শহিদ বিরসা মুণ্ডার নেতৃত্বে সংগঠিত সামন্ততন্ত্র ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আদিবাসী কৃষক বিদ্রোহ ‘উলগুলানে’র ১১৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ–উদ্দীপনার সাথে পালিত হয় ৫ জানুয়ারি, কলকাতার ওয়াই চ্যনেলে৷ এই সংগ্রামের সৈনিকদের শৌর্য, বীর্য, তেজ, সাহসিকতা ও বীরত্ব বর্তমানে শোষণমুক্তির সংগ্রামের সৈনিকদের প্রেরণার উৎস৷
কলকাতা মহানগরীর বুকে এই কর্মসূচি রূপায়িত করার মধ্য দিয়ে ফেডারেশন অফ আদিবাসী অর্গানাইজেশনস সর্বসমক্ষে এই শিক্ষাই তুলে ধরতে চেয়েছেন৷ সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সাঁওতালী সাহিত্যিক ও সমিতির সভাপতি সারদাপ্রসাদ কিস্কু৷ উপস্থিত ছিলেন ট্রাইবাল রিসার্চ ইনস্টিউট রাঁচী–র প্রাক্তন ডিরেক্টর সোমা সিং মুণ্ডা, অধ্যাপিকা মীরাতুন নাহার, সুলেমান মারান্ডি, গোটা ভারত সিদো–কানহু হুল বৈসী–র সাধারণ সম্পাদক বীরবল সিং, সম্পাদক, ওড়িশা মুণ্ডারী সাঁওয়ার জামদা ও অধ্যাপক সুভাষচন্দ্র মুণ্ডা, বুন্ডু কলেজ, রাঁচী, ঝাড়খণ্ড৷ স্বাগত ভাষণ দেন সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল পরিমল হাঁসদা৷
এই সভা থেকে সমিতির অন্যতম সহ–সভাপতি নেপাল সিং–এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে ৩৬ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেন৷ এই দাবিগুলির অন্যতম কয়েকটি হল– আদিবাসীদের জমির পড়চা সহ সকল প্রকার সরকারি নথিতে জাতি (সাব–কাস্ট)উল্লেখ করতে হবে এবং বেআইনি বিক্রি বন্ধ করতে হবে৷ হরিণঘাটা থানার মাহাত পদবিধারী বেদিয়া ও বৈগ্যাদের অবিলম্বে আদিবাসী জাতি প্রমাণপত্র প্রদান পুনরায় চালু করতে হবে, এস সি/এস টি আইডেন্টিফিকেশন আইন ১৯৯৪ প্রত্যাহার করতে হবে, সকল গরিব আদিবাসীদের জব কার্ড ও বি পি এল কার্ড দিতে হবে৷ ঝাড়গ্রাম ও শুশুনিয়া (পুরুলিয়া) একলব্য বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের উপর যৌন নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, ঝাড়গ্রাম একলব্য বিদ্যালয়ের পরিচালনার দায়িত্ব পুনরায় সরকারকে নিতে হবে এবং আর কোনও একলব্য বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কোনও মিশন বা এন জি ও–র হাতে তুলে দেওয়া চলবে না, রাজ্যের সমস্ত সাঁওতালী মাধ্যম বিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামো সরকারকেই গড়ে তুলতে হবে, সব বিষয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাঁওতালী জানা শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, শিক্ষায় ব্যয়বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যের খরচবৃদ্ধি প্রভৃতি রোধ করতে হবে৷