বঞ্চিত মিড-ডে মিল কর্মীরা রাস্তায়

মিড-ডে মিল কর্মীদের প্রতি বঞ্চনার প্রতিবাদে ২৮ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে দাবিপত্র পেশ করল সারা বাংলা মিড ডে মিল কর্মী ইউনিয়ন। এ দিন ১০ হাজারের বেশি মিড-ডে মিল কর্মী কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল করে ডোরিনা ক্রসিং-এ রাস্তা অবরোধ করেন। মিড-ডে মিল প্রকল্পকে বেসরকারিকরণের প্রস্তাবের প্রতিলিপিতে অগ্নিসংযোগ করেন রাজ্য সম্পাদিকা সুনন্দা পণ্ডা। এর পর রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভ সমাবেশে হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সনাতন দাস। বক্তব্য রাখেন রাজ্য নেতৃত্ব নিখিল বেরা, বেলা পাল, মাহাফুজা বিবি, শ্যামলী হালদার, অনিতা মাহাতো, মমতা মণ্ডল প্রমুখ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন স্কিম ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন, পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদিকা মাধবী পণ্ডিত এবং এআইইউটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের তীব্র বঞ্চনার শিকার মিড ডে মিল কর্মীরা। সরকারি বা সরকারি সাহয্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল কর্মীরা দুপুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গরম খাবার দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন। বাজার করা, রান্না করা, খাবার পরিবেশন করা, বাসন ধোওয়া সহ সমস্ত কাজই এঁদের করতে হয়। অথচ তাঁদের মাসিক বেতন মাত্র ১৫০০ টাকা। দিন হিসাবে বেতন ৫০ টাকা, যা দিয়ে দু’বেলার নিরামিষ ভাতটুকুও জুটবে না। এই সামান্য ভিক্ষাটুকুও দেওয়া হয় বছরে দশ মাস। বাকি দু’মাস গরমের ছুটি ও পুজোর ছুটির অজুহাতে দেওয়া হয় না। এই হল ‘সোনার বাংলা’র প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিজেপি সরকারের আচরণ। এই বৈষম্যমূলক আচরণ কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার বছরের পর বছর ধরে করে চলেছে। করোনা অতিমারির সময়েও মিড-ডে মিল কর্মীদের কোনও রকম সাহায্য দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করেনি কোনও সরকার। আশা, অঙ্গনওয়াড়ি ও পৌর স্বাস্থ্যকম¹দের সামান্য বেতন বৃদ্ধি হলেও মিড-ডে মিল কম¹দের ২০১৩ সালের পর থেকে বেতন বৃদ্ধি করেনি কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পকে বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

অশোক দাস বলেন, ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন আপনাদের গড়ে তুলতে হবে। সঠিক পথে ও সঠিক নেতৃত্বে আন্দোলনই শ্রমজীবী মানুষের দাবি আদায়ের একমাত্র পথ। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, রাজ্য সরকার না দেওয়া দু’মাসের বেতন এ বছর দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ইউনিয়নের দাবি আগামী দিনেও তা দিতে হবে।