Breaking News

বিজেপির ‘সুশাসন’ : মিলিয়ে নিন

ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ)

  • ২০১৯-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির মোট অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ ৯.৪৯ লক্ষ কোটি টাকা (দ্য ওয়্যার, ১-৭-১৯)।
  • গত ১০ বছরে ৮ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ স্রেফ মুছে দিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি (মানি কন্ট্রোল, ৩১-১২-২০)।
  • বিদেশে পালানো মেহুল চোক্সি সহ দেশের ৫০ জন ধনকুবের শিল্পপতির ৬৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা বকেয়া ঋণ মুছে দিয়েছে দেশের ব্যাঙ্কগুলি।
  • রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া তথ্য অনুসারে ২০১৯ সালে প্রকাশ্যে এসেছে ৮৪ হাজার ৫৪৫টি ব্যাঙ্ক-জালিয়াতির ঘটনা। সংশ্লিষ্ট অর্থের পরিমাণ ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা (সিএনবিসি, ২৮-৪-২০)।

বৃহৎ পুঁজিপতিদের কর মকুব ও ছাড়ের পরিমাণ

  • ২০১৯-২০ সালে বড় শিল্পপতিদের উৎসাহ ভাতা ও করছাড় দিতে গিয়ে সরকারি রাজকোষে ক্ষতি হয়েছে মোট ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৮৩৭. ৯৭ কোটি টাকা (ইটি ১-২-২১)।
  • নরেন্দ্র মোদির প্রথম দফার বিজেপি সরকার কর্পোরেট পুঁজিপতিদের ৪.৩২ লক্ষ কোটি টাকা করছাড় দিয়েছে। ক্ষমতায় এসেই ২০১৪-১৫ সালে এই সরকার ছাড় দিয়েছিল ৬৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। পরে প্রতি বছর বাড়তে বাড়তে ২০১৮-১৯-এ ছাড়ের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ১.০৯ লক্ষ কোটি টাকায়।

সরকারি ক্ষেত্র ও ব্যাঙ্ক বিলগ্নিকরণ

  • ২০২১-এর বাজেট ঘোষণা অনুযায়ী ২০২০-২১-এর মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়া, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক এবং পবনহংস-এর বিলগ্নিকরণ সম্পূর্ণ হবে। দুটি সরকারি ব্যাঙ্ক ও জেনারেল ইনসিওরেন্স কোম্পানি বিলগ্নিকরণ করতে আইন সংশোধন করা হবে। রাজ্যগুলিকেও তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি দপ্তরগুলির বেসরকারিকরণে উৎসাহ দেওয়া হবে।
  • সরকারের লক্ষ্য বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ২০২১-২২ সালে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা আয় করা।

ভরতুকি ছাঁটাই

  • খাদ্যঃ ২০২০-২১-এ বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ২ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৩৬ কোটি। অর্থাৎ ভরতুকি ছাঁটাই হয়েছে ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
  • সারঃ বরাদ্দ হয়েছিল ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৭৯ হাজার ৫৩০ কোটি। অর্থাৎ সারে ভরতুকি ছাঁটাইয়ের পরিমাণ ৫৪ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।
  • পেট্রোলিয়ামঃ বরাদ্দ হয়েছিল ৩৯ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ১৪ হাজার ৭৩ কোটি। ভরতুকি ছাঁটাই হয়েছে ২৪ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।

দারিদ্র ও রোজগার ছাঁটাই

  • ভারতের ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ নিতান্ত দরিদ্র। আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন (আইএলও)-এর হিসাব অনুযায়ী দেশের কর্মরত মানুষের ৯০ শতাংশই কাজ করেন অসংগঠিত ক্ষেত্রে। অর্থনীতির বেহাল দশা ও অতিমারির ধাক্কায় এই ক্ষেত্রে কর্মরত প্রায় ৪০ কোটি মানুষের জীবনে আরও বেশি সঙ্কট নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।
  • স্বাস্থ্যসমস্যার দরুন ভারতের অন্তত ৮৪ শতাংশ পরিবারের রোজগার কমে গেছে।
  • ভারতের অসংখ্য খেটে-খাওয়া মানুষ পয়সার অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারেন না। চিকিৎসার বিপুল খরচ মেটাতে গিয়ে দেশের ৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে।
  • ৮৩ কোটি ভারতবাসী দিন কাটায় ২০ টাকারও কম খরচে।

ক্ষুধা ও অনাহার

  • বিশ্ব ক্ষুধা সূচক-২০২০-র হিসাবে ১০৭টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ৯৪।
  • বিশ্বের মোট ৮২ কোটি ক্ষুধার্ত মানুষের এক-তৃতীয়াংশ ভারতের মানুষ।
  • এ দেশে প্রতিদিন পেটে খিদে নিয়ে শুতে যায় ২৩ কোটি মানুষ।
  • প্রতি বছর ভারতে ৩ লক্ষেরও বেশি শিশু পেটভরা খাবার না পাওয়ার কারণে মারা যায়।
  • মায়েদের প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে ভারতে প্রতি বছর ৬ কোটি ৭৮ লক্ষ অপুষ্ট শিশুর জন্ম হয়।

আত্মহত্যার ঘটনা

  • এনসিআরবি-র তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থী আত্মঘাতী হয়েছে। ২০১৭-তে এই সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৯০৫। ভারতে প্রতি ঘন্টায় গড়ে একজন ছাত্র আত্মহত্যা করে।
  • প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন কৃষিনির্ভর মানুষ আত্মঘাতী হন। ভারতে মোট আত্মঘাতী মানুষের ৭.৪ শতাংশই কৃষিজীবী (ডাউন টু আর্থ, ৩-৯-২০)।
  • শুধু ২০১৯ সালে আত্মহত্যা করেছেন কমপক্ষে ১০ হাজার ২৮১ জন কৃষিজীবী। ২০১৭-১৮-র তথ্য দেখাচ্ছে গড়ে প্রতিদিন ১০ জন দুর্দশাগ্রস্ত চাষি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
  • আত্মঘাতী দিনমজুরের সংখ্যা আগের ছয় বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে ২০১৯ সালে (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৬-৯-২০)।