এস ইউ সি আই (সি)–র সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২২ জুলাই এক বিবৃতিতে বলেন, ইজরায়েলকে ‘ইহুদি রাষ্ট্র’ ঘোষণা করে ১৯ জুলাই সে দেশের সংসদে একটি বিল পাশ হয়েছে৷ এই পদক্ষেপকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) তার তীব্র নিন্দা করেছে৷ এই বিলে ইজরায়েলকে ইহুদিদের মাতৃভূমি, জেরুজালেমকে দেশের রাজধানী, হিব্রু ভাষাকে সরকারি ভাষা এবং জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার কেবলমাত্র ইহুদিদের থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷
ইজরায়েল নানা ধর্ম, ভাষা ও জাতির মানুষের বাসভূমি৷ এই অবস্থায় আইন ও প্রশাসনিক আদেশ বলে এ দেশকে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা, অন্যদের কাছ থেকে সাংবিধানিক সমতার অধিকার কেড়ে নেবে৷ এই ঘোষণা অ–ইহুদি জনগণের ক্ষতি করে ইহুদিদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করবে৷
ইজরায়েলের ৯০ লক্ষ বাসিন্দার ২০ শতাংশ আরব৷ ইজরায়েলি সংসদের আরব সাংসদরা এবং ১৯৪৮ সালে যে প্যালেস্টিনীয়দের কাছ থেকে তাদের বাসভূমি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাঁরা এই বিলকে ‘জাতিবাদী’ এবং বৈষম্যবাদকে আইনসিদ্ধ করার ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছেন৷ উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ইহুদি নাগরিকদের একটি বড় অংশও এই হীন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধতা করছেন৷ সেই কারণেই এই বিল ১২০ টির মধ্যে মাত্র ৬২ টি ভোট পেয়ে কোনওক্রমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে৷ এই বিল পাশ হওয়ায় ইজরায়েলে সংখ্যালঘু মানুষের অধিকার রক্ষিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে এমনকী ইউরোপীয় ইউনিয়নও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷
বিশ্ববাসী জানেন, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করেছিলেন, রাষ্ট্রসংঘে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু রাষ্ট্রসংঘের মত উপেক্ষা করে মার্কিন সরকার তেল আভিভ থেকে তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরিত করেছিল৷ আমেরিকার মদতেই ইজরায়েলের স্বৈরাচারী সরকার এই বিল পাশ করাবার স্পর্ধা দেখাতে পারল৷
ভারত সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, এই বিল প্রত্যাহার করতে ইজরায়েলের উপর তারা যেন চাপ সৃষ্টি করে৷ একই সাথে, ইজরায়েল সরকারের এই ফ্যাসিবাদী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক চেতনাসম্পন্ন মানুষের কাছে আমরা আবেদন জানাচ্ছি৷
(৭১ বর্ষ ২ সংখ্যা ১০ আগস্ট, ২০১৮)