এ ভাবেও লড়া যায়! এমন নির্ভয়ে বুক পেতে বুলেট আহ্বান করা যায়! বাংলাদেশের ছাত্রদের কুর্নিশ। তোমরা এই শতাব্দীর লড়াইয়ের রক্তমাখা পথ দেখিয়ে গেলে ভাই!
দু’হাত ছড়িয়ে গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে মৃত্যুকে আহ্বান করছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের নেতা আবু সাঈদ– এই ছবি সারা দুনিয়ার প্রতিবাদী মানুষের বুকে এঁকে রেখে গেছে এক স্থায়ী রেখা। যে লড়াই তাঁরা লড়েছেন, মানুষের পরিচয় এতটুকুও বহন করলে তাঁদের কুর্নিশ জানাতেই হবে।
২১ জুলাই পর্যন্ত সংবাদ সংস্থা এফপি পুলিশ এবং শাসক দলের কর্মীদের আক্রমণে অন্তত ১৫১ জনের মৃত্যুর খবর জানালেও আন্দোলনকারী ছাত্ররা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা তিনশোর বেশি।
১৪ জুলাই থেকে অতি দ্রুত সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া এই আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত গণবিক্ষোভের রূপ নেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাহাঙ্গির নগর, সিলেটের শাহজালাল, রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনে যোগ দেন। মেয়েরাও দলে দলে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে পথে নামেন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাও পিছিয়ে ছিলেন না। ছাত্র-ছাত্রীদের ঠেকাতে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রাবাসগুলি বন্ধের নির্দেশ দেয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ডাক দেন ১৯ জুলাই থেকে চলবে ‘কমপ্লিট শাট ডাউন’। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন। এই দাবি তরঙ্গ তুলে গোটা দেশে জনগণের দাবিতে পরিণত হয়। সারা দেশে পিকেটিং ও বিক্ষোভের ঝড় বয়ে যায়। আওয়ামি লিগের নিচের তলার একটা বড় অংশও আন্দোলনের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন ভাঙতে সভ্য সমাজের সব রীতিনীতি অগ্রাহ্য করে সীমাহীন বর্বরতা চালিয়েছে পুলিশ, আধাসেনা সহ সে দেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের ছত্রধারী নৃশংস গুণ্ডাবাহিনী। নবম শ্রেণির স্কুল ছাত্র পর্যন্ত শহিদ হয়েছেন এই আক্রমণে। পিটিয়ে, গুলি চালিয়ে হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, হাসপাতালে আসা ছাত্রদের মৃতদেহ দেখে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে।
আন্দোলনের তীব্রতা দেখে সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কার নিয়ে শুনানির তারিখ তড়িঘড়ি এগিয়ে আনে। তারা কোটা ব্যবস্থার কিছু সংস্কারের জন্য রায় দিয়েছে। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই রায় পক্ষপাত-দুষ্ট। কারণ পরে সরকার একে তার ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা করতে পারবে। ফলে কমপ্লিট শাটডাউন চলবে। তাঁরা দাবি করেছেন, সমস্ত হত্যার দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে এবং দল থেকেও বহিষ্কার করতে হবে। দোষী পুলিশ অফিসারদের বরখাস্ত করতে হবে, সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস খুলে দিতে হবে। ঢাকা, জাহাঙ্গির নগর, রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরদের পদত্যাগ করতে হবে। যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলিগ হামলা করেছে সেখানে তাদের নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলাকারী পুলিশ ও ছাত্রলিগ-যুবলিগ কর্মীদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা করতে হবে। শহিদ ও আহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গ্রেফতার হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে হবে। আন্দোলনকারীদের ভবিষ্যতে কোনও হয়রানি করা চলবে না।
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ভারতে দিল্লি সহ সমস্ত রাজ্যে মিছিল করেছে এআইডিএসও এবং অন্যান্য বামপন্থী সংগঠনগুলি। কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৭ জুলাই এআইডিএসও-র সর্বভারতীয় কমিটি এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায়। তাদেরই উদ্যোগে ভারতের বেশ কয়েকটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলির বেশ কিছু বামপন্থী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দেয়। বিজেপি-আরএসএস এই আন্দোলনকে ভারত বিরোধী বলে প্রচার করলেও তার কোনও বাস্তবতা নেই।
