সংখ্যাটি বিরাট৷ ১২,০০০০০০০০০০৷ বারোর পরে দশ–দশটি শূন্য, দেখলেই মাথা ঘুরে যায়৷ ১২০০০০০০০০০০ অর্থাৎ বারো হাজার কোটি৷ কীসের সংখ্যা? টাকার৷ আজ্ঞে হ্যাঁ৷ এই এত টাকা মহান সম্রাট মোদিজি দেশের চাষিদের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন বিশ্বাস হচ্ছে না? টিভি, রেডিও, খবরের কাগজে এত ঢালাও প্রচার হচ্ছে– সে সব আপনি দেখতে–শুনতে পাচ্ছেন না?কেমন লোক মশাই আপনি?
এই এত টাকা দান করে নাঙ্গা ফকির হয়ে আগামী চব্বিশ সালে তিনি ভব–বৈতরণী পার হয়ে যাবেন৷ শুনে, তাঁর দিশি–বিলিতি ভক্তরা ধন্যি ধন্যি করছে৷ কর্ণাটকের এক সভায় তিনি ঘোষণা করেছেন, এই টাকা কৃষকদের হাতে তুলে দেবেন৷ দেশব্যাপী এত ঢাক–ঢোল–কাঁসরের শব্দের মধ্যে একটু খটকা লাগলো৷
বারো হাজার কোটি টাকা ছ’কোটি চাষির মধ্যে বিলি করলে মাথা পিছু কত পড়ে? ছোটবেলায় শেখা সরল পাটিগণিতের অঙ্ক কষে দেখা গেল, দু’হাজার টাকা, সারা বছরের জন্য৷
ঘোষণা শুনেই চাষিরা বলবলি করছে– এর একটা অংশ প্রশাসনের ইতিউতি ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবে৷ পুঁজিবাদী এই দেশে সরকারি অভিধানে ‘কৃষক’ বলতে ধরা হয় জোতদারদের৷ বাকি টাকার একটা বড় অংশ যাবে তাদেরই পেটে৷ অর্থাৎ জনগণের ট্যাক্সের টাকা সরকারের হাত ঘুরে যাবে বড়লোকদের ঘরে৷ এত ছাঁকনি গলে ক’টা টাকা পাবে গরিব চাষিরা? কষ্ট করে সে অঙ্ক আর নাইবা কষলাম৷ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মানুষকে স্বাবলম্বী না করে অসম্মানজনক ভিক্ষুকের জীবনযাপনে বাধ্য করার এই বীভৎস তামাসা আর কতদিন চলবে?