২ ডিসেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর এবং নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তর থেকে সার্কুলার দিয়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ভেরিফিকেশনের কাজে রাজ্যের সমস্ত আশা এবং আইসিডিএস কর্মীদের ৩ ডিসেম্বর থেকেই নেমে পড়তে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে এক দফা রিপোর্ট পেশ করতে হবে৷ এই ফরমানের তীব্র বিরোধিতা করেছে পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়ন৷ ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক ইসমত আরা খাতুন বলেন, রাজ্য সরকার হাজার হাজার শূন্য পদে নিয়োগ না করে যখনই স্বল্প সময়ের বিভিন্ন ধরনের কাজ আসে তখনই দপ্তর বহির্ভূত এই কাজ আশা, আইসিডিএস সহ স্কিম ওয়ার্কারদের উপর অন্যায় ভাবে চাপিয়ে দেয়৷ এই ধরনের কর্মীদের উপরে কাজের চাপ এমনিতেই খুব বেশি৷ তার উপর একের পর এক কাজের বোঝা সরকার চাপিয়েই চলেছে, যার বিষময় পরিণতিতে ওই কর্মীদের অনেকে মানসিক রোগীতে পরিণত হচ্ছেন৷ এই অবস্থায় নতুনভাবে আবাস যোজনার চাপ ওই কর্মীদের আরও শ্বাসরোধকারী পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেবে৷ এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না৷
তিনি বলেন, আশাকর্মীরা এলাকার মানুষের পরিষেবা দেয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে থেকে৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর সংক্রান্ত ভেরিফিকেশনের কাজ কর্মীদের নতুন বিপদের মধ্যে ফেলবে৷ কারণ এ নিয়ে শুরু হয়ে গেছে নানা দুর্নীতি৷ কাদের নামে ঘর আছে সে সমস্ত তালিকা আগে থেকে তৈরি হয়েই আছে৷ এই প্রকল্পের ঘর, বরাদ্দ টাকা এই সমস্ত প্রশ্নে আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময় দেখেছি অনেক বেনিয়ম ও দুর্নীতি আছে৷ ফলে সঠিক ভাবে কাজ করতে গেলে শাসক দল সহ এলাকার মানুষের সাথে আশাকর্মীদের বৈরিতার সম্পর্ক গড়ে উঠবে৷
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় এই কাজ করতে গিয়ে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে৷ বহু জায়গায় আশাকর্মী এবং অঙ্গনওয়াডি কর্মীদের এলাকায় হেনস্থা করা হয়েছে৷ জেলা এবং ব্লক আধিকারিকরা ড্রেনিং দিয়ে জোর জবরদস্তি সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ অন্য দিকে লোকাল প্রশাসন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করছে এবং কে ঘর পাবে কে পাবে না এরকম নানা লিস্ট আশা কর্মীদের ধরিয়ে দিচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে ৫ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য ভবনে সরাসরি মিশন ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দশ জনের প্রতিনিধি দল ডেপুটেশন দেয়৷ তাঁর কাছে সমস্ত সমস্যা তুলে ধরা হয়৷ এই বিষয় নিয়ে তিনি নিজেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কথা দিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেবেন৷