প্রিয় কমরেড,
সংবাদপত্র থেকে জানলাম যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কোনও স্তরে আপনার দলের কেউ যদি কোথাও তৃণমূল ও বিজেপি–র সাথে আঁতাত/সমঝোতা করে, তবে তাদের আপনারা দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ অনেক দেরিতে হলেও আপনারা যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটা ভাল৷ কিন্তু এই প্রসঙ্গে কিছু ঘটনা সম্পর্কে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই৷
মনোনয়নপর্ব শেষ হওয়ার পর পরই পশ্চিমবঙ্গের নানা সংবাদপত্রে ‘বিজেপি–সিপিএম’, ‘তৃণমূল–সিপিএম’ প্রকাশ্য বোঝাপড়ার সংবাদ ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছে৷ যেমন ধরুন, দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ অঞ্চল৷ গত নির্বাচনে ওখানে জয়ী হয়ে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা এস ইউ সি আই (সি)–র হাতে৷ সমগ্র ’৯০ দশক জুড়ে ওখানে নারকীয় অত্যাচার চালিয়েছে আপনার দল, তাতেও এস ইউ সি আই (সি)–র সংগঠন ভাঙতে পারেনি৷
এবার এস ইউ সি আই (সি)–কে হারাবার জন্য আপনার দল শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে জোট বেঁধেছে এবং দেওয়ালে দুই দলের প্রার্থীর নাম ও প্রতীক দিয়ে প্রচারও চালাচ্ছে–যে ছবি বেশ কিছুদিন আগেই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে৷ একই ঘটনা নদিয়া জেলার পলশুণ্ডা ১ নং পঞ্চায়েতে ঘটেছে৷ এই পঞ্চায়েত দীর্ঘকাল ধরেই এস ইউ সি আই (সি)–র হাতে রয়েছে৷ এবার সেখানে আপনার দল এস ইউ সি আই (সি)–কে হারাবার জন্য কোথাও তৃণমূল, কোথাও বিজেপি–র সাথে প্রকাশ্যে জোট করেছে৷ নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার পানিঘাটা পঞ্চায়েতেও এ জিনিস হয়েছে৷
পশ্চিমবঙ্গে গ্রামে–গঞ্জে জনগণের মুখে মুখে ঘুরছে যে, সিপিএমের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, যেখানে সিপিএম–এর প্রার্থী নেই সেখানে বিজেপি–কে ভোট দাও৷ আপনার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নারায়ণগড়ও এর ব্যতিক্রম নয়৷ এ জিনিস কী করে ঘটতে পারল?
আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্যই এই চিঠি দিলাম৷ আশা করি কথাগুলি বিবেচনা করবেন৷
সৌমেন বসু, সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি, এসইউসিআই(সি)
(৭০ বর্ষ ৩৯ সংখ্যা ১৮ মে, ২০১৮)