১৮ নভেম্বর সল্টলেকের বিদ্যুৎ উন্নয়ন ভবনে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে অল বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যোৎ চৌধুরীর নেতৃত্বে ডেপুটেশন দেওয়া হয়৷ সারা দেশের মধ্যে এই রাজ্যেই বিদ্যুতের মাশুল সর্বোচ্চ– এই তথ্য তুলে ধরে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ৫০ শতাংশ মাশুল কমানোর দাবি জানান৷ নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্যাপটিভ খনি থেকে রাজ্য সরকার কয়লা ব্যবহার করলে, পুলিশ সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শত শত কোটি বকেয়া বিদ্যুৎ মাশুল আদায় করলে, বিদ্যুৎ দপ্তরের দুর্নীতি বন্ধ করে এটিসি লস (সঞ্চালন, কারিগরি ও বাণিজ্যিক ক্ষতি) কমানোর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে ৫০ শতাংশ মাশুল কমানো যায়– নেতৃবৃন্দের এই যুক্তি মন্ত্রী অস্বীকার করতে পারেননি৷
রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কাছে গচ্ছিত গ্রাহকদের সিকিউরিটি ডিপোজিটের টাকার উপর দেয় সুদের হার ৬ শতাংশ৷ কিন্তু সেই সুদ বৎসরান্তে গ্রাহকদের দেওয়া হয় না৷ অথচ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া টাকার উপর বাৎসরিক সুদের হার ২৪ শতাংশ, যাকে লেট পেমেন্ট সারচার্জ বা এলপিএসসি বলা হয়৷ এই বিশাল বৈষম্য ও অন্যায় কেন চলছে, মন্ত্রী তারও জবাব দিতে পারেননি৷ এলপিএসসি ব্যাঙ্ক রেটের বেশি না করার দাবি জানানো হয় মন্ত্রীকে৷
দেশের মধ্যে পাঁচটি রাজ্যে কৃষিতে বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দেওয়া হয়৷ নেতৃবৃন্দ দাবি করেন অন্তত তিন একর পর্যন্ত কৃষিতে বিনা পয়সায় এবং তদূর্ধ্বে ৫০ শতাংশ কম দামে বিদ্যুৎ দিয়ে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের রক্ষা করতে হবে৷ বন্টন কোম্পানির এলাকার ন্যায় সিইএসসি গ্রাহকদের ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকির দাবি জানানো হয়৷ জঙ্গলমহল এলাকার বিপুল পরিমাণ ভুতুড়ে বিল সংশোধনের জন্য আবার সার্কুলার জারি করার বিষয়ে মন্ত্রী বন্টন কোম্পানিকে বলবেন বলে জানিয়েছেন৷
সাম্প্রতিক বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকাঠামো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সারানো এবং ক্ষতিগ্রস্তদের বিদ্যুৎ বিল মকুবের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ৷ অ্যাবেকার দাবিগুলির যৌক্তিকতা মেনে মন্ত্রী সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে সিইএসসি, ডব্লুবিএসইডিসিএল এবং ডব্লুবিইআরসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে শীঘ্রই গ্রাহক স্বার্থে কোন কোন সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন তা জানাবেন বলে অ্যাবেকার নেতৃবৃন্দকে জানান৷ সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও প্রতিনিধি দলে ছিলেন অমল মাইতি, অনুকূল ভদ্র, সুব্রত বিশ্বাস, সুভাষ ব্যানার্জী প্রমুখ৷