মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ বাতিলের দাবিতে ১৩ জুন অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির আহ্বানে কলকাতার কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশে শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজনদের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমির বিজ্ঞানী অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক অমিতাভ দত্ত, অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক বিজয় দলুই, অধ্যাপক মানস জানা, অধ্যাপক মনোজ গুহ সহ বিশিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা। বক্তারা বলেন, কেন্দ্রের শাসক দল নাকি রাজ্যের শাসক দল কে শিক্ষাঙ্গনের দখল নেবে আজ তারই প্রতিযোগিতা চলছে। শিক্ষার স্বাধিকার রক্ষা হল কি না তা নিয়ে এদের কোনও মাথাব্যথা নেই। নবজাগরণের যুগে শিক্ষাকে সাম্রাজ্যবাদী শাসক ও ধর্মান্ধদের কবল থেকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক বৈজ্ঞানিক ও ধর্মনিরপেক্ষ করবার জন্য যে ঐতিহাসিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধিকার রক্ষার লড়াই শুরু হয়েছিল, যে লড়াইয়ে পথপ্রদর্শক ছিলেন বিদ্যাসাগর, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো ব্যক্তিরা, তাকে পদদলিত করে আজ ন্যক্কারজনক ভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা শিক্ষাঙ্গনের অধিকার দখলের প্রতিযোগিতা করছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক শিক্ষার সমাধি রচনা হবে, তার সাথে ব্যাপকভাবে বাড়বে শিক্ষার রাজনীতিকরণ এবং চরম দুর্নীতি। সভার সভাপতি প্রাক্তন উপাচার্য চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী বলেন, আজ তারা বলছে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার যা করছে তা জনগণের রায় মেনেই। একদিন এই জনগণই তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়বে এবং এই নীতিকে পরাস্ত করবে। ফলে আমাদের লড়াই চলবে।
গ্রীষ্মের ছুটি আরও ১১ দিন বাড়িয়ে স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ রাখার রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত ছাত্র স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সেখানে বলা হয় ‘আবহাওয়া দপ্তর যখন সুস্পষ্টভাবে পূর্বাভাস দিয়েছে যে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বর্ষা আসছে ১৬ জুন, তখন সেই দিন থেকেই ছুটি ঘোষণা করা মুখ্যমন্ত্রীর খামখেয়াল ছাড়া আর কিছু নয়। তাঁর এই খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের চরম মূল্য ছাত্রছাত্রীদের দিতে হবে।