উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের কাছে এক চায়ের দোকানে বসে মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ ভদ্রলোকের। দেখে চলেছেন নির্বাচনী ফলের লাইভ আপডেট। ততক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই সারা ভারতেই আগের তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকছে বিজেপি। জিজ্ঞাসা করলাম, কী বুঝছেন, ৪০০ পারের গলাবাজি এ ভাবে মিলিয়ে গেল কেন? প্রশ্নটা শুনেই মুখে একগাল হাসি, বললেন এ রাজ্যে বিজেপির পরাজয়ে আপনাদের অবদান কম নয়। আপনাদের প্রচারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বললাম, কেন অন্যেরাও তো বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করেছে? দূর মশাই! বলে উঠলেন ভদ্রলোক, আপনারা বিজেপিকে ধরেছেন আদর্শগত দিক থেকে। গত কয়েক মাস ধরে একেবারে তথ্য দিয়ে, তত্ত্ব দিয়ে আপনারা যে ভাবে বিজেপির চরিত্র একেবারে খুলে দিয়েছেন মানুষের সামনে তা আর কেউ করতে পেরেছে নাকি? অন্যেরা বিজেপির বিরুদ্ধে বলেছে, কিন্তু তাদের আক্রমণ তো মূলত কে বড় চোর, কে ছোট চোর তা নিয়ে! আর কিছু ব্যক্তিগত আক্রমণ, না হলে বিজেপির পাল্টা হিসেবে তারাও সূক্ষ্ম সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছে। ওই দিয়ে কি বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা যায়?
একই ধরনের কথা শোনা গেল যাদবপুরের এইট-বি মোড়ের চায়ের দোকানে, দক্ষিণ কলকাতার বেহালা এলাকার এক বিখ্যাত তেল কলের দোকানের সামনে। হুগলির শ্রীরামপুর কেন্দ্রের শিল্পাঞ্চলের এক ভোটার এস ইউ সি আই (সি)-র এক কর্মীকে ডেকে বলেছেন, এখানে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি থেকে মুক্ত করার চেষ্টা সিটু কোনও দিন করেনি। ওদের ভয় ছিল তাতে সংগঠনে লোক আসবে না। আপনারা এই শ্রমিক মহল্লাতেও যে ভাবে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন, তা খুব দরকার ছিল। বিজেপি আরএসএস যে বিষ ছড়াচ্ছে তার মোকাবিলা শুধু ভোট ভোট করে হবে না। আপনাদের রাজনীতিই পারে এর মোকাবিলা করতে।