উত্তরাখণ্ডের হেমবতী নন্দন বহুগুণা গাড়োয়াল কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য জয় পেল ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও। যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন কমরেড রঞ্জনা। তিনি ৩২০৭টি ভোট পেয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে ২০৫০ ভোটে হারিয়েছেন। কমরেড মনিকা চৌহান গার্লস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
ছাত্রদের দাবি নিয়ে আন্দোলনে এআইডিএসও-র ভূমিকা অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে তার পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দিয়েছে। অন্যেরা যখন ক্যাম্পাসের পরিবেশ, শিক্ষার সমস্যা, ছাত্রদের দাবি নিয়ে সরব হওয়ার বদলে টাকার জোরে, গায়ের জোরে কিছু সিট দখল করতে ব্যস্ত থেকেছে, এআইডিএসও সেখানে নিয়মিত ক্লাস, ক্যাম্পাসে ছাত্রদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা, হস্টেলে সুলভে ভাল মানের খাবার দেওয়া, বন্ধ ক্যান্টিন চালু করার মতো একগুচ্ছ দাবি নিয়ে লড়েছে। সমস্ত স্তরে ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র বিরুদ্ধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে। এআইডিএসও-র এই ভূমিকা, সংগঠনের বক্তব্য এবং নির্বাচন পর্বে তাদের প্রচার কর্মসূচি শুধু ছাত্রদের মধ্যেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শহরের বুদ্ধিজীবীদের মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে।
এআইডিএসও-র এই জয়কে অভিনন্দন জানিয়ে ২০ নভেম্বর গাড়োয়ালের নাগরিকরা একটি সভার আয়োজন করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন এআইডিএসও-র গাড়োয়াল জেলা সভাপতি কুলদীপ বাঘেলা। ছাত্র আন্দোলনে এবং জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এআইডিএসও-র ভূমিকার প্রশংসা করে সভায় বক্তব্য রাখেন গণআন্দোলনের নেতা অনিল স্বামী, বিএসএনএল কর্মী ইউনিয়নের সহসভাপতি পি বি ডোভাল, সমাজকর্মী পি বাবুল কার্জি। এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের উত্তরাখণ্ড রাজ্য কনভেনর কমরেড মুকেশ সেমওয়াল এই জয় প্রসঙ্গে বলেন– সর্বনাশা জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে এবং শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের বিশ্বস্ত শক্তি হিসাবে মানুষ একমাত্র এআইডিএসও-কেই দেখতে পাচ্ছেন। তাই এই জয়, ছাত্র-শিক্ষক এবং সমস্ত শিক্ষানুরাগী মানুষের মধ্যে আন্দোলনের প্রতি আস্থা ও আশা জাগিয়ে তুলেছে। জয়ী এআইডিএসও প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদকে লড়াইয়ের হাতিয়ারে পরিণত করে ছাত্র সমাজের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার শপথ নেন।