আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ কেন করানো হচ্ছে, রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিবের কাছে এর জবাব চাইল এ আই ইউ টি ইউ সি। ১২ ডিসেম্বর নবান্নে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যসচিবকে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় শিশু ও নারী কল্যাণ দপ্তরের ২০০৮-এর ২৪ অক্টোবরের সার্কুলার অনুযায়ী, কর্মীদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোনও কাজ এঁদের দিয়ে করানো যায় না। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস প্রশ্ন করেন, এই সার্কুলার থাকা সত্ত্বেও কেন ‘আবাস যোজনা প্লাস’-এর সার্ভের কাজে এই কর্মীদের নিযুক্ত করা হচ্ছে?
প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সহসভাপতি নন্দ পাত্র, আশাকর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক ইসমত আরা খাতুন এবং রাজ্য অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক মাধবী পণ্ডিত। তাঁরা জানান, ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশনের গাইড লাইনেও এই ধরনের কাজের কোনও উল্লেখ নেই।
আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার যে তালিকা তৈরি হয়েছে, তা সার্ভে করে কে যোগ্য কে নয় তা নির্ধারণ করতে বলা হচ্ছে আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। কর্মীদের বক্তব্য, এই কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক চাপ ও নানা লাঞ্ছনার শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। তাঁরা জানান পাকা দোতলা-চারতলা বাড়ি আছে এমন লোকের নামও আবাস যোজনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আবার খড়ের ঘরে বা ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে মাথা গুঁজে থাকেন, এমন অনেকের নাম বাদ গেছে। বোঝাই যায় আবাস যোজনায় আর এক দুর্নীতির ইমারত তৈরি হয়ে আছে। এমনিতেই রাজ্যে নিয়োগ কেলেঙ্কারির মারাত্মক রূপ দেখে রাজ্যবাসীর ক্ষোভ প্রবল আকার নিয়েছে। নতুন কেলেঙ্কারি ঢাকা দিতেই কি আবাস যোজনার যোগ্যতা নির্ধারণের দায় আশা-অঙ্গনওয়াড়িদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে?
এই কর্মীরা যে তালিকা নিয়ে ঘুরবেন, তা তৈরি করেছেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানরা। তাঁরা কি এলাকার মানুষকে চেনেন না, নাকি কে এই যোজনায় ঘর পাওয়ার যোগ্য, কে নয় তার খোঁজ রাখেন না? তাঁরা যে সব অযোগ্যদের নাম তালিকায় যোগ করে রেখেছেন, তাদের বাদ দিতে গিয়ে আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে পড়লে তাঁদের নিরাপত্তা কে দেবে? ফলে রাজ্য জুড়ে দাবি উঠছে এ কাজ থেকে আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।
রাজ্যের তৃণমূল সরকার বলছে, সার্ভে করতে গিয়ে এই কর্মীদের কেউ হেনস্থা করলে সরকার বরদাস্ত করবে না। কিন্তু কর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, ইতিপূর্বে রেশন কার্ড সার্ভে, শৌচাগার সার্ভে করতে গিয়ে এই কর্মীরা যখন হেনস্থার মুখে পড়েছেন, রাজ্য সরকার ক’জন হেনস্থাকারীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানাক।