পেগাসাস কাণ্ডে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তদন্ত কমিটির সাথে সহযোগিতা করেনি। নাগরিকদের ফোনে সরকার আড়ি পেতেছে কি পাতেনি–এ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি পরিচালিত সরকার যে কোনও সদুত্তর দেয়নি, তা আদালতকে জানিয়ে দিয়েছে প্রাক্তন বিচারপতি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি। তারা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার অসহযোগিতাতেই কোনও সিদ্ধান্ত করা যায়নি। তাই আদালতও সিদ্ধান্তহীন থেকে গেছে। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে সরকার কর্তব্য পালন করেনি বলে আদালতও হাত গুটিয়ে থাকবে, এটা জনগণের কাম্য ছিল না।
সদ্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এনভি রমণা আশা দিয়েছিলেন, এই রিপোর্টের কতটা জনসমক্ষে আনা যায় তিনি খতিয়ে দেখবেন। সময় আর হল না, তিনি অবসর নিয়ে ফেললেন, বিষয়টা ঝুলেই রইল। ৩ বছর ধরে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের সাংবিধানিক বৈধতা, ৬ বছর ঝুলে ইউএপিএ সংক্রান্ত সাংবিধানিক মামলা, নতুন নাগরিকত্ব আইনের বৈধতা নিয়ে মামলা ঝুলে দীর্ঘ সময়। কর্ণাটকের হিজাব সংক্রান্ত মামলারও শুনানি কবে কেউ জানে না। প্রধান বিচারপতি হিসাবে এনভি রমণার প্রতিশ্রুতি ছিল, বিচারপতিদের বেঞ্চ গঠন করে এই মামলাগুলির অগ্রগতি ঘটাবেন। তিনি তাঁর কার্যকাল শেষ করে ফেললেন, অথচ সবই বকেয়া রইল।
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বেঞ্চ রামমন্দিরের পক্ষে রায় দিতে গিয়ে ধর্মবিশ্বাসকেই যুক্তির ওপরে স্থান দেওয়ায় বিচার বিভাগের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র নিয়েই জনমানসে প্রশ্ন দেখা দেয়। সদ্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রমণা একাধিকবার বিচারবিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখায় তা রক্ষার একটা আশার আলো অনেকে দেখছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেছে সমাজকর্মী, সাংবাদিকদের অন্যায় গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে বা গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে বিচারবিভাগ যতটা বলেছে ততটা কাজে করে দেখাতে উদ্যোগ নেয়নি। এ দেশে এখন কত লক্ষ বন্দি বিচারের অপেক্ষায় দিন গুনতে গুনতে জেলে পচছেন তার সঠিক হিসাব কে রাখে? এদের অনেকেই যতদিন জেলে কাটিয়েছেন বিচার হলে সাজা হতে পারত তার থেকে অনেক কম। বিচারপতিরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে বারবার বলেছেন, জামিন পাওয়া অভিযুক্তের অধিকার। এই অধিকার বাস্তবায়নের কাজ এগোল কোথায়?
সব দেশেই বুর্জোয়া শাসকদের মুখে মুখে ঘোরে পবিত্র আইনের শাসনের কথা। ভারতেও কেন্দে্র কিংবা রাজ্যে যে দলই সরকারি গদিতে বসুক না কেন তাদের মুখের লrই হল, ‘আইন আইনের পথে চলবে’, ‘আমরা আইনের শাসনের ওপর আস্থাশীল’। শাসকরা যখন অন্যায় করে তার অধিকাংশের পিছনেই একটা আইনের স্ট্যাম্প তারা রেখে দেয়। আইনের দোহাই পেড়েই কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনও সমালোচককে দেশদ্রোহী বলে জেলে পোরে। গুজরাট সরকার যখন বিলকিস বানোর ধর্ষক এবং শিশু সহ অন্য ১৪ জন মানুষের হত্যাকারীদের জেল থেকে ছেড়ে দেয়, যাতে বিজেপি নেতারা তাদের সংবর্ধনা দিতে পারে–তার পিছনেও কোনও না কোনও আইনের দোহাই দিতে পারে। ২০০২-এ গুজরাট গণহত্যার সঠিক এবং নিরপেক্ষ বিচার চাইবার অপরাধে তিস্তা শেতলবাদকে জেলে পুরতে কোনও একটা আইনের ধারা বার করতেও বিজেপি সরকারের অসুবিধা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে সরকার যখন ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাস’ আখ্যা দিয়ে ছাত্রদের জেলে ভরে, উত্তরপ্রদেশে সরকারি বুলডোজার প্রতিবাদীর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়, কোভিড মহামারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতাকে প্রকাশ করে দিলে যখন সাংবাদিকের উপর দমনের খাঁড়া নামে, এমন প্রতিটি অন্যায়ের পিছনেই সরকার জড়ো করতে পারে আইনের ধারা-উপধারার সমর্থন। আইনের দোহাই দিয়েই শ্রমিকের ন্যায্য পাওনার দাবিকে নস্যাৎ করে কারখানা যখন তখন লকআউট করতে পারে মালিক, পারে যথেচ্ছ ছাঁটাই করতে। অথচ তার বিরুদ্ধে শ্রমিকের ধর্মঘট হয়ে যায় বেআইনি। উন্নয়নের অজুহাতে সরকার দরিদ্র কৃষক কিংবা শহরের বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করে, দরিদ্রের জীবন-জীবিকা ধ্বংস করে তাদের জমি ধনকুবেরদের উপহার দেয়, সেই অন্যায়ের পক্ষেও থাকে আইন।
তা হলে, এই ‘গণতান্ত্রিক’ ভারতে আইন কি সকলের জন্য সমান ন্যায়ের ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত? সাধারণ মানুষ অভিজ্ঞতা থেকে বলবেন, না কখনওই নয়। দেখা গেল একেবারে শীর্ষ আদালতের বিচারপতিও তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, ‘যা আইনসঙ্গত তা সর্বদা ন্যায়সঙ্গত নয়, আবার বহু ক্ষেত্রে কোনও কিছু ন্যায়সঙ্গত হওয়া সত্ত্বেও বেআইনি হতে পারে।’ গত ৬ আগস্ট গুজরাটের গান্ধীনগরে ‘ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটির’ সমাবর্তনে ছাত্রদের কাছে এই কথাই বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি তাঁদের আইন এবং ন্যায় এই দুটির পার্থক্য মনে রাখতে বলেছেন। বিচারপতিকে ধন্যবাদ যে তিনি একটি সত্যকে নতুন করে স্মরণ করিয়েছেন। যদিও এ দেশের বুকে এই কথাটি বহুদিন আগে তুলেছিলেন, মহান মার্ক্সবাদী চিন্তানায়ক শিবদাস ঘোষ। তিনি ১৯৬৭ সালেই বলছেন, ‘যাহাই আইনসঙ্গত তাহাই সবসময় ন্যায়সঙ্গত, যুক্তিসঙ্গত এবং মানবিকতাসম্পন্ন নাও হতে পারে। আবার কোনও জিনিস প্রচলিত আইনের চোখে বেআইনি হলেই তা অন্যায় অযৌক্তিক এবং অমানবিক হয় না’ (নির্বাচিত রচনাবলি তৃতীয় খণ্ড, পৃঃ ৩৫)। কিন্তু সে দিন বুর্জোয়া রাজনীতিবিদরা তো বটেই এমনকি তথাকথিত বামপন্থীরাও অনেকে ভুরু কুঁচকেছিলেন।
আজ সংসদ-বিধানসভা থেকে শুরু করে প্রশাসন, পুলিশ এদের কেউ জনস্বার্থে কাজ করবে এমন আশা জনগণ ছেড়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থাটাকে সাধারণ মানুষের কাছে অন্তত কিছুটা সহনশীল করে তুলতে সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বুর্জোয়া রাজনীতিবিদ, চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবীরা দেখানোর চেষ্টা করেন, কোথাও সুরাহা না মিললে তোমার জন্য আদালত আছে। এই প্রচারে প্রভাবিত হয়ে অনেকে মনেও করেন, বিচারব্যবস্থাই আজ একমাত্র ভরসা। কিন্তু বিচারালয় দাঁড়াবে যে আইনের ওপর, তার ন্যায়ের ধারণাটা কোন ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে? ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে ‘জনগণের বিচারপতি’ বলে পরিচিত, ভি আর কৃষ্ণ আইয়ার বলেছিলেন, ‘আমাদের আইন সকলের দিকেই ঘেউ ঘেউ করে, কিন্তু কামড়ায় শুধু দরিদ্র, শক্তিহীন, অশিক্ষিত, অজ্ঞ মানুষকে।’ আইন কি তা হলে সকলের জন্য সমান? কোনও শ্রেণিবিভক্ত সমাজে আইন কি সকলের জন্য সমান হতে পারে? বিচারপতি আইয়ার দেখিয়েছেন, পুঁজিপতি শ্রেণি যেমন সমাজের উচ্চ শ্রেণি থেকেই প্রশাসক-আমলাদের বেছে নেয়, আইনসভার জন-প্রতিনিধিদের তারা কিনে রাখে, তেমনই ‘বিচারপতিদের বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও কাজ করে শ্রেণিগত পক্ষপাতিত্ব। এমনকি বিচারব্যবস্থা এবং তার মধ্য দিয়ে যে বিচারপ্রক্রিয়া কার্যকরী হয়, তাদের সকলেরই শ্রেণিচরিত্র আছে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘এই শ্রেণিচরিত্রের জন্যই বিচারব্যবস্থা আইনের যে ব্যাখ্যা উপস্থিত করে তা সার্বিক অর্থে ধনবান শ্রেণিকেই সাহায্য করে, সম্পত্তিহীনদের নয়। সামাজিক স্তরবিন্যাস, প্রশাসকদের শাসনদণ্ড, আইনসভা এবং বিচারব্যবস্থা প্রত্যেকেরই রাজনৈতিক চরিত্র আছে’ (পভার্টি অ্যান্ড পলিটি’ অফ জুডিসিয়ারিঃ কৃষ্ণ আইয়ার, দ্য হিন্দু ২৯.১২.২০১৩, এবং দ্য হিন্দু ৪.১২.২০২১)।
যাঁরা মার্ক্সবাদ অচল বলে লাফিয়ে বেড়ান, সেই সব মহা পণ্ডিত বুদ্ধিজীবীরা বিচারব্যবস্থা সম্বন্ধে বিচারপতি আইয়ারের এই পর্যবেক্ষণ অস্বীকার করার সাহস দেখাবেন কি? মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ বহু আগেই দেখিয়েছে একটা শ্রেণিবিভক্ত সমাজে রাষ্ট্র মানেই একটা শ্রেণির রাষ্ট্র। বিচারব্যবস্থা হল সেই রাষ্ট্রের অন্যতম একটা স্তম্ভ। তাই বিচারব্যবস্থা তথাকথিত নিরপেক্ষতার চাদর গায়ে দিয়ে রাষ্টে্রর শাসক-শোষক শ্রেণিরই সেবা করে মূলত। আবার কখনও কখনও পুঁজিবাদী ব্যবস্থাটাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই বিচারব্যবস্থাকে শ্রমিকের পক্ষে, দরিদ্রের পক্ষে, শাসকের বিরুদ্ধে রায় দিতে হয়। না হলে পুরো ব্যবস্থাটাই জনগণের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে। দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, প্রগতিশীল বামপন্থী আন্দোলনের শক্তি কতটা তার ওপরেও বিচারব্যবস্থার আপাত নিরপেক্ষতা অনেকটা নির্ভর করে। পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা বলছে, স্কুলে নানা স্তরে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে অনেক মামলা চললেও সেই সব মামলায় শাসকের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ রায় আসার পথ করে দিয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলন এবং জনমানসে তার প্রভাব। এ অভিজ্ঞতা নতুন নয়, মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সংক্রান্ত আইনগুলি সংসদ-বিধানসভা কিংবা বিচারালয়ে মান্যতা পেয়েছে একমাত্র তখনই যখন দেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জোয়ার উঠেছে। তা স্তিমিত হলে বিচারালয়ও মুখ ফেরায়।
পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা আজ মানবসমাজের অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা। সর্বগ্রাসী সংকটে এই ব্যবস্থা আজ একেবারে জীর্ণ। পুঁজিবাদ তার বাঁচার মরিয়া প্রচেষ্টায় মানুষকে চরম শোষণে রিক্ত করে দিচ্ছে। এই দুর্বিষহ অবস্থার বিরুদ্ধে যাতে কেউ মাথা তুলে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে সমাজ থেকে সমস্ত ভালমন্দ বোধ, মূল্যবোধ একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার রক্ষকরা। সংকটের মধ্যেও যে ভাবে হোক মুনাফা অর্জনেরর তাগিদে জল-জঙ্গল-জমি-প্রাকৃতিক সমস্ত সম্পদকে যথেচ্ছ লুঠ করছে পুঁজিপতিরা। এর বিরুদ্ধে কোনও প্রতিবাদী স্বর উঠলেই তাকে গলা টিপে মারতে গণতন্ত্র, আইন, বিচার সবকিছুকে একেবারে কবরে পাঠাতে তাদের দ্বিধা নেই। তার উপর গণতান্ত্রিক আন্দোলন, বামপন্থী আন্দোলনের দুর্বলতার সুযোগে আজকের শাসকরা মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, শ্রমিকের অধিকার, চাষির অধিকার, বনাঞ্চলে স্বাভাবিক অধিবাসীদের অধিকার একের পর এক কেড়ে নিতে বদ্ধপরিকর। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব পড়ছে বিচারবিভাগেও। কোনও বিশেষ বিচারপতি তাঁর বিবেক এবং জুরিসপ্রুডেন্সের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ব্যক্তিগতভাবে গণতান্ত্রিক অধিকার, ব্যক্তি পরিসরের মর্যাদা, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে রক্ষা করার কথা বলতে পারেন। কেউ কেউ বলছেনও। কিন্তু যখনই সামগ্রিকভাবে তা প্রয়োগের প্রশ্ন আসছে, সরাসরি জনগণের হয়ে দাঁড়ানোর প্রশ্ন আসছে, তখনই যেন আর বিচারবিভাগের পা চলতে চায় না।
বিচারবিভাগের কাছ থেকে আপাত অর্থেও ন্যায়বিচার আদায় করতে হলে আজ কী দরকার– সে পথ দেখিয়েছেন মার্ক্সবাদী চিন্তানায়ক শিবদাস ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘মন্দ আইনগুলোকে পাল্টাতে হলে গণআন্দোলনের মারফত প্রবল জনমত সৃষ্টি করতে হবে। আর এ কথা মানতেই হবে যে, এই জনমতের প্রভাব সবার ওপরেই কাজ করে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের ওপরেও এর প্রভাব পড়ে, আইন প্রণয়নকারীদের ওপরেও এর প্রভাব পড়ে। এমনকি যাঁরা বিচার করেন তাঁদের ওপরও এই জনমত প্রভাব বিস্তার করে। জনমতের প্রভাব যদি না সৃষ্টি করা যায় তাহলে খুব নীতিসম্মত আইনের ব্যাখ্যাগুলোও ন্যায়নীতিসম্পন্ন হয় না, জনস্বার্থের অনুকূল হয় না, জনস্বার্থের পরিপূরক হয় না’ (নির্বাচিত রচনাবলি তৃতীয় খণ্ড, পৃ. ৪১)।
এই নিষ্ঠুর পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের কাছ থেকে অন্তত একটু ন্যায়বিচার পেতেও আজ তাই সংগঠিত গণআন্দোলন, বামমনস্ক গণতান্ত্রিক বোধসম্পন্ন মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়া রাস্তা নেই।