রাজ্যের ৫৪ হাজার আশাকর্মী মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছেন বঞ্চনা কাকে বলে। দীর্ঘ করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে এই রাজ্যের সমস্ত আশাকর্মী জীবন বাজি রেখে কোভিড মোকাবিলা, পোলিও প্রতিরোধ, কোভিড ভ্যাকসিন, দুয়ারে সরকার সহ শিশু ও মাতৃ মৃত্যুরোধে ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরকারের দেওয়া দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। কিন্তু সরকার তাদের কর্মী হিসাবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেয় না, দেয় না শ্রমের মূল্য। রুটিন মাফিক কাজের বাইরে জোরপূর্বক বাড়তি কাজের বোঝা একটা শেষ হতে না হতেই আর একটা অমানবিকভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে গেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তার মোকাবিলা করতে আশাকর্মীদের আবার কাজে নামানো হচ্ছে। কিন্তু সরকার এখনও আশাকর্মীদের ৭-৮ মাসের বকেয়া ইনসেনটিভ পুরোটা দেয়নি। ২০০ টাকা, ৫০০ টাকা করে অ্যাকাউন্টে দিচ্ছে। কখন কোন মাসের কীসের টাকা অ্যাকউন্টে দিচ্ছে বোঝার উপয় নেই।
এরপরে আবার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আশাকর্মীদের ইনসেনটিভের টাকা ৮টি কিস্তিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। কেন? কোন সরকারি কর্মীর বেতন ৮ কিস্তিতে দেওয়া হয়? মন্ত্রী-বিধায়কদের ভাতা কি ৮ ভাগে দেওয়া হয়? এ কি টাকা আত্মসাতের ছল নয়? ক্ষোভে ফুঁসছে আশাকর্মীরা। কর্মী ইউনিয়নের নেত্রী ইসমত আরা খাতুন বলেন, কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেও কাজের পারিশ্রমিক থেকে আজও তারা বঞ্চিত। কোভিড আক্রান্ত আশাকর্মীরা আবেদন করা সত্ত্বেও বিমার ১ লক্ষ টাকা এখনও সরকার দেয়নি। বিভিন্ন মহল থেকে আশাদের কাজের প্রশংসা হলেও তারা কিছু সমস্যা ও দাবি জানাতে গেলে সরকার তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। সরকার আশাকর্মীদের সাথে দাস শ্রমিকের মতো আচরণ করছে।
৭ জানুয়ারি হাওড়া সিএমওএইচ-এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যভবনে মিশন ডিরেক্টরের কাছে তারা স্মারকলিপি পাঠিয়েছে। তাদের দাবি, আশাকর্মীদের মাসিক উৎসাহ ভাতা ৮টি হেডে বিভক্ত করা চলবে না, বিভিন্ন জেলায় ৬-৭ মাসের বকেয়া ইনসেনটিভ অবিলম্বে দিতে হবে, কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে একটার পর একটা কাজ চাপানো চলবে না, অবিলম্বে ফিক্সড অনারারিয়াম বৃদ্ধি করতে হবে, ফরম্যাটের প্রতি আইটেমে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং সমস্ত টাকা নিঃশর্তে দিতে হবে, ফরম্যাট প্রক্রিয়া বাতিল করে ফি’ড বেতন চালু করতে হবে।