আন্দোলনের সময় মহিলারা ছাত্রদের মধ্যে খাবার আর জল বিতরণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে স্কুল শিক্ষকরাও ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অভিভাবকরা এসেছেন সন্তানের হাত ধরে। বলেছেন, আমি চাই এই আন্দোলনে আমার সন্তানও অংশ নিক। এই হল যথার্থ অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যা অর্জন করেছে বাংলাদেশ বহু রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আর ঠিক এখানেই আঘাত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে অভিহিত করেন। ক্ষোভের আগুনে যেন ঘি পড়ে। সমগ্র জনসমাজ উচ্চস্বরে এর তীব্র নিন্দা করে। ‘রাজাকার’ বাংলাদেশে একটি ঘৃণিত শব্দ। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যে বাহিনী পাকিস্তানের সেনার হয়ে গণহত্যা চালিয়েছিল তাদের বলা হত রাজাকার।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে এতদিন কোটা ছিল মোট ৫৬ শতাংশ। ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের কোটা, নারী ও পিছিয়ে পড়া জেলা কোটা ১০ শতাংশ করে, ৫ শতাংশ উপজাতি কোটা, ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা। সুপ্রিম কোর্ট তাকে কমিয়ে কোটা ৭ শতাংশ করতে বলেছে। ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কোটা, ১ শতাংশ উপজাতিদের কোটা, ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটা। ৫৩ বছর আগে ঘটা মুক্তিযুদ্ধকে দেখিয়ে এখনও রেখে দেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের কোটা বাস্তবে শাসক আওয়ামি লিগের সুবিধা বিতরণের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি মানুষের আবেগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাকে ব্যবহার করে শাসকরা দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করছে। ২০১৮-তে এই কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে উঠলে তার সামনে দাঁড়িয়ে সরকার কোটা বাতিল করার ঘোষণা করে। কিন্তু ২০২১-এ কিছু জন হাইকোর্টে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করলে হাইকোর্ট কোটা স্থগিতের আদেশনামা বাতিল করে দেয়। দেশের অভ্যন্তরে প্রতিবাদের কারণে সরকার সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি নিয়ে অ্যাপিল করে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কোটা ফিরিয়ে আনার দায় হাইকোর্টের কাঁধে চাপিয়ে বন্দুকটি নিজের হাতেই রেখেছিলেন। তিনি কোটা সংস্কারের দাবিকে রাজাকারদের আন্দোলন বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে কথা বললেই এখন রাজাকার বলে দাগিয়ে দেওয়াটা শেখ হাসিনার দল ভালই রপ্ত করেছে। তীব্র ক্ষোভে ছাত্ররা স্লোগান তুলেছেন, ‘আমি কে – রাজাকার! তুমি কে– রাজাকার! কে বলেছে– স্বৈরাচার’। তাঁরা স্লোগান দিয়েছেন, ‘চাইতে গিয়ে অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’! এই স্লোগান নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন, যেন বাংলাদেশের ছাত্ররা নিজেদের রাজাকার বলে গর্ব অনুভব করছেন। কিন্তু বাস্তবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি তীব্র ধিক্কার জানাতেই উঠেছে এই স্লোগান।
এই বছর জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামি লিগই তাদের পছন্দমতো কিছু লোককে খাড়া করে বিরোধী হিসাবে দাঁড় করিয়ে ভোটে জিতেছে। ২০১৪ এবং ২০১৮-তেও প্রায় একই কায়দায় আওয়ামি লিগ নির্বাচনের প্রহসন করে ক্ষমতা দখল করেছিল। বাংলাদেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের যখন তখন গ্রেপ্তার করা, এমনকি পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু খুব সাধারণ ঘটনায় পর্যবসিত হচ্ছে। ১৯৯০ থেকে বাংলাদেশে যে দলের সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন ও গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর আক্রমণ ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। বিএনপি, জামাত কিংবা আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় যারাই আসুক না কেন ঘটনাটা একই। ২০০৮ থেকে এই সময় পর্যন্ত চলা আওয়ামি লিগের শাসনে এই আক্রমণ আরও তীব্র, আরও নগ্ন হয়েছে। সমস্ত গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। নানা ধরনের অগণতান্ত্রিক কালা আইন জারি করেছে আওয়ামি লিগ সরকার। সরকার বিরোধী মতপ্রকাশের ওপর ক্রমাগত নানা নিষেধাজ্ঞা চেপেছে। বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী শাসন।
