স্বপ্নের সূচনা

ঝন্টু মণ্ডল

মঞ্চ থেকে দুশো মিটারে আমি৷

কয়েক হাজার মাথা ছুঁয়ে আমার দৃষ্টি

মাইক্রোফোন হাতে তরুণ বৃদ্ধ কমরেডের উপর৷

কমরেড বলছেন সামাজিক অবক্ষয়ের কথা

কমরেড বলছেন মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কথা

কমরেড বলছেন সাংস্কৃতিক অবক্ষয় কীভাবে পঙ্গু করে দিচ্ছে সমাজকে৷

যুব সমাজ কীভাবে চির শীতঘুমে শায়িত

কীভাবে হাইজ্যাক হয়ে গেছে ধর্ম ও চিন্তা

মৌলবাদে ছেয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব সামনে আঁধার৷

হঠাৎই মেঘ ভেঙে এল অঝোর বৃষ্টি

ভাবলাম এবার একটু এগিয়ে যাওয়া যাবে৷

আশ্চর্যজনকভাবে খুলে গেল হাজার হাজার ছাতা

লাল কালো নীল সবুজ৷ কমরেডরা নিজেরাই এনেছেন সেসব–

পার্টি দেয়নি৷ দেওয়ার ক্ষমতাও নেই, তারা জানেন৷

কেউ নড়লেন না এক চুল৷

কমরেড থামতে চাইলেন, কিন্তু শ্রোতারা বললেন–

‘না৷ আমরা শুনতেই তো এসেছি আজ৷’

বৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি বলে চললেন বিদ্যাসাগরের কথা

ক্ষুদিরামের কথা, ভগৎ সিংয়ের কথা, মার্কস, লেনিন, মাও, স্ট্যালিন,

কমরেড শিবদাস ঘোষের কথা৷ শোনালেন প্রকৃত মার্কসবাদ কী৷

বললেন মেকী বামপন্থা আসলে বিপ্লবেরই পরিপন্থী৷

পেরিয়ে যাচ্ছে ঘন্টা তবু

কমরেডরা শুনছেন, জেনে নিতে চাইছেন মুক্তি কীসে

বুঝে নিতে চাইছেন ভবিষ্যৎ কর্তব্য, আগামীর সংকল্প৷

কমরেডরা শুনছেন, ভিজছেন তবু উঠছেন না৷

অথচ যেতে হবে দূরে৷ না ফিরলে গরুটা ঘাস পাবে না

জাল পাতা হবে না বিলে, পরদিন কাজে যাওয়াও হবে না৷

নাও জুটতে পারে দু’মুঠো খাবার  বাচ্চাটার ওষুধ৷

পথ চলতি এক ভাই বললেন,

‘শুধুই তো ছাতা দেখছি৷ ওর নীচে মানুষই তো?’

আমি বললাম–

‘না ভাই৷ একেকটা ৭ই নভেম্বর৷’