প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক এবং পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ কাজি সে দেশের সাম্প্রতিক বন্যা-পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে বলেছেন, সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা সর্বোচ্চ মুনাফা লুঠের লক্ষ্যে নির্বিচারে প্রকৃতির ক্ষতি করেছে। পরিণতিতে পরিবেশ দূষিত হয়ে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে চলেছে, যার ফলে প্রকৃতি ও মানুষ– উভয়ই ধ্বংসের পথে চলেছে। বিশ্বের ধনী দেশগুলির সৃষ্টি করা পরিবেশ-দূষণের কারণে আজ পাকিস্তানের মানুষ বৃষ্টি ও বন্যায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের চারটি রাজ্য এবং গিলগিট-বালটিস্তান বন্যায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত।
বৃষ্টির জল বেরিয়ে যাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে যে সব প্রাকৃতিক পথগুলি ছিল, সিন্ধের সামন্তী প্রভুরা, বিশেষত যারা সরকারের অংশ, সেগুলির দখল নিয়ে মাছ চাষের পুকুর ও বিশালাকার খামার তৈরি করেছে। জারদারি-শাসনের অংশ যে সামন্তী প্রভুরা, যাঁরা এক-একটা জেলায় রাজার মতো ক্ষমতা ভোগ করেন, তাঁরা নিজেদের মালিকানাধীন এলাকা থেকে বন্যার জল বের করতে সরকারি টাকা অপব্যবহার করছেন।
এই বন্যায় ইতিমধ্যে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লক্ষ লক্ষ পশু হয় মারা গেছে নয়তো ভেসে গেছে। দিনের পর দিন জল জমে থাকায় ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, পেটের অসুখ ও চর্মরোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ঘটছে। মশার জ্বালায় জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। পানীয় জল প্রায় অমিল। বর্তমানে শিশু ও মহিলা সহ ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর সাধারণ মানুষ খোলা আকাশের নিচে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়। দ্রুত এই দুরবস্থা দূর করার বদলে পাকিস্তানের লোভী ও নিষ্ঠুর শাসকদের ভাবগতিক দেখে মনে হচ্ছে, তারা এই বন্যা-পরিস্থিতি জিইয়ে রাখতেই চায় যাতে বিশ্বের নানা দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ ও ঋণ পাওয়া যায়।
প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতিতে অবিলম্বে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া বন্যাত্রাণ বণ্টনের জন্য তৈরি কমিটিতে বন্যাদুর্গতদের সম্পর্কে ভালো ভাবে জানেন যাঁরা, তাঁদের যুক্ত করার দাবি করা হয়েছে।