‘অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা’ কমিটির আহ্বানে আদিবাসী, চিরাচরিত বনবাসী ও গরিব শোষিত মানুষের প্রথম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল কলকাতার ঐতিহাসিক ‘ভারত সভা’ হলে ৬ নভেম্বর৷ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিদের সমাগমে ভারত সভা হল কানায় কানায় পূর্ণ ছিল৷ উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়৷ সর্বপ্রথমে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন অধ্যাপিকা কবিতা হাঁসদা এবং তারপর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়৷ সম্মেলনে মূল প্রস্তাব উত্থাপন করেন পরিমল হাঁসদা, আন্দোলন সংক্রান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করেন পরেশ বেরা এবং সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন চিত্তরঞ্জন মাঝি৷ এই প্রস্তাবগুলির সমর্থনে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধিবৃন্দ৷ সম্মেলন থেকে উপরোক্ত তিনটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়৷
সম্মেলন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ‘অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা’ কমিটির সর্বভারতীয় উপদেষ্টা স্বপন ঘোষ, বিশিষ্ট নৃতত্ত্ববিদ ডঃ সুহৃদ কুমার ভৌমিক, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক বিসম্বর মুড়া ও দীপক কুমার, সমাজসেবী ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার এবং অধ্যাপক বুদ্ধদেব ওঁরাও৷ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পূর্ণচন্দ্র সরেন৷ মূল প্রস্তাবের উপর আলোচনায় বিভিন্ন বক্তা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের জনবিরোধী নীতি তথা আদিবাসী, চিরাচরিত বনবাসী ও গরিব মানুষের উপর নির্মম শোষণ ও চরম বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন এবং তীব্র প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান৷
সম্মেলনের দাবি–আদিবাসী ও চিরাচরিত বনবাসীদের স্বাভাবিক বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করা চলবে না, জঙ্গল এলাকার জমির পাট্টার আবেদনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া চলবে না, বহু পুরুষ ধরে বসবাসকারী ব্যক্তিদের সহজে বনবাসী হিসাবে সার্টিফিকেট দিতে হবে৷ সম্মেলন থেকে পরিমল হাঁসদাকে সভাপতি এবং পরেশ বেরা ও অধ্যাপিকা কবিতা হাঁসদাকে যুগ্ম সম্পাদক করে ৫১ জনের শক্তিশালী কমিটি গঠিত হয়৷ এই কমিটির নেতৃত্বে জেলায় জেলায় আন্দোলন এবং আগামী ৩–৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, পুরুলিয়া শহরে আহুত সর্বভারতীয় সম্মেলনের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়৷