‘‘সবচেয়ে প্রথমে, পার্টিকে হতে হবে শ্রমিক শ্রেণির অগ্রগামী বাহিনী। পার্টিকে অবশ্যই শ্রমিক শ্রেণির সর্বোত্তম অংশকে, তাঁদের অভিজ্ঞতাকে, তাদের বিপ্লবী তেজ ও সর্বহারা শ্রেণির প্রতি তাঁদের নিঃস্বার্থ নিষ্ঠাকে পুরোপুরি আত্মস্থ করতে হবে। কিন্তু সত্যি সত্যি অগ্রগামী বাহিনী হতে হলে পার্টিকে বিপ্লবী তত্ত্ব, আন্দোলন ও বিপ্লবের নিয়ম সংক্রান্ত জ্ঞানে বলিয়ান হতে হবে। এ ছাড়া পার্টি সর্বহারার সংগ্রামকে পরিচালনা করতে, তাকে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। শ্রমিক শ্রেণি কী অনুভব করে, কী চিন্তা করে তা প্রতিফলিত করার মধ্যেই যদি পার্টি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে, যদি পার্টি স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের লেজুড়বৃত্তি করে, যদি স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের জড়তা ও রাজনৈতিক ঔদাসীন্যকে সে অতিক্রম করতে না পারে, যদি সে সর্বহারার আশু স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে না পারে, যদি সর্বহারা শ্রেণি স্বার্থের উপলব্ধির স্তরে সে জনগণকে তুলতে না পারে তবে পার্টি যথার্থ পার্টি হতে পারবে না। পার্টিকে শ্রমিক শ্রেণির পুরোভাগে থাকতেই হবে। শ্রমিক শ্রেণির চাইতে তাকে আরও অনেক দূর দেখতে হবে। তাকে সর্বহারা শ্রেণিকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের লেজুড়বৃত্তি করা চলবে না। দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের যে সব পার্টি লেজুড়বৃত্তি করত তারা ছিল বুর্জোয়া মতবাদের ধারকবাহক। এরা সর্বহারা শ্রেণিকে বুর্জোয়াদের ক্রীড়নকে পরিণত করেছিল। যে পার্টি শ্রমিক শ্রেণির অগ্রগামী বাহিনীর ভূমিকা পালন করে ও সর্বহারার শ্রেণিস্বার্থের উপলব্ধির স্তরে জনগণকে তুলতে পারে–একমাত্র সেই ধরনের পার্টিই পারে শ্রমিক শ্রেণিকে ট্রেড ইউনিয়নবাদের পথ থেকে সরিয়ে আনতে ও তাকে পরিণত করতে পারে একটা স্বাধীন রাজনৈতিক শক্তিতে।’’
– ক্রেমলিনে লেনিন স্মৃতিসভায় প্রদত্ত ভাষণ
২৮ জানুয়ারি ১৯২৪
এই লেখাটি গণদাবী ৭৭ বর্ষ ৪৭ সংখ্যা ৪ – ১০ জুলাই ২০২৫ এ প্রকাশিত