হাসপাতালে ২৮৩ রকমের ওষুধ বাতিলের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নেমেছে এসইউসিআই(সি)। বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্ষোভ-অবস্থান চলছে। ২৮ জানুয়ারি দলের জোড়াসাঁকো লোকাল কমিটির উদ্যোগে কলকাতা মেডিকেল কলেজের ৩ নম্বর গেটে বিক্ষোভ অবস্থান হয়। কর্মসূচিতে বহু রোগী-পরিবার সামিল হয়।
এমনিতেই বিভিন্ন জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে বাসে-ট্রেনে অসুস্থ মানুষ মেডিকেল কলেজে আসেন। তারপর টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইন, ডাক্তার দেখানোর লাইন, শেষে ওষুধ নেওয়ার লাইন। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ-পেটে খিদে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘন্টা লাইন দিয়ে একজন অসুস্থ রোগী বা তার পরিবারের লোক যখন দেখে বেশিরভাগ ওষুধই বাইরে থেকে চড়াদামে কিনতে হয়, তখন তাঁর মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর ধরে ভোটের পর ভোট দিয়ে একটার পর একটা সরকার গঠন হয়েছে, কিন্তু জনজীবনের নূ্যনতম চাহিদাগুলো এখনও পূরণ হয়নি। এস ইউ সি আই (সি) প্রতিবাদ করছে দেখে ক্ষুব্ধ মানুষরা অনেকেই এগিয়ে এসে ক্ষোভের কথা জানান, নিজে থেকেই ফোন নম্বর দিয়ে যান। আন্দোলন জোরদার করার পরামর্শ দেন। শুধু রোগীরাই নয়, মেডিকেল কলেজের অনেক চিকিৎসক, অধ্যাপক এবং কর্মী এই কর্মসূচিতে সমর্থন জানান এবং আন্দোলন তহবিলে সাহায্য করেন।
আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবক এই মেডিকেল কলেজেরই ছাত্র ডাঃ সৌম্যদীপ রায়, মেডিকেল ছাত্র অর্ণব তালুকদার ও ফজলুল হক যখন প্রচার লিফলেট বিলি করছিলেন তখন কাজী আব্দুলাহ নামে এক ব্যক্তি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘ভোটের সময় নেতাদের শুধু বড় বড় ভাষণ, একমাত্র দল এস ইউ সি আই (সি) যারা মানুষের দাবিতে আন্দোলন করে।’ তিনি দলের কর্মীদের আহ্বান করেন, ‘চলুন, সুপারের কাছে যাই, তাঁকে আমাদের অভাব-অভিযোগ জানাই। দরকার হলে ধর্নায় বসবো।’ তিনি লাইনে দাঁড়ানো অন্যদেরও ডাকেন। স্বেচ্ছাসেবকরা সবাইকে নিয়ে সুপারের কাছে যান। নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। শেষে কমরেড বন্দিতা পাত্রের নেতৃত্বে ৪ জনের প্রতিনিধি দল সুপারের সাথে দেখা করেন। সুপার দাবিগুলির যৌক্তিকতা স্বীকার করলেও করোনা পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে দায় এড়িয়ে যান। দলের জোড়াসাঁকো লোকাল সম্পাদক কমরেড রুমা পণ্ডা বলেন, রাজ্য সরকারকে এই জনবিরোধী নীতি পরিবর্তনে বাধ্য করতে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে।