এস ইউ সি আই (সি)–র সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১১ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন, বিজেপির একচেটিয়া পুঁজি তোষণকারী জনবিরোধী পদক্ষেপ এবং দেশের প্রধান প্রধান শিল্পের বেসরকারিকরণের নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি সিঙ্গল–ব্র্যান্ড খুচরো ব্যবসায়ে একশো শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগে(এফ ডি আই)ছাড়পত্র দিয়েছে৷এর ফলে এ দেশে আবাসন শিল্প ও স্বাস্থ্য ব্যবসায়েও একশো শতাংশ বিদেশি পুঁজি ঢুকবে৷ এবং মাল্টি–ব্র্যান্ড খুচরো ব্যবসায়েও যে অতি শীঘ্রই এফ ডি আই–এর আগ্রাসন ঘটবে, এ কথা আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷ খুচরো ব্যবসায়ে একশো শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বিপর্যয়কর ফল হবে– দেশীয় ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি উঠে যাবে, যেগুলিতে বিপুল সংখ্যক গরিব মানুষের কর্মসংস্থান হয়৷ তা ছাড়া, একবার যদি খুচরো এবং পাইকারি দুই ব্যবসাই একচেটিয়া পুঁজিপতিদের দখলে চলে যায়, তা হলে তাদের মূল্য নির্ধারণ নীতির ফলে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়বে৷
ভারতীয় একচেটিয়া পুঁজিপতিরা আজ ধনকুবেরে পরিণত হয়েছে এবং বিদেশে পুঁজি রপ্তানির মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র অর্জন করেছে৷ তারা মন্দায় আক্রান্ত বিশ্ব বাজারে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে৷ সেই জন্য তারা নিজ দেশের বাজার অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে, বিশেষ করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সামনে খুলে দিচ্ছে, যাতে বিনিময়ে তারাও বিদেশের বাজারে কিছু সুবিধা পেতে পারে৷ পুঁজিপতি শ্রেণির সেবাদাস বিজেপি সরকার এই বাধ্যবাধকতা থেকেই দেশের অর্থনীতি, এমনকী প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র পর্যন্ত সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে৷
এও দেখা যাচ্ছে যে, যখন প্রয়োজন পার্লামেন্টের ভিতরে এবং বাইরে এফ ডি আই–এ বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলা, তখন বিরোধীরা, বিশেষ করে যারা নিজেদের মার্কসবাদী বা বামপন্থী বলেন, তাঁরা মামুলি কিছু বিবৃতি দেওয়া ছাড়া সে বিষয়ে কার্যকরী কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না৷ এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায়, ইতিপূর্বে কংগ্রেস শাসনেই এফ ডি আই চালু হয়েছিল এবং সিপিএম–ও পশ্চিমবঙ্গে তার শাসনকালে শিল্পায়ন, উন্নয়ন প্রভৃতির নামে এই নীতি অনুসরণ করেছিল৷
আমরা দেশবাসীর কাছে এই আহ্বান জানাচ্ছি যে, বুর্জোয়া সরকারের এই সর্বনাশা নীতি প্রতিরোধে সঠিক নেতৃত্বে সচেতন সঙঘবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার কাজে এগিয়ে আসুন এবং খেটে–খাওয়া মানুষের জীবন ও জীবিকাকে রক্ষা করুন৷