অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ইউনিটি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ রায় মণ্ডল ৩০ ও ৩১ মে দু’দিন ব্যাপী দেশজোড়া ব্যাঙ্ক ধর্মঘট সফল করার জন্য ব্যাঙ্ককর্মীদের সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে চাই লাগাতার সংগ্রাম৷ তার জন্য উন্নততর বেতন নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে৷ সকলেই জানেন, ইতিপূর্বে সকল বেতন নির্ধারণ পর্বেই অ্যাডহক প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে, কোনও যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি৷ বেতন নির্ধারণের যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি হিসাবে আমরা পঞ্চদশ ভারতীয় শ্রম সম্মেলনের (আই এল সি) নির্দেশিকাকে ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করতে পারি৷ ১৯৫৭ সালের এই ত্রিপাক্ষিক সম্মেলনে শ্রমিক, শিল্পপতি এবং সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷ সেখানে তিন ধরনের বেতন কাঠামো সুপারিশ করা হয়েছিল৷ কল–কারখানার অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনভিত্তিক ন্যূনতম মজুরি (নিড বেসড ওয়েজেস), সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ন্যায্য মজুরি (ফেয়ার ওয়েজেস) এবং সকল কর্মচারীদের জন্য বাঁচার মতো মজুরি (লিভিং ওয়েজেস)৷ বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম শ্রেণির অফিসাদের তুলনায় ব্যাঙ্ক অফিসাদের বেতন অনেক কম৷ কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসারদের জন্য মোটামুটি লিভিং ওয়েজ নিশ্চিত করা হয়েছে৷ ব্যাঙ্ক শিল্পের ক্ষেত্রেও সেই মতো ফেয়ার ওয়েজ এবং লিভিং ওয়েজ কর্মচারী ও অফিসারদের জন্য সুনিশ্চিত করতে হবে৷ প্রাসঙ্গিক হিসাবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, পঞ্চদশ আই এল সি নিড–বেসড মজুরির পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছিল৷ তার ভিত্তিতে আই এল সি–র অন্যান্য সুপারিশগুলিকে বিবেচনায় রেখে ফেয়ার ওয়েজ ও লিভিং ওয়েজের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত৷ আমরা এখানে আরও উল্লেখ করতে চাই যে, আই বি এ–র কাছে প্রদত্ত দাবিপত্রে আমরা ফেয়ার ওয়েজের পরিমাণ ৩৯,৬০০ টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য ৩৪,৩৫০ টাকা দাবি করেছি৷ সাথে সাথে পূর্বতন সমস্ত বেতনচুক্তিগুলির কালা শর্ত বাতিল করার দাবিও আমাদের সোচ্চার কণ্ঠে তুলতে হবে৷ কারণ, সেগুলিই স্থায়ী কর্মীদের ঠিকা শ্রমিকদের জায়গায় ঠেলে দিয়েছে, আউট সোর্সিং ও ছাঁটাইয়ের দরজা খুলে দিয়েছে৷
(৭০ বর্ষ ৪২ সংখ্যা ৭জুন, ২০১৮)