রামপুরহাট শহরে এস ডি ও অফিসের সামনে লাঠিধারীদের বাধার মুখে পড়েছে এস ইউ সি–র মিছিল, সে ছবিই তুলছিলাম সোমবার দুপুরে৷
লাঠির ডগায় জড়ানো শাসক দলের পতাকা৷ সব মিলিয়ে শ’দেড়েক৷ ওদেরই এক জন শাসানির সুরে বলল, ‘ছবি তুলবি না একদম’৷ কান দিইনি৷
এস ইউ সি–র এক মহিলা নেত্রীকে ঘিরে ধরেছিল কয়েক জন৷ ক্যামেরা হাতে সে দিকে এগোতেই এক জন বলল, ‘আমাদের ছবি তুলছে, মার ওকে’৷ পর ক্ষণেই মাথার পিছন দিকে ভারী কিছু দিয়ে কেউ জোরে বাড়ি মারল৷ যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠতেই ফের ঘা পড়ল প্রায় একই জায়গায়৷ মাথায় হাত দিতে, ভিজল রক্তে৷
অন্য হাতে ছিল ক্যামেরা৷ কাঁধের ব্যাগে আরও একটা ক্যামেরা৷ তত ক্ষণে ঘিরে ধরেছে, পনেরো–ষোলো জন৷ লোহার পাইপ, লাঠি, উইকেট হাতে৷ শুরু হল এলোপাথাড়ি মার৷ কাঁধ, পিঠ, কোমরে৷
ক্যামেরার ব্যাগটা কে যেন টেনে নিল৷ মারমুখী ভিড়ের মধ্যে থেকে আমাকে কোনও ভাবে বার করলেন এস ইউ সি–র এক জন৷ আমার সঙ্গে থাকা সংবাদকর্মী অক্ষয় ধীবরও তখন রক্তাক্ত৷ কিন্তু থামেনি কিল–চড়–ঘুসি–লাথি৷ প্রাণ বাঁচাতে ছুটলাম একটা গলির দিকে৷ পিছনে তাড়া করল লাঠি–বাহিনী৷ কোনও ভাবে পৌঁছলাম রামপুরহাট থানার সামনে৷ সেখানে পৌঁছতে রক্ষে৷
সোমবার সকাল থেকেই এস ডি ও অফিসের সামনে ছিল পুলিশ পাহারা৷ কিন্তু পুলিশ ব্যারিকেডের বাইরে দাপাচ্ছিল লাঠি–বাহিনী৷ দুপুরে ওই অফিসের দিকে এস ইউ সি–র মিছিল এগোতেই তেড়ে এল তারা৷
বিকেলে আমাকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে৷ ডাক্তার বলেছেন, এক দিন থাকতে হবে সেখানে৷ বিছানায় শুয়ে একটাই আওয়াজ ভাসছে কানে, ‘মার ওকে’৷
সব্যসাচী ইসলামের প্রতিবেদন, আনন্দবাজার পত্রিকা–২৪.০৪.১৮
শিরোনাম আমাদের
(৭০ বর্ষ ৩৬ সংখ্যা ২৭ এপ্রিল, ২০১৮)