মাত্র কয়েক মাস আগে বিশ্বের ধনীদের তালিকায় তিন নম্বরে পৌঁছে গৌতম আদানি চমকে দিয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে৷ প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন আদানিদের সম্পর্কে মার্কিন শেয়ার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ-এর একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই তালিকার একেবারে সাত নম্বরে গিয়ে ঠেকেছে আদানির নাম৷ সংস্থাটি তাদের গবেষণায় দেখিয়েছে, আদানিদের এই উত্থানের পিছনে কাজ করেছে বিপুল জালিয়াতি৷ তাদের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠী তাদের সংস্থাগুলির শেয়ারের প্রকৃত দাম গোপন করে কৃত্রিম ভাবে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বাজারে বিক্রি করেছে এবং তা দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে৷ তা ছাড়া মরিশাস, সাইপ্রাস, আরব আমিরশাহীর মতো করছাড়ের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশগুলিতে অসংখ্য ভুয়ো সংস্থা শেল কোম্পানি– খুলে শেয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক লেনদেন করে বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছে৷
বিপন্ন সাধারণ মানুষের সঞ্চয়
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ পাওয়ার দুদিনের মধ্যেই আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম হুড়মুড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে৷ ২৬-২৭ জানুয়ারি, দুদিনেই আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম পড়ায় ২০ শতাংশ নেমে গেছে৷ ফলে এই সংস্থায় লগ্নিকারীরা হারিয়েছেন ৪.১৮ লক্ষ কোটি টাকা৷ এর মধ্যে রয়েছে গোষ্ঠীর আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি এন্টারপ্রাইজেস, আদানি পাওয়ার, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশ্যাল ইকনমিক জোন, আদানি গ্রিন এনার্জি এবং আদানি উইলমার৷ বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় লগ্নিকারীরা হারিয়েছে ১০.৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি সম্পদ৷ এই ঘটনায় ২.৩৬ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি হারিয়ে বিশ্বের ধনীদের তালিকায় আদানির স্থান নেমে গেছে সাতে৷
আদানি গোষ্ঠীতে এলআইসির লগ্নি করা ৭৭ হাজার কোটি টাকা দুদিনে কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকায়৷ স্টেট ব্যাঙ্ক আদানি গোষ্ঠীকে ঋণ দিয়েছে ৮১ হাজার ২০০ কোটি টাকা৷ স্টেট ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ৫৪ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা কমেছে৷ স্টেট ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা সহ বেশ কিছু ব্যাঙ্ক যারা আদানির কোম্পানিতে টাকা খাটিয়েছিল তাদের শেয়ারও পড়েছে৷ হারিয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক, এলআইসিতে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত সঞ্চয়৷ আগামী দিনগুলিতে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা, যা সাধারণ মানুষের উপর মারাত্মক প্ভাব ফেলবে৷
অবিশ্বাস্য উত্থান
বাস্তবিক আদানিদের উত্থানকে রকেটের গতিতে বললেও অত্যুক্তি হয় না৷ গুজরাটে বিজেপি ক্ষমতায় বসার আগে পর্যন্ত কেউ তেমন একটা নামই শোনেনি আদানিদের৷ তারপর থেকেই উত্থান শুরু হয় আদানি গোষ্ঠীর৷ নরেন্দ্র মোদি প্ধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই উত্থান রকেটের গতি পায়৷ এমনকি করোনা অতিমারির সময়ে, যখন লকডাউন প্রভৃতি কারণে আর্থিক মন্দায় অর্থনীতির বৃদ্ধি শূন্যের অনেক নীচে নেমে গিয়েছিল তখনও আদানিদের বৃদ্ধি হয়েছে ২৬৩ শতাংশ৷ দেখা যাচ্ছে, গৌতম আদানির নিট সম্পদ ১২ হাজার কোটি ডলারের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলারই এসেছে গত তিন বছরে৷ বৃদ্ধি প্ায় ৮১৯ শতাংশ৷
তখনই জনমনে এ প্রশ্ন উঠেছিল যে, যখন দেশের অধিকাংশ মানুষের কাজ নেই, বিরাট অংশের মানুষ ছাঁটাইয়ের কবলে, যাঁদের কাজ কোনও ক্রমে টিকে গেছে তাঁদের বেতন হয়ে গেছে কোথাও অর্ধেক, কোথাও তার থেকেও অনেক কম, অধিকাংশ মানুষ প্রতিদিন দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে, তখন আদানিদের এত মুনাফা এল কী ভাবে নিয়ম মেনে ব্যবসার মুনাফা কি এমন পাহাড়প্রমাণ হতে পারে।
