১৯ সেপ্টেম্বর জামসেদপুরে এআইডিএসও–র মিছিলে বর্বর হামলা চালাল বিজেপি–আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি৷ তাদের আক্রমণে একাধিক ছাত্রী সহ বহু ছাত্র গুরুতর আহত হন৷
সম্প্রতি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদের দ্বারা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবিভিপি৷ সেই পরাজয়ের প্রতিক্রিয়ায় আরএসএস–এর ফ্যাসিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী এবিভিপি সেখানকার নির্বাচিত বামপন্থী মনোভাবাপন্ন প্রতিনিধিদের উপর মারাত্মক আক্রমণ চালায়৷ সারা দেশেই ছাত্র এবং শিক্ষক–শিক্ষানুরাগী মানুষ তার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন৷ ১৯ সেপ্ঢেম্বর এই জঘন্য আক্রমণের প্রতিবাদে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিল ডিএসও৷ এবিভিপি ফেসবুক মারফত কয়েক দিন ধরে হুমকি দিতে থাকে যে, এই মিছিল বার করলেই হামলা করা হবে৷ সেই হুমকি উপেক্ষা করে ডিএসও এদিন মিছিল করে৷ এবিভিপির ভাড়াটে গুণ্ডারা লাঠি, রড, নানা অস্ত্র নিয়ে মিছিলে ঝাঁপিয়ে পড়লে সংগঠনের রাজ্য কোষাধ্যক্ষ সোহান মাহাতো, সুনীল, সোনি সেনগুপ্ত, সবিতা সোরেন, ঝর্না মাহাতো সহ অসংখ্য কর্মী আহত হন৷ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়৷
ডিএসও কর্মীরা এই আক্রমণ মোকাবিলা করে যেভাবে সাহসের সাথে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন তা এলাকার সাধারণ মানুষ এমনকী স্থানীয় সাংবাদিকদেরও শ্রদ্ধা অর্জন করেছে৷ বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, লেখকরাও প্রতিবাদে সোচ্চার হন৷ বাম গণতান্ত্রিক দলগুলির নেতারা তীব্র নিন্দা করেন এবং রাজনৈতিক দলগুলির রাজ্য স্তরের নেতারা আহত কমরেডদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান৷ বিজেপি সরকারি প্রভাব খাটিয়ে ডিএসও–র বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে চাপ দিতে থাকে৷
২০ সেপ্টেম্বর এই আক্রমণের প্রতিবাদে ধিক্কার জানিয়ে ডিএসও–র আহ্বানে বিশাল মিছিল বেরোলে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার পাশে দাঁড়ান৷ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনও মিছিলে যোগ দেয়৷ ডিএসও–র পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে এবিভিপি–র বর্বর ফ্যাসিস্ট চরিত্রকে প্রমাণ সহ তুলে ধরা হলে এবিভিপি–র মিথ্যা প্রচারের ফানুস ফেটে যায়৷ শেষ পর্যন্ত জনমতের চাপে পুলিশ ডিএসও–র অভিযোগ গ্রহণ করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হয়েছে৷ এই ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের সাধারণ মানুষের কাছে বিজেপির চরিত্র অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে৷
(৭১ বর্ষ ১০ সংখ্যা ৫ -১১ অক্টোবর, ২০১৮)