সমাজতন্ত্র হারিয়ে শান্তির রক্ষক আজ যুদ্ধের কারিগর

২৬ ফেব্রুয়ারি, কলকাতা

এই নিবন্ধ লেখার সময় ইউক্রেনের আকাশে বারুদের গন্ধ, বোমা এবং অজস্র মিসাইল আছড়ে পড়ার শব্দ। ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে রুশ সৈন্যবাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনের মুল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকার রুশ দখলদারি এবং রাজধানী কিয়েভে বোমাবর্ষণ চলছে। ধ্বংসের পরিমাণ এবং হতাহতের সংখ্যা প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে। তিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি রাশিয়া, আমেরিকা এবং জার্মানির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজার দখলের রাজনীতির বলি ইউক্রেনের অসহায় সাধারণ মানুষ।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

১৯১৭ সালে মহান লেনিনের নেতৃত্বে নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন গড়ে ওঠে ১৯২১ থেকে ইউক্রেন ছিল তারই অঙ্গ। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের যুগে সমাজতন্ত্রের সুষম বিকাশের নীতির ফলে ইউক্রেন সোভিয়েত রাশিয়ার সর্বাধিক কৃষিসমৃদ্ধ এবং দ্বিতীয় সর্বাধিক শিল্প এবং প্রযুক্তি সমৃদ্ধ রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। দীর্ঘ দিন জারের দখলদারির ফলে ইউক্রেনে যে রুশবিদ্বেষ ছিল তা কাটিয়ে উঠে গোটা সোভিয়েত ইউনিয়নকে জাতি ভাষা-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ করতে লেনিন-স্ট্যালিনের সোভিয়েত ইউনিয়ন ইউক্রেন সহ অন্যান্য অঙ্গরাজ্যগুলির মানুষকে শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই দেয়নি, দিয়েছিল আত্মনিয়ন্ত্রণের বাস্তব এবং সাংবিধানিক অধিকার। তাই জারের রাশিয়ায় বহু ভাষা, জাতি-উপজাতি বিরোধে বিভক্ত রাশিয়া লেনিন স্ট্যালিনের নেতৃত্বে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সুযোগ (রাইট টু সিসিড) থাকলেও ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী সোভিয়েত ইউনিয়ন হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। সোভিয়েত সমাজতন্ত্রে স্বাধীনতা-গণতন্ত্র নেই জিগির তুলে সাম্রাজ্যবাদ এবং নয়া সংশোধনবাদী ষড়যন্ত্রে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতনের ফলে ‘মুক্তি’র আনন্দে অনেকে উদ্বাহু হয়েছিলেন। সাবেক সোভিয়েতের অঙ্গরাজ্যগুলিতে পুঁজিবাদের পুনরভ্যুত্থানের পরিণামে সেদিনের সমৃদ্ধ ইউক্রেন আজ চূড়ান্ত অর্থনৈতিক সংকট, বেকার সমস্যা, ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি, ভাষা-গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ প্রভৃতি সমস্যায় জর্জরিত এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির টানাপোড়েনে যুদ্ধবিধ্বস্ত।

