২৫ নভেম্বর আগরতলা পৌরনিগম নির্বাচন। নির্বাচনে এস ইউ সি আই (সি) পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দলের রাজ্য সাংগঠনিক কমিটির সম্পাদক কমরেড অরুণ ভৌমিক বলেন, ছোট প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরাতেও মূল্যবৃদ্ধি, রোজগারহীনতা, অভাব-অনটনে জনজীবন বিপর্যস্ত। পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন সময়ে যখন রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ অনুপস্থিত। জনজীবনের সমস্যা নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুললে পুলিশি আক্রমণ এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কারারুদ্ধ করা অব্যাহত।
একদিকে করোনার অজুহাতে প্রশাসনিক বাধা, অন্যদিকে ভয় ও সন্ত্রাসের পরিবেশ। গত এক বছর ধরে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরিবর্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌর সংস্থাগুলি পরিচালনা করা হচ্ছে। পৌর নাগরিকদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা– বিশুদ্ধ ও পর্যাপ্ত পানীয় জল, নিকাশি ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, রাস্তা সংস্কার, আধুনিক শৌচালয়ের ব্যবস্থা, বাজার-হাট পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদির সুব্যবস্থা না করে পৌর এলাকা কেবল প্রসারিত করে চলছে। তদুপরি পরিষেবা প্রদানে প্রশাসনিক জটিলতায় নাগরিকদের ভোগান্তির শেষ নেই। নির্মাণ কাজে প্ল্যান পাশ করানো ব্যয়বহুল এবং অত্যন্ত জটিল। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর প্রাপকদের ঠিক সময়ে অর্থ প্রদান নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি, টুয়েফের কাজেও অনিয়ম। আগরতলা পৌর নিগমে ৫১টি ওয়ার্ড করা হয়েছে। পুরনো ওয়ার্ডগুলিতেই উপযুক্ত পরিষেবা নেই এবং নতুন ওয়ার্ডগুলিতে কোনও প্রকার পরিষেবা না দিয়েই কর আদায় শুরু হবে। এই অবস্থায় জনগণের মধ্যে অভিযোগ উঠছে যে পৌরনিগমে এনে তাঁদের কী লাভ হল? সরকার আগরতলা শহরকে স্মার্ট সিটি করার ঘোষণা করেছে অথচ অল্প বৃষ্টিতেই শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। এই নরকযন্ত্রণা থেকে অব্যাহতি দিতে সরকারের কোনও মাস্টার প্ল্যানের কথা নাগরিকদের জানা নেই।
পৌর নিগমের প্রতিটি গলিতে ডাস্টবিন রাখা ও তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা নেই। নিগম অঞ্চলে পাবলিক টয়লেটের অভাবে জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল সরবরাহ না থাকায় জনসাধারণকে বাধ্য হয়ে বহু টাকা ব্যয় করে নিজস্ব জলের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। অপেক্ষাকৃত উঁচু অঞ্চলে শুখা মরসুমে কুয়োতে জল থাকে না, তখন তীব্র জলসংকট দেখা দেয়। মশার উপদ্রব বন্ধ করতে মাঝে মধ্যে চেষ্টা দেখা যায়, কিন্তু মশা নির্মূলীকরণের স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা নেই।
সিপিএমের দীর্ঘ শাসনে এই অব্যবস্থাগুলির সমাধান যেমন হয়নি, তেমনি বর্তমান বিজেপি শাসনেও একই জিনিস চলছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রকৃত বিরোধী শক্তি থাকা প্রয়োজন, যারা পৌর নিগমের ভিতরে নাগরিকদের স্বার্থে কথা বলবে এবং বাইরে তাদের সংগঠিত করে উপযুক্ত পরিষেবা প্রদানের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলবে। এস ইউ সি আই (সি) দল আন্দোলনের একটি শক্তি, যে দল সারা দেশব্যাপী জনস্বার্থে আন্দোলন পরিচালনা করে চলেছে ত্রিপুরা রাজ্যেও এই দল জনস্বার্থে শক্তি অনুযায়ী আন্দোলন করে আসছে এবং আগরতলা পৌর নিগমের বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও আন্দোলন করছে। আগরতলা পৌর নিগম নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ব্যাটারি টর্চ চিহ্নেভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য নাগরিকদের কাছে আহ্বান জানান তিনি।