আবার অনাহারের কালো ছায়া পুঁজিবাদী রাশিয়া, ইউক্রেনে

রাশিয়ায় প্রতি পাঁচ জন মানুষের মধ্যে দু’জনের গত ছ’মাস ধরে ভরপেট খাবার জুটছে না। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই ভয়ানক তথ্য। লেভাডা সেন্টার নামক সংস্থার এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, ভয়াবহ দামবৃদ্ধির কারণে দেশের ৩৯ শতাংশ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছেন না। ৫২ শতাংশ মানুষ খাবারটুকু জোগাড় করতে পারলেও জামাকাপড় কিংবা জুতোর মতো দরকারি জিনিসগুলি কেনা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন।

বিপ্লবপূর্ব রাশিয়ায় মানুষের নিত্যসাথী ছিল গরিবি আর অনাহার। ১৯১৭ সালে নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা। মহান লেনিন ও স্ট্যালিনের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েট ইউনিয়নে দেশের সমস্ত মানুষকে জীবনধারণের মূল তিনটি প্রয়োজন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান জোগানোর দায়িত্ব নিয়েছিল রাষ্ট্র। অসুস্থ হলে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেত মানুষ। শিক্ষা ছিল সর্বজনীন। দূর হয়েছিল বেকার সমস্যা। দেশ থেকে মুছে গিয়েছিল গণিকাবৃত্তি, ভিক্ষাবৃত্তি।

ত্রিশ বছর পার হয়ে গেল, সমাজতন্ত্র ভেঙে দিয়ে আবার ফিরে এসেছে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা। দেশের মানুষের চেতনার নিম্নমানের সুযোগ নিয়ে সোভিয়েট ইউনিয়নের তৎকালীন প্রধান মিখাইল গর্বাচেভের নেতৃত্বে জয়লাভ করেছে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। অল্প কয়েকটি ধনকুবের গোষ্ঠী কুক্ষিগত করেছে প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলি। ফিরে এসেছে মানুষের ওপর মানুষের শোষণের মধ্য দিয়ে মুনাফা তৈরির ব্যবস্থা। সমীক্ষা দেখাচ্ছে, তারই সাথে রাশিয়া সহ সোভিয়েট ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে ফিরে এসেছে অনাহার-গরিবির সেই পুরনো কালো ছায়া।

সোভিয়েট ইউনিয়নভুক্ত আরেকটি দেশ ইউক্রেনেরও আজ একই অবস্থা। রাষ্ট্রসংঘের সংস্থা ইউনিসেফের একটি সমীক্ষা দেখিয়েছে, ইউরোপের সমস্ত দেশগুলির মধ্যে আজ পুঁজিবাদী ইউক্রেনেই সবচেয়ে বেশি খেতে-না-পাওয়া মানুষ বাস করেন। পয়সা জোটাতে না পেরে সেখানকার ১১ লক্ষ বাসিন্দা হয় না-খেয়ে, নয়ত কম খেয়ে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ৯ সংখ্যা