Breaking News

কুম্ভ এবং এআই সরকারি কর্তার উদ্ভট মিশ্রণ

বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারকে ধর্মের জারক রসে চুবিয়ে পরিবেশন করা বিজেপি সরকারের সনাতনী সংস্কৃতি। সম্প্রতি তাঁর আরেকটি নজির পাওয়া গেল আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধাকে কুম্ভমেলার সঙ্গে তুলনায়। অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই)-এর চেয়ারম্যান বাণী দিয়েছেন, ‘‘কুম্ভমেলা যেমন নদী, মানবতা এবং আধ্যাত্মিকতার সঙ্গম, তেমনই কৃত্রিম মেধা হল ডেটা বা তথ্য, অ্যালগরিদম বা সূত্রমালা এবং কম্পিউটেশনাল পাওয়ার বা গণনাশক্তির সংমিশ্রণ।’’

ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তিবিদ্যার পঠনপাঠন পরিচালনার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া যে সংস্থার কাজ, তার কর্তার এমন অমূল্যবাণী দেশের সচেতন মানুষকে শিহরিত করেছে। অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির সর্বভারতীয় সম্পাদক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক তরুণ নস্কর এর তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, কৃত্রিম মেধা বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যার একটি উন্নত অবদান। কুম্ভমেলা বা ধর্মীয় কোনও বিষয়ের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। উপমার এমন উদ্ভট নজিরকে ‘কাঁঠালের আমসত্ত্ব’ বানানোর অপকৌশল হিসাবে বর্ণনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক সায়েন্সের অধ্যাপক সনাতন চট্টোপাধ্যায়। বিরোধিতা করেছেন সিপিডিআরএস-এর রাজ্য সম্পাদক রাজকুমার বসাক। তিনি বলেন, বিজেপি সরকারের মদতে সর্বত্রই অন্ধতা কুসংস্কার জনমানসে ছড়িয়ে দেওয়া অপচেষ্টা ধারাবাহিকভাবে চলছে। এই প্রেক্ষাপটে কৃত্রিম মেধাকে কুম্ভমেলার সঙ্গমের সাথে তুলনা অতীতচারী কুসংস্কারেরই নতুন মাত্রা। এআইসিটিই কর্তা কেন এমনটি করলেন? কাকে খুশি করতে যুক্তিহীনতার এমন অবতারণা? এর দ্বারা সংশ্লিষ্ট বাণীদাতার পদোন্নতির দরজা খুলে যেতে পারে, কিন্তু শিক্ষা, জ্ঞানজগতের আকাশে ঘনিয়ে আসবে দুর্যোগের ঘনঘটা। এর মধ্যে রয়েছে নবজাগরণের উন্নত চিন্তার ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠা ‘বৈজ্ঞানিক গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ’ শিক্ষা ধ্বংসের প্রয়াস।