আজ এ কথা কারও অজানা নয় যে, বিজেপি সরকার বিশেষত প্রধানমন্ত্রীর হাত গৌতম আদানির মাথায় থাকাই তাঁর কোম্পানির রমরমার অন্যতম কারণ৷ দেশের সাধারণ মানুষকে সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বিজেপি সরকার একচেটিয়া পুঁজিপতি আদানিকে লুটপাট চালানোর অবাধ ছাডপত্র দিয়ে এসেছে লাগাতার৷ জমি, বন্দর, কয়লা, খনি, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, টেলিকম, চাল, ভোজ্য তেল সহ নানা খাদ্যদ্রব্যের একচেটিয়া ব্যবসার অধিকার দিয়েছে তাদের৷ অনলাইন, ফ্র্যাঞ্চাইজি, এজেন্সির মাধ্যমে দেশের সর্বত্র খুচরো এবং পাইকারি ব্যবসায় এবং লক্ষ লক্ষ কাউন্টার খুলে এক বিশাল চেনের মাধ্যমে এই সব ব্যবসার একচেটিয়া দখল নেয় তারা৷ প্রায় সমস্ত বন্দর সহ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি সরকার জলের দরে তুলে দিয়েছে আদানির হাতে৷ এ জন্য কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা কাটমানি পেয়েছেন কি না তা নিয়ে তদন্ত না হলেও সরকারের বদান্যতায় লাভের অঙ্ক বাডতে থাকে আদানিদের, বিলিওনিয়ারের সাম্রাজ্যে সম্রাটের স্থান দখল করে অতি দ্রুত৷
অনুমান নয়, মোদির সুদীর্ঘ হাত প্রমাণিত
শুধু দেশের বাজারেই নয়, বিদেশেও– যেমন ইজরায়েলে বন্দর, অস্ট্রেলিয়ায় খনি, শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ ব্যবসার বরাতও মোদি সরকার পাইয়ে দেয় আদানিকে৷ অস্ট্রেলিয়ায় আদানির খনি কেনার জন্য সরকারি ঋণ পাইয়ে দিতে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানকে উডিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি সরকার৷ অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কা দুদেশের সাধারণ নাগরিকরা আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন৷ স্লোগান উঠছে, আদানি গো ব্যাক, খনি–বিদ্যুৎ থেকে হাত ওঠাও৷ আদানিদের সেবা করার মাশুল দিতে হচ্ছে ভারতের জনগণকেও৷ দেশে বিপুল কয়লার ভাণ্ডার মজুত থাকা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া থেকে আদানির কয়লা ১০ গুণ বেশি দামে কিনে ভারতে আমদানি করছে মোদি সরকার৷ এই আমদানির কোনও প্রয়োজন ছিল না৷ আদানির মুনাফা বাডাতে এইভাবে বেশি দাম দিয়ে কয়লা কিনে ভারতে বিদ্যুতের দাম বাডানোর ক্ষেত্রে মোদি সরকার উদ্যোগ নিয়েছে৷ পরিণামে সাধারণ মানুষকে বিপুল পরিমাণে বিদ্যুৎ বিল মেটাতে হচ্ছে৷ এইভাবে সরকারের সৌজন্যে জনগণের পকেট কেটে আদানিদের সম্পদ বৃদ্ধি চলছে৷ অবশ্য বিজেপি একা নয়, কিছু দিন আগে এক ইন্টারভিউতে গৌতম আদানি বলেছিলেন, কংগ্রেস এবং কেরালায় সিপিএম সরকারও তাঁদের সর্বতোভাবে সাহায্য করে চলেছে৷ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারও এই পথেরই পথিক৷
করোনা অতিমারিতে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত, দেখা গেল তখনই আদানি গোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি লাভ করেছে৷ ২০২১ সালেই শুধু তাদের সম্পদবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯ বিলিয়ন ডলার, প্রতি সপ্তাহে ৬ হাজার কোটি টাকা হারে তথ্য–হুরুন ইন্ডিয়া ডট কম৷ ২০২২-এ এখনও পর্যন্ত তাদের সম্পদ বেডেছে ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৪ বিলিয়ন ডলার৷ সরকারের প্রতেক্ষ সহযোগিতায় জনগণের সম্পত্তির অবাধ লুঠ ছাডা এমন আর্থিক বৃদ্ধি সম্ভব নয়৷ আদানি পরিচালিত গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরে ৩০ হাজার কোটি টাকার ড্রাগ ধরা পডেছিল, পরে আরও কয়েক বার ধরা পডে৷ কোনওটিরই তদন্ত হয়নি বিজেপি সরকারের বদান্যতায়৷
প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ থাকার আরও একটি ফল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং এলআইসিকে দিয়ে কোম্পানির শেয়ারে বিপুল অঙ্কের টাকা ঢালা৷ এই সব সরকারি সংস্থাগুলিকে বাধ্য করা হয়েছে প্রকৃত দামের থেকে অনেক বেশি দামে কোম্পানির শেয়ার কিনতে৷ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আদানি গোষ্ঠীর এয়ারপোর্ট এবং অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ সংস্থায় বিপুল বিনিয়োগ করেছে৷ সরকারি সংস্থা এলআইসি বিনিয়োগ করেছে ২০,০০০ কোটি টাকা৷ আদানি গোষ্ঠীর প্রধান পাঁচটি কোম্পানির মোট ঋণের পরিমাণ ২.১ লক্ষ কোটি টাকা৷ এর মধ্যে ৪০ শতাংশ দেশীয় ব্যাঙ্কে, যার মধ্যে ৩০ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত এবং ১০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে৷