দিল্লি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আমেরিকা সাম্রাজ্যবাদী শিবিরের শিরোমণি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। এই সময়ে সোভিয়েত রাশিয়া ছাড়াও ইউরোপের আরও আটটি দেশ সমাজতান্ত্রিক শিবিরে যোগ দেওয়ায় ইউরোপে কমিউনিজমের বিস্তার আটকাবার জিগির তুলে আমেরিকা পশ্চিম ইউরোপের পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলিকে নিয়ে ন্যাটো (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন) যুদ্ধজোট তৈরি করে। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলিতে সোভিয়েতের দিকে তাক করে ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্রসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত রাষ্ট্রের ভাঙনের সময় থেকে এ যাবত সোভিয়েত ইউনিয়নকে টুকরো টুকরো করে ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে দুর্বল করার কাজে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে আমেরিকা। সেই সময় অর্থাৎ ১৯৯১ সালের ভাঙনের মধ্য দিয়েই স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসাবে ইউক্রেনের জন্ম। এই পর্যায়ে আমেরিকা, যাতে এই সব দেশগুলিতে কোনও মতেই সমাজতন্ত্রের পুনরুত্থান না ঘটে তার জন্য রুশবিরোধী উপজাতীয় মানসিকতা এবং ভাষা ও সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে কাজে লাগিয়ে জাতিদাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার কাজটিও চালাতে থাকে। লক্ষণীয়, এই সময়ে যুগোশ্লাভিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রগুলিও জাতিগত বিরোধে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। বোঝা যায়, সমাজতন্ত্রের সময়েও সাম্যবাদী আদর্শের চর্চায় যথেষ্ট ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে এই সব দেশে উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং ইউরোপে এই পর্যায়ে ক্রমবর্ধমান নয়া নাৎসীবাদের প্রভাবও পড়তে থাকে।

সমাজতন্ত্র ধ্বংস হওয়ায় সাম্রাজ্যবাদীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তীব্র রূপ নিয়েছে

সমাজতন্ত্রের পতনের পর থেকেই পশ্চিমী পুঁজিবাদী সংবাদমাধ্যম ‘সমাজতন্ত্র বা কমিউনিজমের দিন শেষ’ ‘বর্তমান বিশ্ব একমেরু বিশ্ব’, ‘এই বিশ্বে আমেরিকার ধারেকাছে কেউ নেই’ এই হাওয়া তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা বিশ্বের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয় বিশ্বায়ন এবং নিও-লিবারাল খোলা বাজার অর্থনীতি। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হল, সমাজতন্ত্রের পতন ও খোলা বাজার অর্থনীতি সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির বাজার এবং পশ্চিমী দেশগুলির বাজার আমেরিকার জন্য খুলে দিলেও তাতে আমেরিকার অর্থনৈতিক সংকট কাটেনি। বরং খোলা বাজার অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে বর্তমানে বৃহৎ পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী অর্থনৈতিক শক্তি চীন এবং পুঁজিবাদী রাশিয়া তাদের পুরানো শক্তিশালী সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির ভিতটাকে ব্যবহার করে আমেরিকার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বাজার দখলের লড়াইয়ে নামে। আবার ইউরোপে সমাজতান্ত্রিক পূর্ব জার্মানি পুঁজিবাদী পথ নিয়ে পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে অতি শক্তিশালী পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। জার্মানি ফ্রান্সের সঙ্গে জোট বেঁধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অর্থনৈতিক জোট গঠন করে ইউরোপে আমেরিকান পুঁজির আধিপত্য অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় আমেরিকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।