বাংলাদেশের ছাত্রদের কোটা বিরোধী আন্দোলনের পিছনে আসলে কাজ করেছে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের পুঞ্জীভূত তীব্র ক্ষোভ। মূল্যবৃদ্ধি প্রতি মাসেই তার আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তলানিতে। বেকারত্ব আকাশ ছুঁয়েছে। সরকারি হিসাবে বেকারের সংখ্যা ২৪.৩০ লক্ষ দেখালেও বিবিসির সংবাদদাতার মতে এ বছর ১ কোটি ৮০ লক্ষ যুবক-যুবতী কাজের সন্ধানে ঘুরছেন (দ্য ডেলি স্টার ৩০.১০.২৩। বিবিসি নিউজ ২২.০৭.২৪)। পোশাক কারখানা বা গারমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে অতি সামান্য মজুরিতে কিছু কাজ ছাড়া কাজের সুযোগ অতি সীমিত। স্নাতক বা উচ্চশিক্ষিতদের কাজের সুযোগ আরও কম। সে দেশের কিশোর থেকে যুবরা দলে দলে পাড়ি দেয় বিদেশে কিছু কাজের আশায়। বহু পরিবারের ভরণ-পোষণ চলে সেই ভরসাতেই। আর্থিক বৈষম্য বেড়েছে মারাত্মক হারে। বেশিরভাগ মানুষ চরম দারিদ্রের শিকার, অথচ মুষ্টিমেয় পুঁজিপতির হাতে বিপুল সম্পদ জমা হয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষক হল পুঁজিবাদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আসলে বেকারত্বের জ্বালা থেকেই উঠে আসে। মানুষের অভিজ্ঞতা বলে, কোটা বা সংরক্ষণ থাকুক আর নাই থাকুক, দেশের অধিকাংশ মানুষেরই উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরি পাওয়ার আশা নেই। যে সত্যটা ভারতের সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে এস ইউ সি আই (সি) বারবার তুলে ধরেছে। সমস্ত কর্মক্ষম মানুষের কাজ চাই এই দাবিটাকে শাসক শ্রেণি বারবার গুলিয়ে দিতে চায়।
বাংলাদেশের এই আন্দোলন একটা সত্যকে দেখিয়ে দিয়ে গেল, অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জেদ নিয়ে মানুষ যখন দাঁড়ায় কোনও বন্দুক, অস্ত্র, কামান তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না। সমাজতান্ত্রিক শিবিরের পতনের পর বুর্জোয়া শাসকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ভেবেছিল, আর প্রতিবাদের ভয় নেই। কিন্তু দুনিয়া জুড়ে দেখা যাচ্ছে দেশে দেশে প্রতিবাদী জনগণ মাথা তুলছেন। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা প্যালেস্টাইনের সমর্থনে যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের মার খাচ্ছেন। ইউরোপেও বিক্ষোভ ফেটে পড়ছে বারবার। ভারতে ২০১২-তে নির্ভয়া কাণ্ডের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবরা ডিসেম্বরের প্রবল ঠাণ্ডাতেও পুলিশের জলকামানের সামনে অটল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ২০২০-২১ জুড়ে হাজার হাজার কৃষক দিল্লির সীমান্তে অবরোধ করে অসীম দৃঢ়তায় লড়াই জারি রেখেছেন। ৭০০ শহিদের জীবনের বিনিময়ে তাঁরা সরকারকে মাথা নত করিয়েছেন। শোষণ অত্যাচারই শেষ কথা নয়। শোষণের অবসানের জন্য মানুষ লড়বেই। তারা পথ খুঁজবেই। একটা আন্দোলন মার খেতে পারে, কিন্তু শহিদের রক্তধারা যে পথ দেখিয়ে যায় তা ব্যর্থ হয় না। এই ধারাই মনুষকে শেষ পর্যন্ত সত্য পথ চেনায়। এই লড়াইয়ের পথ ধরেই একদিন শক্তি অর্জন করবে বিপ্লবী শক্তি, বিপ্লবী দল।
বাংলাদেশের আন্দোলন স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেল, মহান মার্ক্সবাদী চিন্তানায়ক কমরেড শিবদাস ঘোষের শিক্ষাকে–‘সমাজে শ্রমিক-চাষি-শোষিত মানুষের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বিপ্লব বারবার গমকে গমকে আসতে চাইবে, গমকে গমকে ফেটে পড়তে চাইবে, সমাজ অভ্যন্তরের দ্বন্দ্ব ফুলে উঠে বারবার বলতে চাইবে– এ অবস্থার আমূল পরিবর্তন চাই, মানুষের মগজের কাছে, মানুষের কাছে আবেদন করতে চাইবে– বিপ্লব আমি চাই। কিন্তু, বিপ্লব ততদিন হবে না, বারবার সে ফিরে যাবে, বিপথগামী হয়ে ফিরে যাবে, বারবার তার দ্বারা প্রতিক্রিয়া লভবান হবে– বিপ্লব হবে না, যতদিন না বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার উপযুক্ত শক্তি নিয়ে বিপ্লবী পার্টির আবির্ভাব হবে।’ বীর ছাত্রদের রক্তস্রোত তাদের সঠিক রাস্তায় পৌঁছতে সাহায্য করবে– এই আশা নিয়ে ভারতের মেহনতি মানুষের পক্ষ থেকে আবার তাঁদের অভিনন্দন জানাই।