সরকার চোখ বুজে কেন
দেশের মানুষ এই প্রশ্ন তুলছে যে, এতবড় জালিয়াতির অভিযোগ উঠল এবং তা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে গেল আদানি গোষ্ঠী অথচ শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সরকারের অর্থমন্ত্রক কেউ কোনও ব্যবস্থাই নিল না। কোম্পানির যে অস্বাভাবিক ফুলে-ফেঁপে ওঠা দেখে সাধারণ মানুষের চোখ বারবার কপালে উঠেছে তা এই সব কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলির চোখে পড়ল না। একমাত্র জোর করে চোখ বন্ধ না রাখলে তা কি সম্ভব! এই প্রশ্নও উঠে এসেছে যে, এই সব সংস্থাগুলি চোখ এ ভাবে বন্ধ রাখল কার নির্দেশে! দ্বিতীয়ত, এত বড় একটি অভিযোগ সামনে আসা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী কিংবা সরকারের তাবড় ব্যক্তিরা মুখে কুলুপ এঁটে আছেন কেন! যাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে কেউ একটা কথা বললে, বা দুটো কথা লিখলে দেশদ্রোহের অভিযোগ দিয়ে ধরে এনে জেলে ভরে দেয়, তারা দেশের অর্থনীতি নিয়ে জুয়া খেলার মারাত্মক অভিযোগ পেয়েও এমন চুপচাপ কেন! এ সব প্রশ্নের উত্তর অতি দ্রুত সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের থেকে জানতে চায় দেশের মানুষ৷ প্রধানমন্ত্রী চুপ করে না থেকে উত্তর দিন৷
অবশ্য চিরাচরিত নিয়মে আদানিরা বলেছেন, এই রিপোর্ট তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত৷ তাঁদের সুনামে কালি ছিটোতেই এমন রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে৷ কোম্পানি হিন্ডেনবার্গের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে৷ অথচ কোম্পানির শেয়ার মূল্য হুড়মুড়িয়ে পড়তে শুরু করলেও বাস্তবে কোম্পানির পক্ষ থেকে তেমন কোনও উদ্যোগ দেখা গেল না৷ আদানিদের অভিযোগের উত্তরে হিন্ডেনবার্গ জানিয়েছে, গত দুবছরের কঠোর পরিশ্রমের ফসল তাদের এই রিপোর্ট৷ আদানিদের অজস্র নথি ঘেঁটে, কোম্পানির উচ্চপদাধিকারীদের সাথে কথার ভিত্তিতে তাঁরা এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন৷ তাঁরা এমনকি আদানিদের কোর্টে যাওয়ার হুমকিকেও স্বাগত জানিয়েছেন৷ বলেছেন, তাঁরা প্রায় ৮৮টি প্রশ্ন কোম্পানির কাছে পাঠিয়েও কোনও উত্তর পাননি৷ সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমেরিকার কোর্টে মামলা হলে তাদের সুবিধা হবে, কারণ তারা কোম্পানির থেকে ওই প্রশ্নগুলির উত্তর চাইতে পারবে৷ আদানি গোষ্ঠী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছে৷ দেশের মানুষের প্রশ্ন, আদানিদের কর্মের দায় সমগ্র ভারতবাসী নেবে কেন! ভারত মানে কি আদানি, না ভারত মানে নরেন্দ্র মোদি আর বিজেপি!
ওই সংস্থার অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তবে অতি দ্রুত ভারতীয় অর্থব্যবস্থার উপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে চলেছে৷ যার ফল শুধু কোম্পানি নয়, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপরও মারাত্মক ভাবে পড়বে এবং অজস্র সাধারণ মানুষও ভিখারিতে পরিণত হবে৷ কারণ, ব্যাঙ্ক কিংবা এলআইসিতে জমা টাকা সাধারণ মানুষের৷ যতক্ষণ কোম্পানিগুলি লাভ করে ততক্ষণ তা পৌঁছায় মালিকদের পকেটে৷ ক্ষতি হলে তার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ মানুষকে৷ মুষ্টিমেয় একচেটিয়া মালিকদের সেবাদাস হিসাবে কাজ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ মানুষের স্বার্থকে বলি দিচ্ছে, আর কোটি কোটি সাধারণ মানুষ পুঁজিপতিদের নির্মম শোষণ–লুণ্ঠনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্বে পরিণত হচ্ছে৷ আদানিদের মতো এমন জালিয়াতির অভিযোগ আরও কত আছে তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব কার! তা কি সরকারের নয়! এই অবস্থায় সরকারকে দ্রুত তদন্ত করে যত বড় শক্তিশালী নামই উঠে আসুক তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে৷ দেশের জনগণকেও আজ এই দাবিতে সোচ্চার হতে হবে৷