সরকারি হাসপাতালে ‘পেইড ক্লিনিক’–এর প্রতিবাদ

মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক ডাঃ অংশুমান মিত্র ৪ জুলাই এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ডক্টরস ডে উপলক্ষে ১ জুলাই এসএসকেএম হাসপাতালে যে পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন তা এক কথায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেহাল অবস্থাকে আড়াল করার এক সুচতুর কৌশল ছাড়া কিছু নয়৷

তিনি বলেন, সম্প্রতি এনআরএস মেডিকেল কলেজের মর্মান্তিক ডাক্তার নিগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলন রাজ্য স্বাস্থ্য পরিষেবার কঙ্কালসার চেহারাকে জনমানসে তুলে ধরেছে৷ তাই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে যাওয়ার পরেও মূল পরিকাঠামোগত ঘাটতিকে আড়াল করতে মুখ্যমন্ত্রী একদিকে ‘পেইড কেবিন’ ও ‘পেইড ক্লিনিক’ এবং অন্য দিকে ‘পথ বন্ধু’ প্রভৃতি চমক দিয়ে সরকারি সমস্ত দায়ভার ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন৷ সরকার যেখানে বিনামূল্যে জনসাধারণের স্বাস্থ্যের সম্পূর্ণ দায়ভার নেওয়ার ও পরিকাঠমোর ঘাটতি পূরণের আশ্বাস দিয়েছিল, সেখানে এই ঘোষণা গত ১৭ জুন আলোচনায় বসা জুনিয়র ডাক্তার প্রতিনিধিদের সাথে শুধু নয় সমস্ত জনগণের সাথে চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছুই নয়৷

পূর্বতন সিপিএম সরকার সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেল চালুর মধ্য দিয়ে এ রাজ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেসরকারিকরণের সূত্রপাত করেছিল৷ বর্তমান সরকার বেসরকারিকরণের সেই নীতিকেই ব্যাপকভাবে কার্যকরী করার জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোকে ‘বাজেট হাসপাতালে’ পরিণত করতে ব্যগ্র হয়ে পড়েছে৷ তাই মিষ্টি কথার আড়ালে উডবার্ন নাসিংহোমের উদাহরণ টেনে সরকার সোজা কথায় বুঝিয়ে দিল যে, যার টাকা আছে স্বাস্থ্য পাওয়ার অধিকার একমাত্র তারই আছে৷ হাসপাতালগুলোতে যথার্থই স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি করতে চাইলে, নানা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ও হেলথ ইনসিওরেন্স সহ বহু প্রকল্পের নামে কোটি কেটি টাকা খরচের প্রয়োজন হত না৷ সরকারের এই জনস্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান৷

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৪৯ সংখ্যা)