ইউক্রেনে আমেরিকা-রাশিয়ার বাণিজ্য যুদ্ধ

‘৯১ সালে প্রতিবিপ্লবের পর পুঁজিবাদী রাশিয়া ভেঙে যাওয়া সোভিয়েতের অঙ্গরাজ্যগুলিকে যুক্ত করে একদিকে রাশিয়ান ফেডারেশন এবং অন্য দিকে কমনওয়েলথ অফ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস (সিআইএস) গঠন করে এই রাজ্যগুলির উপর তার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছিল। এর বিরুদ্ধে আমেরিকা এই প্রাক্তন সোভিয়েত অঙ্গরাজ্যগুলিতে তার গুপ্তচর বাহিনী সিআইএ-কে হাতিয়ার করে রাশিয়ার আধিপত্য কমিয়ে আমেরিকার প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা করতে থাকে। এ ক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক স্বার্থই নয়, আমেরিকার প্রত্যক্ষ অর্থনৈতিক স্বার্থও যুক্ত হয়েছিল। বর্তমান অর্থনীতিতে জ্বালানি হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববাজারে জ্বালানি গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে আমেরিকা সম্প্রতি রাশিয়াকে পিছনে ফেলে এক নম্বরে উঠে এসেছে। কিন্তু আমেরিকার গ্যাসের উৎপাদন এবং পরিবহন খরচ অনেক বেশি। জার্মানি সহ পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার তুলনামূলকভাবে সস্তা রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের উপর প্রধানত নির্ভরশীল ছিল। এ ক্ষেত্রে জার্মানির আমেরিকাকে ইউরোপের বাজারে ঢুকতে না দেওয়ার মানসিকতাও যুক্ত হয়েছিল। নর্ডস্ট্রিম ১ নামক গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে রাশিয়া ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাইপলাইনের সাহায্যে ইউরোপের বিভিন্ন অংশে গ্যাস সরবরাহ করত। কিছুদিন ধরে নর্ডস্ট্রিম ২ প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছিল। আমেরিকা তার জ্বালানি গ্যাস উৎপাদক সংস্থাগুলির স্বার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাসের বাজারে নানা কৌশলে ঢুকতে চেষ্টা করছে। সে-ক্ষেত্রে

ব্যাঙ্গালোর

রাশিয়ার ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ লাইন ছিন্ন করা আমেরিকার অন্যতম লক্ষ্য। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সাথে যুক্ত করার পিছনে আমেরিকার যে সমস্ত অর্থনৈতিক স্বার্থ কাজ করছে, এটা তার অন্যতম। এ ছাড়া ইউক্রেনের ভৌগলিক অবস্থান CIS রাষ্ট্রগুলির উপর রাশিয়ার সামরিক আধিপত্য খর্ব করা এবং পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপর আমেরিকার সামরিক-রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সব লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমেরিকা ইউক্রেনের রুশবিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে উস্কানি দিয়ে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার জন্য ইউক্রেনীয় রাজনীতিবিদদের উপর চাপ বাড়াতে থাকে। আবার জার্মানিতে যে নিও নাৎসীবাদ প্রবল শক্তিশালী রূপ নিচ্ছে তার প্রভাবে একদল ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলতে থাকে। বিশেষত সমাজতন্ত্র ভেঙে যাওয়ার পরে অধিকাংশ পূর্বতন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি তীব্র বেকার সমস্যা এবং অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত হয়ে যাওয়ায় এইসব দেশের বেকার যুবকরা দলে দলে কাজের সন্ধানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পডে, তাদের মধ্য থেকেই এই দাবি বেশি করে উঠতে থাকে। যার ফলে একবিংশ শতকের প্রথম দশকেই বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির টানাপোড়েনকে ভিত্তি করে ইউক্রেনে রাজনৈতিক সমীকরণ প্রভাবিত হতে থাকে।

বাণিজ্যযুদ্ধের পরিণতিতে তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েন

একুশ শতকের প্রথম দশকের গোড়ার দিকেই ইউক্রেনের ন্যাটোপন্থী নেতারা ইউক্রেনকে ন্যাটোর সঙ্গে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি তুলতে থাকেন এবং ২০০৩ সালে এই মর্মে ইউক্রেনীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব আনা হয়। তৎকালীন রাশিয়াপন্থী প্রধানমন্ত্রী ইয়ানুকোভিচ ২০০৩ সালের ২১ নভেম্বর এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। এরপরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং অন্যান্য জায়গায় অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রুশ হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সংযুক্তির পক্ষে গণবিক্ষোভ সংগঠিত হয়, স্পষ্টতই যেগুলিতে আমেরিকার মদত ছিল। ২০০৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময় ইয়ানুকোভিচের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাকে অপসারিত করা হয়। ইয়ানুকোভিচের প্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকাপন্থী ইউশ্চেঙ্কোর দল ক্ষমতায় আসে এবং রাশিয়ার সাথে গ্যাস ও অন্যান্য বাণিজ্যিক চুক্তি বাতিল করে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সঙ্গে যুক্ত করার প্রক্রিয়া জোরকদমে চলতে থাকে। রাশিয়া এই অবস্থায় তার সাম্রাজ্যবাদী বাণিজ্যিক স্বার্থ, বিশেষত গ্যাস সরবরাহ প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখার স্বার্থে একই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক পদ্ধতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে বিশেষত ক্রিমিয়া, সেবাস্তোপোল, পূর্ব ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় যে বিরাট সংখ্যক রুশ ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী আছে তাদের মধ্যে নানা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে

