দলের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর উত্তর লোকাল কমিটির সদস্য কমরেড সাহিন বেগম ১৮ জুন রাতে ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছিল, তার সাথে মারণ রোগ কোভিডের আক্রমণ ঘটায় তাঁর জীবন রক্ষা করা যায়নি।
কমরেড সাহিন বেগম উত্তর চব্বিশ পরগণার ব্যারাকপুরে এক কংগ্রেস সমর্থক পরিবারের সন্তান। তাঁর পিতা আব্দুল লতিফ এস ইউ সি আই (সি)-র প্রয়াত নেতা কমরেড সুবোধ ব্যানার্জীর বক্তব্য শুনে আকৃষ্ট হন এবং কংগ্রেস পরিত্যাগ করে এই দলের রাজনীতিকেই জীবনে গ্রহণ করেন। তিনি পরিবার পরিজনদেরও দলের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় কমরেড সাহিন বেগমের দাদা কমরেড হাসান দলের একজন দায়িত্বশীল কর্মীতে পরিণত হন। সেই সূত্রেই কমরেড সাহিন বেগম দলের সংস্পর্শ আসেন। সদ্য প্রয়াত মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও অফিস সম্পাদক কমরেড নুরসেদ আলি’র সাথে বৈবাহিক সূত্রে কমরেড সাহিন বেগম ১৯৯২ সালে বহরমপুরে আসেন। নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ সাহচর্যে কমরেড সাহিন ব্যক্তিগত স্বার্থকে গৌণ করার সংগ্রাম শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে দলের সদস্যপদ অর্জন করেন। তিনি দলের বহরমপুর উত্তর লোকাল কমিটির সদস্য ও অল ইন্ডিয়া মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। প্রথাগত শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও দলের পত্রপত্রিকা পড়ার প্রতি আগ্রহ ছিল অপরিসীম। তাঁর মাতৃভাষা ছিল হিন্দি। ফলে অনেক সময়ই বাংলা পড়তে ও বলতে সমস্যা হত। তা সত্ত্বেও প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কমরেড সাহিন বেগমের অকপট সারল্য ও কাজের প্রতি প্রবল আগ্রহ-উদ্যোগ শুধু দলীয় স্তরেই নয়, সাধারণ মানুষকেও আকৃষ্ট ও প্রভাবিত করত। রোগের বিধিনিষেধের জন্য শেষের প্রায় দু’বছর তাঁকে বাড়িতেই কাটাতে হয়। কিন্তু সমস্ত দলীয় কর্মসূচির খবরাখবর নিতেন প্রতিনিয়ত, দলের সদস্য চাঁদা নিয়ম করে পাঠিয়ে দিতেন। তাঁর ঘনিষ্ঠজনদেরও দলের কর্মীতে পরিণত করতে সচেষ্ট ছিলেন। কমরেড সাহিন বেগমের মৃত্যুতে দল একজন নিষ্ঠাবান কর্মীকে হারাল।
কমরেড সাহিন বেগম লাল সেলাম