর্তে আরও ছড়িয়ে পড়ে। হরিয়ানা জুড়েই শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। বস্তারা টোল প্লাজার পাশাপাশি কুরুক্ষেত্রের শাহবাদ এবং কালকা-জিকরপুর সড়কের সুরযপুর টোলপ্লাজাও বন্ধ হয়ে যায়। চাষিরা রাস্তায় খাটিয়া পেতে বসে পড়েন। আন্দোলন চলতে থাকে।
এই আন্দোলন আরও ছড়িয়ে দিতে ৭ সেপ্টেম্বর কার্নালে মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেওয়া হয়। সরকার তা ব্যর্থ করতে বিস্তীর্ণ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। রাস্তায় রাস্তায় চেকপোস্ট ও ব্যারিকেড বসানো হয়। কার্নাল ও সংলগ্ন এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। চড়া রোদে কৃষকরা যাতে বেশিক্ষণ থাকতে না পারেন সে জন্য প্রশাসন মিনি সেক্রেটারিয়েটের সামনে গাছের ডাল কেটে দেয়। কিন্তু এসব কোনও কিছুই কৃষক আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারেনি।
অবশেষে আন্দোলনকারীদের দাবি মানতে বাধ্য হয় হরিয়ানার বিজেপি সরকার। অভিযুক্ত এসডিএমের বিরুদ্ধে তদন্ত এবং তদন্ত চলাকালীন তাকে শাস্তিমূলক ছুটিতে পাঠাতে বাধ্য হয়। যে এসডিএমের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই অত্যাচারকে সমর্থন করেছিলেন, তার বিরুদ্ধেই তদন্তের নির্দেশ দিতে হন তিনি। জয় হয় ঐকবদ্ধ আন্দোলনের। ভারত বনধ সফল করতে এই জয় দেশের মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।