এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)–এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড সৌমেন বসু ২৮ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষায় পাশ–ফেল তুলে দেওয়ার কংগ্রেস পরিচালিত পূর্বতন কেন্দ্রীয় ইউপিএ সরকারের নীতির ফলে সারা দেশের কোটি কোটি সাধারণ ঘরের সন্তানদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে চলেছে৷ ক্ষমতায় এসে বিজেপি সরকারও সেই সর্বনাশা নীতি এতকাল জারি রেখেছিল৷ ফলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে৷ এই রাজ্যে সিপিএম সরকারই সর্বপ্রথম প্রায় ৪০ বছর আগে প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাশ–ফেল প্রথা তুলে দিয়েছিল, যা এখনও বহাল আছে৷ এর ফলে রাজ্যের সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার সর্বনাশ সকলেই এখন স্বীকার করছেন৷ আমাদের দলের নেতৃত্বে পরিচালিত আন্দোলন এবং সারা দেশের শিক্ষানুরাগী মানুষের চাপেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাধ্য হয়ে তাদের নীতি পরিবর্তন করেছে৷ কিন্তু তারা সিপিএম আবিষ্কৃত শিক্ষার ক্ষতিসাধনের এই ব্যবস্থা সারা দেশ জুড়ে বহাল রাখতে প্রাথমিক স্তরে নো–ডিটেনশন চালু রেখেছে– প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ–ফেল চালু করার সিদ্ধান্ত না নিয়ে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ–ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে৷ পাশ–ফেল প্রথার পুনঃপ্রবর্তন গণআন্দোলনের এক উল্লেখযোগ্য জয় এতে কোনও সন্দেহ নেই৷ কিন্তু ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকলে পরবর্তী স্তরে তা পূরণ হয় না৷ তাই শিক্ষা রক্ষার স্বার্থে সারা দেশব্যাপী শিক্ষানুরাগী মানুষকে প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ–ফেল চালুর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে৷
আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার জনগণের দাবি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ–ফেল চালুর ঘোষণা না করে প্রকারান্তরে পঞ্চম শ্রেণি থেকেই পাশ–ফেল চালুর বিষয়টা বাতাসে ভাসিয়ে দিতে চাইছে এবং এই কাজে তারা সংবাদমাধ্যমকেও কাজে লাগাচ্ছে, যা নিন্দনীয় চালাকির নামান্তর৷ রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি, অযথা কালক্ষেপ না করে জনগণের দাবি মেনে প্রথম শ্রেণি থেকেই পাশ–ফেল চালুর ঘোষণা করুন, সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার অধিকার ফিরিয়ে দিন৷ অন্যথায় কোটি কোটি ক্ষতিগ্রস্ত অভিভাবক ও তাঁদের সন্তানদের কাছে আপনারাও সিপিএমের মতোই বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে অভিযুক্ত হবেন৷’’
(৭১ বর্ষ ১ সংখ্যা ৩ আগস্ট, ২০১৮)