৩ এপ্রিল ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার কঙ্কনদিঘিতে এসইউসিআই(সি)-র আঞ্চলিক অফিস উদ্বোধন হয়। রক্তপতাকা উত্তোলন ও শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন পলিটবুরো সদস্য ও রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড নন্দ কুণ্ডু, রাজ্য কমিটির প্রবীণ সদস্য ও জেলা সম্পাদক কমরেড মাদার নস্কর। উদ্বোধনী সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ নেতা কমরেড সামাদ আলি খাঁ।
নদীবেষ্টিত সুন্দরবনের এই দ্বীপভূমিতে পঞ্চাশের দশকে জোতদার জমিদারদের দ্বারা উচ্ছেদের হাত থেকে চাষিদের রক্ষা করা, জমিদারদের কবল থেকে বেনাম জমি উদ্ধার করে গরিব চাষি ও ভূমিহীন খেতমজুরদের মধ্যে বণ্টন, ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ চাষিকে দেওয়া, খেতমজুরদের মজুরি বৃদ্ধি– এই সমস্ত দাবি নিয়ে এ যুগের অগ্রগণ্য মহান মা’র্বাদী চিন্তানায়ক কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারাকে হাতিয়ার করে এস ইউ সি আই (সি) দলের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক চাষি আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। জটা কঙ্কনদিঘী এলাকায় সেই আন্দোলন ব্যাপক বিস্তার লাভ করে। সংঘটিত হয়েছিল রক্তক্ষয়ী ঐতিহাসিক চাষি আন্দোলন। জোতদার শাসক দল ও পুলিশের অত্যাচারে, লাঠি ও গুলিতে নোনা মাটি সেদিন রক্তাক্ত হয়েছিল। প্রতিরোধ আন্দোলনে এস ইউ সি আই (সি) দলের ৯ জন সংগ্রামী কমরেড শহিদের মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন অসংখ্য। তাঁরা জীবন আহুতির মধ্য দিয়ে দলের সংগ্রামী বামপন্থা ও গণআন্দোলনের ঝাণ্ডাকে উড্ডীন রেখে গেছেন। বর্তমান সময়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোর জনবিরোধী নীতি ও সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও স্থানীয় সমস্যাগুলির সমাধানের দাবিতে এই এলাকার সাধারণ মানুষ দলের নেতৃত্বে আজও ধারাবাহিক আন্দোলন সংগঠিত করে চলেছেন। এই আন্দোলনের প্রয়োজনেই দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন। এলাকার জনসাধারণের সাহায্য, ঐকান্তিক সহযোগিতা ও উৎসাহে সম্পন্ন হয়েছে অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের কাজ। প্রধান বক্তা কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান সমাজ পুঁজির শাসন শোষণে বিপর্যস্ত। দেশের সকল সম্পদ মুষ্টিমেয় শিল্পপতিদের হাতে কুক্ষিগত। এদের সেবাদাস শাসক দলগুলি এই শোষণকে টিকিয়ে রাখতে মানুষকে বিপ্লবী দলের নেতৃত্বে আন্দোলনমুখী হতে না দিয়ে ভোটের মোহে আটকে রাখতে চায়। এই মোহ থেকে শোষিত মানুষকে সংগঠিত করে বিপ্লবের আঘাতে সমাজতান্ত্রিক সমাজ কায়েম করতে হবে। তা না হলে শোষণ অত্যাচার থেকে মুক্তির রাস্তা নেই।