করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আচমকা লকডাউন ঘোষণা করায় অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষের সাথে রাজ্যের ২৩ লক্ষাধিক বিড়ি শ্রমিক চরম দুর্দশায়। বিগত কয়েক মাস ধরে বিড়ি শ্রমিকদের কোনও কাজ নেই। বর্তমানে কাজ শুরু হলেও তিন চার দিনের বেশি কাজ পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ জেলায় মালিকরা এই সুযোগে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরিও কমিয়ে দিয়েছে। বহু বিড়ি শ্রমিক পরিবারে চলছে অনাহার-অর্ধাহার। কেন্দ্রীয় সরকার বিড়ি শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পের জন্য সেস তোলা বন্ধ করে জিএসটি চালু করেছে। পূর্বে সেস থেকে প্রাপ্ত টাকায় বিড়ি শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পের খরচ চলত। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের দয়ার উপর কল্যাণ প্রকল্পের টাকা নির্ভর করে। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা কম দেওয়ায় কল্যাণ প্রকল্পের বহু সুবিধা থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকার ৪৪টি শ্রম আইনকে ৪টি লেবার কোডে রূপান্তরিত করায় বিড়ি শ্রমিক কল্যাণ আইন-১৯৭৬ বাতিল হয়ে যাবে।
বিড়ি শ্রমিকদের সরকার নির্ধারিত নূ্যনতম মজুরি, লগবুক, পিএফ, পেনশন, বোনাস চালু ইত্যাদি ১৫ দফা দাবিতে এআইইউটিইউসি পরিচালিত বিড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার পিশ্চমবঙ্গ রাজ্য কমিটির আহ্বানে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর দাবি সপ্তাহ পালন করেন বিড়ি শ্রমিকরা। বিভিন্ন জেলায় ডিএম, এসডিও, বিডিও, এএলসি, ডিএলসির কাছে দাবিপত্র নিয়ে বিক্ষোভ দেখান ও ডেপুটেশন দেন। বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত অঞ্চলে এই কর্মসূচি ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।
বিড়ি শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবিতে ৮ সেপ্টেম্বর অনলাইনে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার নিজাম প্যালেসে গিয়ে ওয়েলফেয়ার কমিশনারকে দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই দাবিগুলি নিয়ে কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বিড়ি শ্রমিকদের বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বিড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি।