‘বন সংরক্ষণ রুলস, ২০২২‘ বাতিল এবং ‘অরণ্যের অধিকার আইন, ২০০৬‘ কার্যকর করা সহ দরিদ্র মানুষের জীবন-জীবিকার নানা দাবিতে গোটা দেশ থেকে আসা কয়েক হাজার আদিবাসী, চিরাচরিত বনবাসী ও অন্যান্য অংশের খেটে-খাওয়া দরিদ্র মানুষ সমবেত হয়েছিলেন পুরুলিয়ায়। সেখানে এমএসএ ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ৩-৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হল অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটির প্রথম সর্বভারতীয় সম্মেলন।
একচেটিয়া পুঁজির স্বার্থবাহী কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের অরণ্যসম্পদ একচেটিয়া পুঁজিমালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে জঙ্গল লাগোয়া জমি, বসতি থেকে বনবাসী দরিদ্র খেটে-খাওয়া মানুষকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ‘অরণ্যের অধিকার আইন, ২০০৬‘ থাকা সত্ত্বেও ‘বন সংরক্ষণ রুলস, ২০২২‘ তৈরি করেছে যা চালু হলে নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংস হবে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত এবং বংশ পরম্পরায় অরণ্যের জমি ও অন্য জমিতে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন-জীবিকা থেকে উচ্ছেদ হয়ে ভূমিহীন মজুরে পরিণত হবে। এর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটি। আন্দোলনের চাপে রাজ্য স্তরে আদায় হয়েছে বেশ কিছু দাবি।
৩ ফেব্রুয়ারি স্লোগান মুখরিত একটি মিছিল জুবিলি ময়দান থেকে শুরু হয়ে এমএসএ ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পৌঁছয়। সেখানে সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত লেখক সারদাপ্রসাদ কিস্কু। প্রকাশ্য সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষক অনাদি প্রসাদ মাজি। উপস্থিত ছিলেন সিদো-কানহু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুবল চন্দ্র দে, প্রখ্যাত লোকগায়ক পদ্মশ্রী মধু মনসুরি, ডাইন-বিরোধী আন্দোলনের নেতা, সাহিত্যিক গোমস্তাপ্রসাদ সরেন, সংগঠনের উপদেষ্টা স্বপন ঘোষ প্রমুখ।
বক্তারা উপস্থিত হাজার হাজার মানুষকে সরকারি ষড়যন্তে্রর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। গ্রামস্তর থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত গণকমিটি গঠন করে বনবাসী খেটে-খাওয়া মানুষের স্বার্থে আন্দোলন জোরদার করার কথা বলেন। প্রতিনিধি অধিবেশন হয় ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি। সেখানে প্রস্তাবগুলির উপর দীর্ঘ আলোচনার পর ৪২ সদস্যের সর্বভারতীয় কমিটি গঠিত হয়। সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হন যথাক্রমে শম্ভুনাথ নায়েক এবং বিসম্বর মুড়া।