Breaking News

বাঙ্গালোরে ফুড ডেলিভারি কর্মীদের কনভেনশন

কলকাতা, দিল্লি, বাঙ্গালোর সহ দেশের প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় বেরোলে দেখা যায়, বেশ কিছু যুবক সাইকেলে বা মোটরবাইকে চেপে পিঠে বড় ব্যাগ নিয়ে ছুটছেন৷ সুইগি, জোম্যাটো বা উবের ইটস ইত্যাদি খাবার ডেলিভারি সংস্থায় হাজার হাজার যুবক এই কাজ করেন৷ ৩ অক্টোবর এই ফুড ডেলিভারি কর্মীদের একটি কনভেনশন হয় বাঙ্গালোর শহরে৷ অনেক কর্মী এই কনভেনশনে অংশগ্রহণ করেন৷ প্রধান অতিথি ছিলেন এস ইউ সি আই (সি) পলিটবুরো সদস্য কমরেড কে রাধাকৃষ্ণ৷ তিনি এই সমস্ত অনলাইন নির্ভর কর্মীদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন৷

সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে এঁদের দূর–দূরান্তে খাবার পৌঁছে দিতে হয়৷ বেশিরভাগ কর্মীকে ১০০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরেও যেতে হয়৷ কিন্তু এঁদের কোনও স্থায়ী বেতন কাঠামো নেই৷ প্রতি ডেলিভারির জন্য মাত্র ৩০ টাকা এবং প্রতি ১০টি ডেলিভারি বাবদ ভাতা হিসাবে সর্বাধিক ২৫০–৩০০ টাকা দেওয়া হয়৷ এই টাকা পেতে হলে তাঁকে সারাদিনে একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১০টি ডেলিভারি করতে হবে৷ কিন্তু অভিজ্ঞতা হল, এই নির্দিষ্ট সময় বা লগ–ইন সেশনে ৮/৯টি অর্ডার পাওয়া যায় খুবই সহজে৷ কিন্তু দশম অর্ডারটি সহজে মেলে না৷ বহু কষ্টে কেউ কেউ পেয়ে থাকেন, বেশিরভাগ থাকেন বঞ্চিতই৷ এই ভাতাটুকু পাওয়ার জন্য অধিকাংশ ফুড ডেলিভারি কর্মী সারাদিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন৷ কয়েকমাস কাজ করার পর অনেককে শ্বাসকষ্ট, স্পাইনাল কর্ডের নানা জটিল সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এরকম কাজে যাঁরা যুক্ত আছেন তাঁদের কর্মচারীর স্বীকৃতিটুকুও দেওয়া হচ্ছে না৷ ফলে ইএসআই, পিএফ, গ্র্যাচুইটির সুবিধা থেকে এঁরা বঞ্চিত৷

দেশের প্রায় চার লক্ষ ফুড ডেলিভারি কর্মীর জীবন অন্ধকারে নিমজ্জিত৷ অপরদিকে ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি এদের শ্রম লুট করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা লুটছে৷ কনভেনশনে এই কর্মীদের শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানানো হয়৷ কমরেড কে রাধাকৃষ্ণ ছাড়াও প্রবীণ আইনজীবী কে সুব্বারাও বক্তব্য রাখেন৷

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ১২ সংখ্যা)