ছাত্র নেতা আনিস খানের খুনের প্রতিবাদে ছাত্রদের মিছিলের উপর পুলিশের বর্বর লাঠিচার্জের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ও খুনের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ২২ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন,
‘আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আনিস খানের মর্মান্তিক হত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের মিছিলে কলেজ স্ট্রিটে রাজ্য সরকারের পুলিশ যেভাবে ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে এবং বেশ কয়েকজন প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি। ঘটনার ৪ দিন অতিক্রম হওয়ার পরও তদন্তে সরকার কোনও কার্যকরী ভূমিকা নেয়নি। আমরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সাথে তদন্তের গতি বাড়ানোর দাবি করছি।
মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডের পর আনিসের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে যেভাবে ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দলগুলোর দড়ি টানাটানি চলছে তা খুবই ন্যক্কারজনক। এই হত্যার পিছনে সরাসরি পুলিশ কিংবা পুলিশের পোশাকে দুষ্কৃতী যাদেরই ভূমিকা থাকুক তার দায় সরাসরি রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। তা না করে সরকার যেভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ অথবা চাকরির প্রসঙ্গ তুলে পরোক্ষে তদন্তের দায়ভার এড়াচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দাজনক।
আমরা মনে করি, নীতিহীন ক্ষমতালোভী রাজনীতির কারণেই আজ দুষ্কৃতীদের এই ধরনের বাড়বাড়ন্ত, যা কার্যত সাধারণ মানুষের সমস্ত ধরনের গণতান্ত্রিক অধিকারের উপরেই আক্রমণ। শক্তিশালী গণআন্দোলনের রাজনীতিই এই দুর্বৃত্তায়ন রুখে দিতে পারে।’
তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কমরেড ভট্টাচার্য ২৬ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গতকাল আনিসের হত্যাকারীদের সনাক্তকরণের জন্য তাঁর বাবার সামনে টি আই প্যারেড যেভাবে করানো হয়েছে তাতে সরকার আদৌ দোষীদের ধরতে চাইছে কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে। পুলিশ নিজেই যেহেতু এই হত্যাকাণ্ডে যুক্ত তাই কারা এই অপরাধে জড়িত তা পুলিশের না জানার কথা নয়। সেক্ষেত্রে জড়িত সকলকে টি আই প্যারেডে হাজির না করে যাঁরা ওপরওয়ালার নির্দেশে ঘটনায় যুক্ত থাকার কথা নিজেরা স্বীকার করেছেন, কেবল তাঁদের হাজির করানো হল কেন? এর মাধ্যমে তদন্তে অযথা দেরি হচ্ছে এবং খুনের তথ্য-প্রমাণাদি লোপ করতে সাহায্য করা হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের এই আচরণ একদিকে পুলিশের এবং অন্য দিকে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের অনাস্থাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা সরকারের এই হীন প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করছি এবং অবিলম্বে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোষীদের গ্রে্রপ্তার ও শাস্তির দাবি করছি।’
বাগনানে বিক্ষোভ মিছিলঃ আনিস খানের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার চেয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার বাগনানে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে দলের বাগনান লোকাল কমিটি। উপস্থিত ছিলেন দলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা সম্পাদিকা কমরেড মিনতি সরকার, এ আই ডি এস ও নেতা কমরেড সেখ মহঃ মাসুদ প্রমুখ।