‘শো ইয়োর ক্রেডেনশিয়ালস্’

সারাজীবন গীর্জার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন যে মানুষ, তাঁর মৃত্যুশয্যায় হঠাৎ এক পাদ্রী এসে উপস্থিত। মৃত্যুর সময় যদি তিনি তাঁর পাপের স্বীকারোক্তি করে না যান তাহলে তো নরকেও তাঁর ঠাঁই হবে না। সুতরাং তাঁর শুভচিন্তায় পাদ্রীর আগমন। একটু তন্দ্রার মতো এসেছিল– হঠাৎ দেখলেন এক পাদ্রী এসে ঢুকছেন তাঁর ঘরে। ক্ষীণকন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন সেই শয্যাশায়ী– ‘আপনি কোত্থেকে আসছেন মাননীয়?’ পাদ্রী উত্তর দিলেন ‘…. স্বয়ং ঈশ্বরের কাছ থেকে’। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে বললেন সেই ব্যক্তি– ‘ইয়োর ক্রেডেনশিয়ালস, আপনার ঈশ্বরের পরিচয়পত্রটি দেখান।’ (সূত্রঃ স্টোরি অফ ফিলজফি  উইল ডুরান্ট)

উপরোক্ত ঐ ব্যক্তি আর কেউ নন, ফরাসী দার্শনিক ভলতেয়ার। প্রায় ২৫০-৩০০ বছর আগে ইউরোপে নবজাগরণের অন্যতম বলিষ্ঠ চিন্তানায়ক ও পুরোধা, যার চিন্তায় ভর করেই যুক্তিবাদী দর্শন ও চিন্তার বিকাশ হয়েছিল বিশ্বে।

আজকের বিজেপি-আরএসএস শাসিত ভারতবর্ষে, নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইতে আগামী ১ এপ্রিল থেকে সরকারি লোকজন আপনার বাড়িতে আসবেন। তখন ‘ভলতেয়ার’ হওয়ার সুযোগ রয়েছে আপনার। যদি আপনিও বলতে পারেন –‘মাননীয়, দয়া করে আপনার নাগরিকত্বের প্রমাণটি যদি দেখান’।

শর্বরী বসু, শিয়ালদা

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ৩০ সংখ্যা)