কেরালা

আর্থিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক মদত জুগিয়ে ‘স্বাধীনতা’ বা স্বায়ত্বশাসনের দাবি তোলাতে থাকে। ২০১৪ সালে ন্যাটোপন্থীরা রাশিয়াপন্থী সরকারকে হঠাতে একটা ক্যু সংগঠিত করে। সাথে সাথে রাশিয়া গোপনে সৈন্য পাঠিয়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ এবং সেবাস্তোপোলকে গণভোট করিয়ে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। কয়েক দিন আগে পূর্ব ইউক্রেনের রুশভাষীবহুল ডনবাস এলাকায় রাশিয়ান মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলি ইউক্রেনের নাৎসীপন্থী অপশাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুতিন এইরকম দুটি অংশ ডনেৎস রিপাবলিক এবং লুগানস্ক রিপাবলিককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে দেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে সেনা প্রবেশ করিয়ে এইসব এলাকাগুলি দখলে নেয়। বর্তমানে একদিকে যখন ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকায় রাশিয়ান ফৌজের বোমাবর্ষণ এবং ধ্বংসকাণ্ড চলছে সেইসময় জার্মানি সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রগুলি রাশিয়া এবং রুশ মদতপুষ্ট ক্রিমিয়া এবং অন্যান্য অংশের বিরুদ্ধে নানা অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। পাশাপাশি আমেরিকা গণতন্ত্রের পক্ষে গলা ফাটিয়ে নানা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়াবিরোধী প্রস্তাব পাশ করানো ছাড়াও ইউক্রেনের পাশের কৃষiরসাগর এবং আজভ সাগর এলাকায় রণতরী পাঠিয়ে সামরিক চাপ বৃদ্ধি করছে।

যুদ্ধবিরোধী রুশ জনগণ শহরে শহরে বিক্ষোভে সামিল

বিশ্বের জনগণ অবশ্যই লক্ষ করেছে, পুটিনের রাশিয়া ইউক্রেনে বিধ্বংসী আক্রমণ চালানোর পর সেন্টপিটার্সবার্গ থেকে শুরু করে রাশিয়ার বহু শহরেই ‘আমরা যুদ্ধ চাই না’ স্লোগান দিয়ে দলে দলে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। কে তাদের নামাল? মিছিল দেখে বোঝার উপায় নেই কোনও সংগঠিত শক্তি বা রাজনৈতিক দল এই মিছিলের সংগঠক কি না। তবে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অভিব্যক্তি এবং উৎসাহ থেকে বোঝা যায় লেনিন-স্ট্যালিনের সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার যে যুদ্ধবিরোধী ঐতিহ্য ও গৌরব ছিল, রুশ জনগণের মন-মানসিকতায় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার তার রেশ রয়ে গিয়েছে।

