২০ নভেম্বর বিজ্ঞান সংস্থা কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) তাদের একটি পরিকল্পনা সম্পর্কে টুইট করে৷ টুইটে জানা যায়, সিএসআইআর–এর অন্তর্ভুক্ত একটি ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীদের আয়না ও লেন্স সাজিয়ে এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, যাতে প্রতি বছর রামনবমীতে অযোধ্যায় রামলালার মূর্তির মাথায় প্রথম সূর্যরশ্মি এসে পড়ে৷ এই ঘটনা স্বভাবতই বিজ্ঞানীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে৷ দু’শো জন বিজ্ঞানী একটি খোলা চিঠির মাধ্যমে নিজেদের প্রতিবাদ ব্যক্ত করেছেন৷ এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)–এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২৪ নভেম্বর একটি বিবৃতিতে বিজ্ঞানীদের এই প্রতিবাদ জ্ঞাপনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷
খোলা চিঠিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এমন একটি ব্যবস্থা নির্মাণ স্নাতক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য উপযুক্ত পাঠাভ্যাস হতে পারে কিন্তু মানুষের জ্ঞানভাণ্ডারের সমৃদ্ধি ঘটানো এর লক্ষ্য নয়৷ জনসাধারণের কাছ থেকে আদায় করা অর্থের এই নির্লজ্জ অপব্যয়ের নিন্দা করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ সূর্যের আলো দেবমূর্তির মাথায় ফেলার এমন একটি অতি–সহজ ব্যবস্থা তৈরিতে বিজ্ঞানীদের ব্যবহারের কার্যকারিতা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ণ তুলেছেন৷ বাস্তবে এ হল বিজেপি সরকারের হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডার একটি অঙ্গ যেখানে অধ্যাত্মবাদী কর্মসূচি সফল করতে প্রযুক্তিবিজ্ঞান ব্যবহার করা হল৷ বিজ্ঞানচেতনা বিরোধী এই ঘটনাটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, সঠিক বিজ্ঞানচেতনা অনুযায়ী যা করা উচিত, বিজেপি সরকারের কম্পাসের কাঁটা তার দিকনির্দেশ করে না৷ তার অভিমুখ হল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিজ্ঞানের যে ধরনের অপব্যবহার তাদের প্রয়োজন, সেই দিকে৷
বিবৃতিতে কমরেড প্রভাস ঘোষ বলেন, প্রতিবাদী বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত হয়ে, বিজ্ঞান গবেষণার নামে এই চাতুরীর বিরুদ্ধে তাঁরা যে প্রতিবাদ ধ্বনিত করেছেন, তার প্রতি আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই৷ অধ্যাত্মবাদের সঙ্গে বিজ্ঞানের কারিগরি দিকটি মিলিয়ে দিয়ে ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতি কায়েমের যে অপচেষ্টা বিজেপি সরকার চালাচ্ছে, আমরা তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই৷