হিমালয়ের বুকে অবস্থিত ‘গিরিপথের দেশ’ বলে খ্যাত লাদাখ আজ এক ভয়ঙ্কর সঙ্কটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। সেখানকার মানুষ আজ রাজপথে। ২০২০ সাল থেকেই তারা পথে নেমেছে, বিক্ষোভ দেখিয়েছে, কেন্দ্রের মোদি সরকারকে ‘প্রতারণা ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের’ জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।
বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এবং ২০২০ সালে ‘লেহ পার্বত্য কাউন্সিল’ নির্বাচনে লাদাখের জন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বিজেপি-পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। ফলে ক্ষোভের আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে।
লাদাখে এই চলমান আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে ম্যাগসাইসাই পুরস্কার বিজয়ী পরিবেশ-কর্মী সোনম ওয়াংচুক সহ ‘কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের’ অনশন আন্দোলনে। ওয়াংচুক বলেছেন, তাঁর আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য হল– হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য রাজ্য যেমন হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, বা সিকিমের মতো লাদাখকে ধসপ্রবণ, ভঙ্গুর, শীতল মরুভূমিতে পরিণত না হয়।
সোনম ওয়াংচুক একজন দূরদর্শী শিক্ষাবিদ হিসাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন। তাঁর নির্মিত‘বরফ স্তূপ বিদ্যালয়ে’ উদ্ভাবনী শিক্ষাপদ্ধতির জন্য এই স্বীকৃতি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই লাদাখের পরিবেশ সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। জলের সংকট মেটাতে ওয়াংচুক বরফ সংগ্রহের কৌশল ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন। লাদাখের পরিবেশ সংকট সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে তিনি তাঁর মঞ্চকে ব্যবহার করেছেন। লাদাখের মতো শূন্য ডিগ্রির নিচে প্রবল ঠাণ্ডা ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে একটি খুব কম জনঘনত্বের অঞ্চলে তিরিশ হাজার মানুষের বিক্ষোভ দেখিয়ে দেয়, সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্কট কত ভয়াবহ। অন্য ন্যায্য আন্দোলনের মতোই লাদাখের এই আন্দোলনও বৃহৎ সংবাদমাধ্যমে বিশেষ জায়গা পায়নি। অথচ তাঁদের দাবিগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই আন্দোলনের প্রতি ওই অঞ্চলের মানুষের সমর্থনও ব্যাপক।
৩৭০ ধারা বাতিল এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিবর্তন
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কেন্দ্রের বিজেপি সরকার একতরফা ভাবে ৩৭০ ধারা বাতিল কর়ে। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের মতামত গ্রহণ না করেই ৩৭০ ধারা রদ করা এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসনিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা কাশ্মীর উপত্যকা শুধু নয়, জম্মু এবং লাদাখের মানুষের স্বাধিকারের ধারণায় ধাক্কা দিয়েছে। এস ইউ সি আই (সি) তখনই এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল।
জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন লাদাখকে কেবল পুরনো জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে তা নয়, একই সঙ্গে সেই আইনের বলে রাজ্যের তকমা কেড়ে নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর, এবং লাদাখ নামক দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করেছে। লাদাখে আইনসভা নেই। ফলে পরিবেশ সুরক্ষা, প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ সুরক্ষা, পরিকাঠামো নির্মাণ, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য অধিকার রক্ষায় আইন প্রণয়নের ক্ষমতাসম্পন্ন বিধানসভা গঠনের, কিংবা স্বয়ংশাসিত প্রশাসন চালানোর উপযোগী একটি প্রাদেশিক সরকারকে নির্বাচিত করার সুযোগও রাজ্যবাসীর নেই। তাদের সব বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুগ্রহের উপর নির্ভর করে থাকতে হবে। লাদাখের মানুষের অভাব-অভিযোগ কে শুনবে? শত সীমাবদ্ধতা সত্তে্বও এই বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের তথাকথিত শেষ অধিকার ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার খাতায়-কলমে যতটুকু সুযোগ ছিল, সেই সুযোগটিও আর থাকল না। ফলে বছরের পর বছর কোনও কাজ না হোক, প্রশাসন যতই দুর্নীতিগ্রস্ত হোক, নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের পরিবর্তন করার পার্লামেন্টারি ‘ক্ষমতা’টুকুও জনগণের হাতে অবশিষ্ট রইল না। সুতরাং, ভোটের জন্য আমাদের দেশে শাসক দলগুলোর ‘জনকল্যাণমূলক’ কাজ করার যে সামান্য বাধ্যবাধকতাটুকু থাকে সেটুকুও বিলুপ্ত হয়েছে।
হিল কাউন্সিলের মাধ্যমে আপেক্ষিক স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি
লাদাখের মানুষকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার নামে ১৯৯০ এবং ২০১০-এর দশকে দুটি পার্বত্য কাউন্সিল গঠন করা হয়েছিল। লাদাখের মানুষ কাশ্মীরের সরকারি প্রশাসনের (রাষ্ট্রপতি শাসনের কারণে যার কর্তৃত্ব অধিকাংশ সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ছিল) কাছ থেকে উপেক্ষিত হওয়ার কারণে ক্রমেই তাদের দাবিগুলি মেটানোর জন্য ওই হিল কাউন্সিলগুলোর কাছে দরবার করত। কিন্তু হিল কাউন্সিলগুলি সেদিনও শ্রীনগরের কর্তাব্যক্তিদের অধীনস্থ ছিল, আর আজও তারা কেন্দ্রীয় সরকারের আমলাতন্ত্রের মর্জির উপর নির্ভরশীল। স্বায়ত্ত্বশাসন কথাটা কেবল খাতায়-কলমে রয়ে গেছে। এমনকি ২০১৯ সালের পরে পার্বত্য কাউন্সিলের বাজেট প্রায় চার গুণ করা হলেও, কাউন্সিলরদের কোনও ক্ষমতাই বাস্তবে নেই, সবই আমলাদের নিয়ন্ত্রণে। অর্থাৎ স্বায়ত্ত্বশাসনের ছিটেফোঁটাও নেই। ফলে ক্ষোভ বাড়ছিলই।
উদ্বেগের বিষয়
লাদাখের় মানুষের সাংস্কৃতিক সত্তার যে বিশেষত্ব ছিল, তা আজ বিপন্ন। সেখানকার জনবিন্যাসের চরিত্র পরিবর্তনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষত বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে পর্যটন ব্যবসায় বৃহৎ পুঁজিপতিদের বিপুল বিনিয়োগের ফলে সেই আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দাবি উঠেছে, লাদাখের জমির মালিকানা স্থানীয়দের নিয়ন্ত্রণেই রাখতে হবে এবং সরকারি চাকরিতে স্থানীয়দের নিয়োগ করতে হবে। দাবি উঠেছে, লাদাখের পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। ৩৭০ ধারা বিলোপের পর যে নতুন ‘ডোমিসাইল আইন’ তৈরি হয়েছে সেই আইন অনুসারে লাদাখের ছেলেমেয়েরা আর জম্মু-কাশ্মীরে চাকরি করার জন্য যোগ্য নয়। এর প্রতিবিধানে বিজেপি সরকার ২০১৯-এর আগস্টের পরে যে ‘অতিরিক্ত চাকরি সৃষ্টি’র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।
লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করায় বহু লাদাখবাসী প্রথমে স্বায়ত্ত্বশাসনের কল্পিত স্বপ্নে বিভোর হয়ে বিজেপি-সরকারের ওই পদক্ষেপকে সমর্থন করলেও দ্রুত তাদের ভুল ভেঙেছে। তাঁরা দেখেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের অঙ্গ হওয়ার কারণে ৩৫এ ধারার বলে সেখানকার জমি বাইরের কেউ কিনতে পারত না, কিন্তু আজ বহু দূর থেকে আসা বহু টাকার মালিকরা লাদাখবাসীদের হটিয়ে জমির দখল নিচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ক্রমে বাইরের লোকের হাতে চলে যাচ্ছে। পর্যটন শিল্পের চাপে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। বলিউডের অপসংস্কৃতির চাপে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বিপন্ন হচ্ছে। ফলে অর্থনীতি-সংস্কৃতি আজ প্রবল সঙ্কটে। আজ তাই তারা তাদের হৃত অধিকারের দাবিতে সোচ্চার।
প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন
লাদাখের সব থেকে বড় সমস্যা হল সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ধারাবাহিকভাবে ধ্বংস হচ্ছে। এর কারণ দুটি। প্রথমটি, প্রকৃতিকে অগ্রাহ্য করে পর্যটন ব্যবসা। দ্বিতীয়টি হল লাদাখের মাটি খুঁড়ে খনিজ সম্পদ উত্তোলন। এছাড়া রয়েছে নদীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ তৈরি করা। গত কয়েক বছরে লাদাখে পর্যটকদের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্থানীয় দোকানদার, হোটেল ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভবান হয়েছেন, কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস হয়েছে বহুল পরিমাণে। এমনিতেই এখানকার খাদ্য, পানীয় জল, কৃষিজ সম্পদ কম। ফলে পর্যটকদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ না করলে এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরাময়ে সরকারের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে।
সমীক্ষা অনুসারে লাদাখে বেড়াতে আসা একজন পর্যটক দৈনিক ১.৩৮ কেজি কঠিন বর্জ্য পদার্থ পরিত্যাগ করেন (সূত্রঃ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইন কোল্ড ডেসার্ট, এ কেস স্টাডি অফ লেহ ডিস্ট্রিক্ট, জে অ্যান্ড কে, ইন্ডিয়া)। প্লাস্টিক দূষণের পরিমাণও মারাত্মক। প্রতি বছর ৫০ টন প্লাস্টিক জমছে লাদাখের মাটিতে (সূত্রঃ হেলেনা নরবার্গ-হজ, লাদাখ ব্যালেন্সিং ট্যুরিজম উইথ ট্র্যাডিশন)। ফলে পরিবেশের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্ব-উষ্ণায়নের কুফল। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিপজ্জনকভাবে লাদাখের হিমবাহ গলছে। এর ফলে জলসংকট দেখা যাচ্ছে, লাদাখের কৃষিকাজে যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পরিবেশ-বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন চলতে থাকলে লাদাখ অচিরেই শীতল সাদা মরুভূমিতে পরিণত হবে।