রাশিয়াকে সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত এবং তার যুদ্ধবিরোধী শান্তির ভূমিকায় একদা মুগ্ধ যাঁরা এখনও কিছুতেই রাশিয়ার এই আগ্রাসী ভূমিকাকে বুঝতে পারছেন না, তাঁরা নানা যুক্তি তুলে পুটিনের রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণকে সমর্থন করার কথা বলছেন। এ কথা ঠিক, মিলিটারি শক্তিতে প্রবল পরাক্রমশালী রাশিয়াকে হীনবল করার পরিকল্পনা ও স্বার্থ আমেরিকা ও ইউরোপের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির যথেষ্ট আছে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে কিন্তু রাশিয়ার সমরশক্তি ধ্বংস হয়ে যায়নি। আবার রাশিয়ার শিল্পকাঠামো যা সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরাট আকারে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল তা-ও পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়নি। ফলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীদের আক্রমণাত্মক ভূমিকা থাকবে ও তা আছে। ১৯৯১ সালে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত রাষ্ট্র ভেঙে যাওয়ার ফলে রাশিয়ার নব্য বুর্জোয়া শ্রেণি ভূখণ্ডের দিক থেকে তার পুনরুদ্ধার চায়। রাশিয়া যদি সমস্ত শক্তি নিয়ে দাঁড়ায় তা হলে ইউরোপ-এশিয়ার বুকে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হয়ে দাঁড়াবে এটা আমেরিকা সহ পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীরা বিলক্ষণ জানে। তাই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পরপরই পৃথক এবং বৃহত্তম রাশিয়ান ফেডারেশনকে ঘিরে যে ১৪টি স্বাধীন রাষ্ট্র দাঁড়ালো, রাশিয়াকে ঘিরে ধরতে তাদের এক এক করে ন্যাটোর সদস্য করতে শুরু করল আমেরিকা। পুটিনের রাশিয়াও বুঝে গেল রাশিয়াকে ন্যাটো দিয়ে অবরুদ্ধ করে পদতলে রাখাটাই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের পরিকল্পনা। রাশিয়ার ক্ষমতাসীন বুর্জোয়ারা এটা মানবে কেন? ফলে দ্বন্দ্ব শুরু হল। ইউক্রেনের যেহেতু রুশবিরোধী ভূমিকার একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলির জার্মানির হিটলারকে সাহায্য করার ভূমিকা আছে, জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের নামে পুরনো ফ্যাসিস্ট শক্তির উত্তরসূরিরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে, তাই জর্জিয়াকে দিয়ে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীরা যা পারেনি তা ইউক্রেনকে দিয়ে সফল করতে পারবে বলে স্থির করল। বাস্তবেও একের পর এক ঘটনায় ইউক্রেনের শাসককুলের মধ্যে রাশিয়াবিরোধী শক্তির সমাবেশ বাড়তে লাগল। যে জন্য ২০১৪ সালে পুটিনের রাশিয়া কৃষiরসাগরের তীরে অবস্থিত ক্রাইমিয়াকে দখল করে নেয়। রুশ ভাষাভাষি জনগণের সংখ্যাধিক্য থাকায় আপাত অর্থে এটা যেন যুক্তিগ্রাহ্য হয়ে যায়। এ ছিল আমেরিকার প্রতি পুটিনের রাশিয়ার কড়া প্রত্যুত্তর। মাত্র কিছুকাল আগে এক ঘোষণায় পুটিন বলেছিলেন, রাশিয়ার চার পাশে থাকা রাষ্ট্রগুলির মাধ্যমে ন্যাটো যদি রাশিয়ার ভিতর হাত বাড়ায় তা হলে রাশিয়া চুপ করে বসে থাকবে না। ফলে অনেকেরই মনে হতে পারে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীরা পুটিনের এই হুঁশিয়ারি শোনেনি, তাই পুটিন ইউক্রেন আক্রমণ করে তার জবাব দিয়েছেন।

এ কথা ভাবা ভুল, পুটিনের রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ শুধু পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসী পরিকল্পনার জবাব দিতেই। এর পেছনে রাশিয়ার নিজস্ব পুঁজিবাদী বাসনা, সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থও কাজ করেছে। পুটিনের রাশিয়ার একচেটিয়া পুঁজিপতিরা ইউরোপের বাজার চায়। কৃষ্ণসাগরের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায়। তুরস্ক হয়ে সিরিয়া পর্যন্ত পুরো স্থলভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাশিয়া কব্জা করতে চায়। তেল গ্যাস ইত্যাদি নিয়ে রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থ ও পুঁজিপতিদের মুনাফার জাল কম বিস্তৃত নয়। এ সব কিছুকে কেন্দ্র করেই মার্কিন-রুশ দ্বন্দ্ব আজ দুই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দ্বন্দে্বর রূপে দেখা দিয়ে যুদ্ধের জন্ম দিল।

পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনই শান্তির গ্যারান্টি

মার্কস এঙ্গেলস লেনিন, স্ট্যালিন, মাও সে তুঙের অনুগামী এ যুগের অগ্রগণ্য মার্কবাদী চিন্তানায়ক কমরেড শিবদাস ঘোষ লেনিনীয় শিক্ষাকে ভিত্তি করে দেখিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে শক্তিশালী সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে চীন, পূর্ব জার্মানি প্রভৃতি অনেকগুলি দেশ সমাজতান্ত্রিক শিবিরে যোগ দেওয়ায় সাম্রাজ্যবাদের আভ্যন্তরীণ বাজার সংকটের জন্য যুদ্ধের বিপদ যেমন থেকে গেছে, তেমনই, সমাজতান্ত্রিক শিবিরের পক্ষে শক্তি প্রয়োগ করে লুণ্ঠনকারী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির উপর শান্তি চাপিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছিল। যতদিন বাস্তবে লেনিন-স্ট্যালিনের ধারাবাহিকতায় ঐক্যবদ্ধ সমাজতান্ত্রিক শিবির জোটবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে, ততদিন সীমিত ক্ষেত্রে হলেও সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত রাশিয়া সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রান্তের বিরুদ্ধে শান্তির রক্ষক হিসাবে আক্রান্ত দুর্বল দেশগুলির পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের শক্তি যুগিয়েছে। মহান নেতা স্ট্যালিন কখনওই আগ্রাসনের যুদ্ধ করেননি। তিনি সাম্রাজ্যবাদী ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য জনযুদ্ধ পরিচালনা করে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছেন। সে সময়ের সমস্ত গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষই মহান স্ট্যালিনকে মানবতার রক্ষাকর্তা হিসাবে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু স্ট্যালিন পরবর্তী সংশোধনবাদী সোভিয়েত নেতৃত্ব ক্রমশ আমেরিকার পরমাণু যুদ্ধের হুমকির কাছে নতিস্বীকার করেছে। ফলে তাদের শান্তিরক্ষকের ভূমিকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে, তারা আমেরিকার মতোই ষড়যন্ত্রমূলক পদ্ধতিতে বা গায়ের জোরে প্রভাবাধীন অঞ্চল সৃষ্টির দিকে এগিয়েছে। কিন্তু ১৯৯১ সালে সমাজতান্ত্রিক শিবির অবলুপ্ত হওয়ার পর থেকে যুদ্ধের বিপদ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্রাজ্যবাদের শিরোমণি আমেরিকা তথাকথিত একমেরু বিশ্বের সুযোগ নিয়ে একের পর এক আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, সুদান প্রভৃতি দেশে নানা অজুহাতে সাম্রাজ্যবাদী দখলদারি, লুণ্ঠন, হত্যা এবং অবাধ ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। পুর্বতন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি পুঁজিবাদ পুনঃপ্রবর্তনের পর তাদের উন্নত অর্থনৈতিক কাঠামো এবং সামরিক শক্তিকে ব্যবহার করে বিশ্ববাজারে আমেরিকা এবং অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে আবির্ভুত হয়েছে। আজ রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুটিন সম্পূর্ণ রূপে একটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নায়ক। তিনি রাশিয়ার অভ্যন্তরে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে এবং সিআইএস রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রাশিয়ান আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধোন্মাদনা এবং ‘মহান রুশ আত্মগরিমা’ সৃষ্টির পথে হাঁটছেন। সেজন্য কৌশলে স্ট্যালিনের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বিজয়ের গৌরবকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু স্ট্যালিন সোভিয়েত-জার্মান যুদ্ধকে দুটি সমাজব্যবস্থার মধ্যে সংগ্রাম বলে দেখিয়েছিলেন। সোভিয়েত ব্যবস্থা উন্নততর ব্যবস্থা হিসাবেই শেষ পর্যন্ত জয়যুক্ত হয়েছিল। তার সঙ্গে আজকের সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার আগ্রাসী যুদ্ধ চরিত্রগত ভাবেই পৃথক এবং নিন্দনীয়।

