Breaking News

বুঝলাম, মানুষ কত ভালোবাসে এই পার্টিকে

যেদিন শুনলাম এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) পার্টি মূল্যবৃদ্ধি রোধ, অভয়ার ন্যায়বিচার, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন দাবিতে মহান লেনিনের প্রয়াণ দিবসে মহামিছিলের ডাক দিয়েছে। মনে হয়েছিল সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। এরপরই শুরু জোরকদমে প্রচার। বাড়ি বাড়ি প্রচারে অসাধারণ সাড়া পাওয়া যায়। মানুষ দু’হাত ভরে সাহায্য করেছেন। খুবই সাধারণ শ্রমিক যারা আগে মাথা নিচু করেই মালিকের নাম করে বলতেন কিছু দিতে পারব না, তাঁরাও আমাদের প্রত্যাশা ছাপিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষই বলে দিচ্ছেন কোথায় কোথায় আরও বাড়ি আছে যাতে সেখানেও আমরা আমাদের বক্তব্যটা নিয়ে যেতে পারি। সাইকেলে মাইক বেঁধে প্রচার চলছিল। প্রচারের সময় দোকানের এক কর্মচারী বললেন ‘আপনারা সাইকেলে ব্যানার না বেঁধে একটা বড় গাড়ি করুন যাতে সবার চোখে পড়ে’। অটো প্রচারের মাঝে চা খেতে গেছি। চা বিক্রেতা বললেন, ‘দিদি, আপনারা মিছিলটা রবিবার করতে পারতেন, তা হলে আমাদের যেতে সুবিধা হত’।

এরকম ভাবেই ২১ জানুয়ারি এসে উপস্থিত হল। মিছিলের আগে সভা চলছে। বক্তব্যের সময় মনে হয়েছিল যতদূর চোখ যায় ততদূর শুধুই মানুষের মাথা। পরে শুনলাম মিছিল প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গেছে। রাস্তায় হাঁটার সময় দু’পাশে দাড়িয়ে থাকা অজস্র সাধারণ মানুষ মিছিল দেখছেন। চোখে মুখে তাঁদের বিরক্তির কোনও ছাপ নেই। এই পার্টিকেই ভরসা করা যায়।

২১ জানুয়ারির জনপ্লাবনের খবর পরের দিনের সংবাদপত্রে ছিল নামমাত্র। মহামিছিলের খবর গণদাবীর মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায় পার্টি নেতৃত্ব। মানুষ তা সানন্দে গ্রহণ করছেন ও পড়ছেন। কাগজ বিক্রি করতে গিয়ে দেখলাম, এক বাবা কাগজ নিয়ে মেয়ের হাতে দিয়ে বলছেন, ‘এই নে, এটা তোরই পড়া দরকার’। আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন ‘তুমি এই পার্টিটা করো’? হ্যাঁ বলায়, তিনি বলছেন, ‘বাহ্! এই পার্টিটাই করা উচিত’। ২১ জানুয়ারি শুধু একুশেই শুরু আর তাতেই শেষ নয়। এটা একটা জার্নি। এই পার্টির প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও ভরসার জায়গা উপলব্ধি করার একটা বড় সুযোগ হল ২১ জানুয়ারি।

অনন্যা মুখার্জী, চিত্তরঞ্জন