এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)–এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ২৯ জুন এক বিবৃতিতে বলেন,
এ বছর করোনা অতিমারি এবং তৎজনিত দীর্ঘ লকডাউনের কারণে স্কুল–কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক মাস ধরে ক্লাস বন্ধ, কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয়নি অথচ শিক্ষাবর্ষ প্রায় সমাপ্তির পথে৷ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা মাঝপথে অসমাপ্ত রয়েছে, কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পার্ট থ্রি পরীক্ষা অসমাপ্ত রয়েছে, সেমেস্টার ভিত্তিক পরীক্ষা শুরুই হয়নি৷ স্নাতকোত্তর স্তরেও অবস্থা একইরকম৷
নতুন শিক্ষাবর্ষও শুরু হওয়ার সময় এসে গেছে, কিন্তু কবে তা শুরু হবে তা অনিশ্চিত৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যারা পরীক্ষার মাধ্যমে নতুনদের ভর্তি করে, তারাও এই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছে না৷ যে ছাত্র–ছাত্রীরা চূড়ান্ত বর্ষ বা সেমেস্টারে আছেন তাঁরা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন এই ভেবে যে, তাঁদের বর্তমান বর্ষের মূল্যায়ন কীভাবে হবে, ফল ঠিক সময়ে প্রকাশ হবে কিনা, উচ্চতর শিক্ষায় ভর্তি হতে পারবেন কিনা ইত্যাদি৷ এঁদের মধ্যে এমন কিছু ছাত্র–ছাত্রী আছেন, বিশেষ করে যাঁরা কারিগরি শাখায় পডছেন, তাঁদের অনেকে চাকরি পেয়ে গেছেন, কিন্তু ফল প্রকাশিত না হলে সেই চাকরিতে যোগ দিতে পারবেন না৷ এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক সময়ে যেমন করে কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার যে পদ্ধতিতে সকলে অভ্যস্ত ও সর্বজনগ্রাহ্য– তেমন করে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তা অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে দিলে এই চূড়ান্ত বর্ষ/সেমেস্টারের ছাত্র–ছাত্রীরা ভীষণ ক্ষতির সম্মুখীন হবেন৷ তা আমরা একেবারেই মেনে নিতে পারি না৷ এই পরীক্ষাগুলি কেমন করে সংগঠিত হবে সে সম্পর্কে ইউজিসি–র সুপারিশ আছে এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অ্যাডভাইসারিও আছে৷
এই পরিপ্রেক্ষিতে কেবল ঐ স্তরের ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, (১) পডুয়াদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করে যদি কোনও বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা নিতে পারে, তারা নেবে, (২) যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়/শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পরিকাঠামো বা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং ইউজিসি/রাজ্য সরকারের মতামত খেয়ালে রেখে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করুক ও নির্ধারিত সময়ে ফল প্রকাশ করুক৷ এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, এই মূল্যায়ন অনলাইন করাকে আমরা একেবারেই সমর্থন করতে পারিনা, কারণ তাতে এদেশে অনেক ছাত্র–ছাত্রী পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না৷ কিন্তু এসব ক্ষেত্রে মূল বিবেচনায় যা রাখা উচিত তা হল উল্লিখিত স্তরের ছাত্র–ছাত্রীরা যাতে বঞ্চিত না হন৷