আজ যেভাবে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির বাজার দখলের লড়াই প্রতিদিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে এই অবস্থায় আর একটি বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা একটা বাস্তব সম্ভাবনা হিসাবেই দেখা দিয়েছে। তবে এর বিরুদ্ধে কাজ করছে বিশ্বজুড়ে এবং আমেরিকার মতো পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরোধী জনমতের শক্তি।

ইউক্রেনের জনগণকে আজ বুঝতে হবে সমাজতন্ত্র তাদের নিরাপত্তা দিয়েছিল, দিয়েছিল সৌভ্রাতৃত্ব এবং অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ভাবে বিকশিত হওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ সুযোগ। আজ রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য তাদের শত্রু, কিন্তু রুশভাষী ইউক্রেনীয় শ্রমজীবী জনগণ তাদের শত্রু নয়। তাদের আসল শত্রু পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ। রাশিয়ার আধিপত্যের পাল্টা হিসাবে আমেরিকার আধিপত্য কখনই কাম্য হতে পারে না। যে আমেরিকা আফগানিস্তান ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়াকে ধ্বংস করেছে, সেই আমেরিকার আধিপত্য অর্থাৎ ন্যাটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নিও নাৎসীবাদী ভাবাদর্শ ইউক্রেনীয়দের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না বরং সর্বাত্মক ধ্বংসের পথে ঠেলে দেবে। আজ আমেরিকার অভ্যন্তরে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশে দেশে নিও-লিবারাল খোলাবাজার অর্থনীতির বিরুদ্ধে, বেকার সমস্যা, মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে ছাত্র, যুবক, শ্রমজীবী জনগণ আন্দোলনে ফেটে পড়ছে। পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের শোষণ, অত্যাচার যুদ্ধচক্রান্তের বিরুদ্ধে সঠিক বৈজ্ঞানিক পথ এবং উন্নত মতাদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মধ্যেই তাঁদের মুক্তির পথ নিহিত রয়েছে।

 

রুশ সামরিক আক্রমণের তীব্র নিন্দা এসইউসিআই(সি)-র

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার একতরফা সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা করে ওই দিনই এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর নামে ইউক্রেনে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের আমরা তীব্র নিন্দা করছি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাটো’ যুদ্ধজোট পূর্ব ইউরোপের অধিকাংশ দেশগুলিকে নিজের নিয়ন্ত্রণের বৃত্তে টেনে এনেছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসাবে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর নিজের আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে এই আগ্রাসন চালিয়েছে।

মার্কিন ও রুশ সাম্রাজ্যবাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের এই দ্বন্দ্বের ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যা বিশ্বশান্তিকে বিপন্ন করছে। তদুপরি, অভূতপূর্ব বেকার সমস্যা, ছাঁটাই, দারিদ্র এবং এ সবের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের মুখোমুখি হয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি যুদ্ধ বাধিয়ে যুদ্ধাতঙ্ক সৃষ্টি করে, উগ্র জাতিদম্ভে উস্কানি দিয়ে জনগণের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। আমরা দাবি করছি, রুশ সরকারকে অবিলম্বে এই আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির জোট ন্যাটো ভেঙে দিতে হবে।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ২৯ সংখ্যা  ৪ মার্চ ২০২২