ভিঝিনজাম আন্দোলন দমন করার ষডযন্ত্রমূলক পদক্ষেপ নিন্দনীয়

এসইউসিআই (কমিউনিস্ট)–এর কেরালা রাজ্য কমিটি ২৪ নভেম্বর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভিঝিনজামে পরপর যে দুঃখজনক ঘটনাগুলি ঘটেছে তা উপকূলবর্তী এলাকায় জীবন ধ্বংসকারী নির্মীয়মান আদানি পোর্টের বিরুদ্ধে মৎস্যজীবীদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামকে দমন করার জন্য রাজ্য সরকারের হীন ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপেরই ফল৷ বিগত কয়েক মাস ধরে যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল তাকে ধবংস করার জন্য সরকার দুরভিসন্ধি নিয়ে উক্ত এলাকায় আদানি বন্দরের যান চলাচলের অনুমতি দেয়৷ স্বাভাবিকভাবেই মৎস্যজীবীরা পথ অবরোধ করে তাদের আটকায়৷ এই সময় পুলিশের সহযোগিতায় গুন্ডাবাহিনী মৎস্যজীবীদের উপর ব্যাপক হামলা চালায়৷ পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে  মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়৷ পুলিশ এত উদ্ধত হয়ে ওঠে যে, যারা আন্দোলনের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন  না তাদেরও গ্রেপ্তার করে৷ যারা তাঁদের জামিনে মুক্ত করার জন্য থানায় যান, তাঁদেরও গ্রেফতার করা হয়৷ শুধু তাই নয়, এই আন্দোলনে সহযোগিতার কারণে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশপের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়৷

এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ মৎস্যজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে৷ এরপর দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবী এবং পুলিশ আহত হয়৷ এই ঘটনাকে দেখিয়ে মৎস্যজীবীরা হিংসাত্মক হয়ে উঠছে অভিযোগ এনে পুলিশকে ব্যবহার করে জনগণ এবং আন্দোলনকারীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে৷

পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম সরকার ইন্দোনেশিয়ার একচেটিয়া পুঁজিপতি সালিম গোষ্ঠীর স্বার্থে যেভাবে জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করেছিল, কেরালায় আদানিদের স্বার্থে সিপিএম সরকারের এই জঘন্য পদক্ষেপ জনগণের আন্দোলনকে দমনের সেই নির্মম ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে৷

আদানিদের স্বার্থে বিজেপির সাথেও হাত মেলাতে প্রস্তুত সিপিএম৷ এতে বোঝা যায় তারা কতটা কর্পোরেট পুঁজির দাসত্ব করছে৷ তারা আন্দোলনকে ভাঙার জন্য এমনকি সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে৷ যা কিনা পরবর্তী সময়ে কেরালার রাজনৈতিক পরিবেশের বিরাট ক্ষতি করবে৷ আন্দোলনের নেতৃত্বকে কলঙ্কিত করার জন্য সিপিএম লাগাতার কুৎসিত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে৷ সাতটা দাবির মধ্যে ছ’টা গৃহীত হয়েছে, এই মিথ্যা কথা বলে সরকার সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে৷

এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) কেরালা রাজ্য কমিটি সরকারের কাছে এমন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা এবং জনগণের ন্যায্য দাবির সঠিক মীমাংসা করার দাবি জানাচ্ছে৷ তারই সাথে  দল কেরালা উপকূল রক্ষার লক্ষ্যে মৎস্যজীবীদের এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেরলের সমস্ত সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছে৷