এর পাশাপাশি নগরায়নের ফলে লাদাখের অরণ্য ধ্বংস হচ্ছে। এমনিতেই এই অঞ্চলে অরণ্যের পরিমাণ মোট জমির মাত্র ৫ শতাংশ। সেই স্বল্প অরণ্যও নগরায়ন, হোটেল নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণের জন্য এখন কেটে সাফ করা হচ্ছে। রাজধানী লেহ শহর বা অন্যত্র এই ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে। গাছ কেটে ফেলার ফলে ভূমিক্ষয়ের আশঙ্কাও বাড়ছে। এর ফলে লাদাখে যেটুকু সবুজ আবরণ ছিল, তাও বিনষ্ট হচ্ছে।
ষষ্ঠ তফসিল থেকেও বঞ্চিত করা হল
সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি রাজ্য– আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের আদিবাসী অঞ্চলে বিশেষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার সুযোগ রাখা হয়েছে। অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল (এডিসি) বা অটোনমাস রিজিওনাল কাউন্সিল (এআরসি)-র মাধ্যমে ওই আপেক্ষিক স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে ওই রাজ্যগুলিতে। ষষ্ঠ তফসিলের মাধ্যমে লাদাখের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্টে্যর নিজস্বতা বজায় রাখা যেত এবং ভঙ্গিল পরিবেশকে কিছুটা সুরক্ষা দেওয়া যেত। ষষ্ঠ তফসিলের মাধ্যমে লাদাখবাসিরা তাদের ভাষা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, রীতিনীতিকে রক্ষা করতে পারতেন বলে তাঁরা মনে করেন। লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা হলে সেখানে এডিসি এবং এআরসি গঠন করা যেত এবং ওই নির্বাচিত বডিগুলি প্রয়োজনে বিভিন্ন বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারত।
তাছাড়া, ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হলে বাইরের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া যেত। স্বায়ত্তশাসন এবং আর্থিক সহযোগিতা লাদাখের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করত বলে লাদাখ আন্দোলনের প্রবক্তারা মনে করেন। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না।
বিজেপি সরকার উদাসীন
লাদাখের মানুষের এত বড় আন্দোলন সত্ত্বেও বিজেপি-পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার নীরব রয়েছে। তাদের এই মৌনব্রত ধারণের কারণ কী? আসলে কেবলমাত্র বৌদ্ধ বা মুসলমান নয়, লাদাখের সকল মানুষের উত্থাপিত দাবিগুলি জম্মু-কাশ্মীরের বিভাজন, তার বিশেষ মর্যাদা খারিজ করা, ৩৫-ক ধারা বিলোপ করা ইত্যাদির বিরোধী। দাবি মানতে হলে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও বিশেষ সুবিধা দিতে হয়। কিন্তু তাতে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা খারিজ করার বিষয়টিও বাতিল করতে হয়! দ্বিতীয়তঃ, লাদাখের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চাকরি এবং জমির বিষয়ে বিশেষ সুবিধা দিলে, জম্মু-কাশ্মীরেও তার দাবি উঠবে। সেটা বিজেপি সরকার আদৌ চায় না। সুতরাং আন্দোলন স্তিমিত করার জন্য তারা ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করার চক্রান্ত করছে। বৌদ্ধ এবং মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ঘটিয়ে লাদাখের আন্দোলন চাপা দেওয়ার ছক কষছে তারা।
সর্বশেষ পরিস্থিতি
প্রবল প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও যেভাবে লাদাখের মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাদের তীব্র বিক্ষোভের সাক্ষ্য দেয়। ২০২৪-এর ৬ মার্চ থেকে সোনম ওয়াংচুক ২১ দিনের অনশন বিক্ষোভ শুরু করেন। বরফাবৃত রাস্তায় তাঁবুর মধ্যে শুয়ে তুষারপাতের মধ্যেও তাঁর এই অনশন দেশের বিবেকবান মানুষকে নাড়া দিয়েছে। হাজারে হাজারে পরিবেশ ও বিজ্ঞানকর্মী দেশ জুড়ে এই আন্দোলনের সমর্থনে পথে নেমেছেন। আন্তর্জাতিক স্তরেও এই আন্দোলন সমর্থন পেয়েছে। ২৬ মার্চ অনশন শেষ হলেও সোনম ওয়াংচুক এবং তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সংবাদমাধ্যমে এই আন্দোলনের যেটুকু খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেটা খুবই আশাব্যঞ্জক। এই দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় এবং পরিবেশ-সংকট নিয়ে সক্রিয় সকল মানুষের লাদাখের আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি, সমর্থনে এই আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে উঠবে।