পাঁচ মাস ধরে দিল্লির সীমান্তে অবস্থান করে নিজেদের দাবি কেন্দ্রীয় সরকারকে শোনানোর চেষ্টা করে চলেছেন দেশের কৃষক সমাজ। কিন্তু এ সরকার এতটাই অগণতান্ত্রিক, এতটাই নিষ্ঠুর-নির্মম যে আন্দোলনের ময়দানে আড়াইশোর বেশি কৃষকের মৃত্যুর পরেও তারা কোনও আলোচনাই করতে নারাজ। কর্পোরেট পুঁজিমালিক ধনকুবেরদের কাছে তাদের স্বার্থ রক্ষার যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি কেন্দে্রর ক্ষমতা দখল করেছে তার থেকে এতটুকু সরবার ইচ্ছা তাদের নেই। বিজেপি সরকার ভেবেছে, কর্পোরেট পুঁজি মালিক প্রভুদের পাশে পেলেই তার ভোট বৈতরণী পারের পারাণি জোগাড় হয়ে যাবে। জনগণের কোনও কণ্ঠস্বরকেই তারা তোয়াক্কা করতে নারাজ। সরকার ভাবছে, টাকার জোর, প্রচারের জোর, প্রশাসনের চোখরাঙানি, মিথ্যা মামলা এই সবের জোরেই আন্দোলনকে ভেঙে দিতে পারবে তারা।
কিন্তু তাকে মিথ্যা প্রমাণ করে কৃষকরা অনমনীয় দৃঢ়তায় তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে গিয়ে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, কত তাকত তোমার পুলিশ-মিলিটারি-আমলাতন্ত্রের আছে, দেখাও, দেখাও তোমার টাকার জোরে বাঁধা পড়া মিডিয়ার তাকত। আর দেখে নাও জনগণের আন্দোলনের তাকত। সংযুক্ত কিসান মোর্চা ডাক দিয়েছিল ২৬ মার্চ ভারত বনধের। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সারা ভারতে কৃষক-শ্রমিকরা বনধ সফল করতে রাস্তায় নামলেন ওই দিন। কিসান মোর্চা নেতৃত্ব ঘোষণা করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সহ যে পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন, সেগুলি বনধের আওতার বাইরে থাকবে।
মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে ২৩ মার্চ বনধের সমর্থনে প্রচারের পাশাপাশি শহিদ ভগৎ সিংয়ের ছবি নিয়ে মিছিলে সামিল হয়েছিলেন বিশাল সংখ্যক মানুষ। ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় হয় মশাল মিছিল। ২৬ মার্চ মধ্যপ্রদেশের বেশিরভাগ রেল জংশন, উত্তরপ্রদেশের রেল স্টেশন, জাতীয় সড়ক, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানের বহু জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বনধ সমর্থকদের পিকেটিংয়ে। দক্ষিণ ভারতে হায়দরাবাদ সহ নানা স্থানে রেল অবরোধ ও রাস্তা অবরোধ হয়। এ আই কে কে এম এস-এর সর্বভারতীয় সভাপতি এবং সংযুক্ত কিসান মোর্চার অন্যতম নেতা কমরেড সত্যবান বলেন, এই বনধ সরকারকে একটা হুঁশিয়ারি দিয়ে গেল। এরপরও সরকার দাবি না মানলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।